শেখ হাসিনার অর্জন ধ্বংস করতে চায় হামলাকারীরা

সাংবাদিকদের ওবায়দুল কাদের

প্রকাশ | ২৮ জুলাই ২০২৪, ০০:০০

যাযাদি ডেস্ক
ওবায়দুল কাদের
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যা অর্জন করেছেন তা হামলাকারীরা ধ্বংস করতে চায়- মন্তব্য করে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহনণও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, এটা সাধারণ ছাত্রছাত্রীদের কাজ না। বিএনপি-জামায়াত এই আন্দোলনের সুযোগ নিয়েছে। তাদের দীর্ঘদিনের ব্যর্থতার জন্য এমন হামলা। শনিবার রাজধানীর বনানীর ক্ষতিগ্রস্ত সেতু ভবন পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের কাছে তিনি এসব কথা বলেন। ওবায়দুল কাদের বলেন, 'হামলাকারীদের ফুটেজ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে দেওয়া হয়েছে। তারা দুবার পদ্মা সেতুতে আগুন লাগাতে গিয়েছিল। কিন্তু পারেনি। বিএনপি-জামায়াত গণতন্ত্র মানে না। আগুন, অস্ত্র নিয়ে নেমেছে তারা। কত মানুষের প্রাণের প্রদীপ নিভে গেছে। মর্মান্তিক দৃশ্যপট, সাংবাদিকও নিহত হয়েছে, আহত হয়েছে। মেট্রোরেল না থাকায় মানুষের ভোগান্তি হচ্ছে। ৩০ মিনিটের পথ দুই ঘণ্টায়ও যেতে পারছে না। মেট্রোরেল কবে নাগাদ চালু হবে তা নির্দিষ্ট করে বলা যাচ্ছে না।' আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, 'শিক্ষার্থীদের ওপর ভর করে যারা আন্দোলনকে রাজনৈতিক রূপ দেওয়ার চেষ্টা করছে তাদের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধভাবে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। প্রধানমন্ত্রীর সিদ্ধান্ত অনুযায়ী যখন যেখানে যা করার তা করব।' বিএনপি-জামায়াতের 'জাতীয় ঐক্য' প্রতিরোধের আহ্বান এর আগে বিএনপি-জামায়াতের 'জাতীয় ঐক্য' প্রতিরোধের আহ্বান জানিয়ে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, 'মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের জাতীয় ঐক্যের আহ্বান হলো, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও স্বাধীনতার মূল্যবোধবিরোধী এবং দেশবিরোধী অপশক্তির ঐক্য। উগ্রবাদ, জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসীদের ঐক্য। জামায়াতকে সঙ্গে নিয়ে ঐক্যের ডাক দিয়ে বিএনপি আবার প্রমাণ করলো জামায়াত-বিএনপির সম্পর্ক অবিচ্ছেদ্য এবং স্বাধীনতাবিরোধী শক্তিই বিএনপির দোসর।' আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক বিপস্নব বড়ুয়ার সই করা এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, 'এই ঐক্যের ডাক এ দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের জন্য হুমকি। আমরা মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও গণতান্ত্রিক শক্তিগুলোকে স্বাধীনতাবিরোধী বিএনপি-জামায়াতের বিরুদ্ধে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ থেকে এদের প্রতিরোধের আহ্বান জানাচ্ছি।' গণমাধ্যমে প্রকাশিত বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের 'মিথ্যা, বানোয়াট ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বিবৃতির' নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে বিবৃতিতে তিনি আরও বলেন, 'বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সন্ত্রাস, সহিংসতা ও হত্যাকান্ডের দায় এড়ানোর জন্য বিভিন্ন ধরনের প্রবঞ্চনামূলক অপকৌশল গ্রহণ করছে। বিএনপি-জামায়াতের ক্যাডাররা সশস্ত্র হয়ে রাজধানী ঢাকাসহ বিভিন্ন জায়গায় নারকীয় ধ্বংসযজ্ঞ ও পৈশাচিক হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছে। স্বাধীন বাংলাদেশে এ ধরনের ধ্বংসাত্মক কর্মকান্ড নজিরবিহীন এবং তা জনসাধারণের মনে দগদগে ক্ষতের সৃষ্টি করেছে। বিএনপি-জামায়াত ও তার দোসররা কোনোভাবেই এর দায় এড়াতে পারে না। তাদের সশস্ত্র সন্ত্রাসী বাহিনী হত্যাযজ্ঞ চালানোর গভীর চক্রান্ত নিয়ে মাঠে নেমেছিল।' সড়ক পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী বলেন, 'সরকারের পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ ধৈর্য ও সংযম নিয়ে এই হত্যাযজ্ঞ এবং ধ্বংসযজ্ঞ মোকাবিলা করা হয়েছে। সরকার কোনোভাবেই চায়নি কারও প্রাণহানি ঘটুক। বিপরীত দিকে বিএনপি-জামায়াত, ছাত্রদল-শিবিরের টার্গেটই ছিল লাশের রাজনীতি। এদের সশস্ত্র ক্যাডারদের মোকাবিলার জন্য আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর পাশাপাশি আওয়ামী লীগের নিরস্ত্র নেতাকর্মীরা সতর্ক অবস্থায় ছিল। আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা জনগণকে সঙ্গে নিয়ে রাষ্ট্রীয় সম্পদ রক্ষা এবং জনগণের জানমালের নিরাপত্তা বিধানে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে সর্বাত্মক সহযোগিতা করেছে।' ওবায়দুল কাদের বলেন, 'এসব সন্ত্রাসীকে আইনের আওতায় আনার জন্য আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তৎপর রয়েছে। হত্যাকান্ড ও ধ্বংসযজ্ঞের ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তে বিচারবিভাগীয় কমিটি গঠন করা হয়েছে। পাশাপাশি পুলিশি তদন্ত চলমান রয়েছে। সংঘটিত কোনো অপরাধমূলক কর্মকান্ড তদন্তের বাইরে থাকবে না। এই সন্ত্রাসী বাহিনীর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণকে মির্জা ফখরুল ইসলাম গণ-গ্রেপ্তার হিসেবে অভিহিত করে রাজনৈতিক রঙ দেওয়ার চেষ্টা করছে। এখানে কোনো গণ-গ্রেপ্তার করা হচ্ছে না।' বিবৃতিতে তিনি বলেন, 'নিরপরাধী কেউ হয়রানির শিকার হবে না। সুনির্দিষ্ট তথ্য-প্রমাণের ভিত্তিতেই সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে। দেশের পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে আমরা আইনের সর্বোচ্চ সুষ্ঠু প্রয়োগ করব। কোনো অপরাধীকে ছাড় দেওয়া হবে না।' চতুর্থ শিল্প বিপস্নবে নেতৃত্ব দিচ্ছেন জয় এদিকে, এক শুভেচ্ছা বার্তায় প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয় তরুণদের চতুর্থ শিল্প বিপস্নবে নেতৃত্ব দিচ্ছেন বলে মন্তব্য করেছেন ওবায়দুল কাদের। শনিবার জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিুবর রহমানের দৌহিত্র এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পুত্র সজীব ওয়াজেদ জয়ের ৫৩তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে দেওয়া শুভেচ্ছা বার্তায় এ কথা বলেন তিনি। ক্ষমতাসীন দলের সাধারণ সম্পাদক বলেন, 'তরুণদের স্বপ্ন দেখানো ও তা বাস্তবায়নে, তাদের উদ্যোক্তা হিসেবে গড়ে তুলতে এবং তরুণ প্রজন্মকে চতুর্থ শিল্প বিপস্নবের জন্য প্রস্তুত করার ক্ষেত্রে জয়ের অবদান অসামান্য। প্রধানমন্ত্রীর পুত্রের নেতৃত্বে দেশে আজ প্রযুক্তিনির্ভর অর্থনীতি বিকাশমান। ডিজিটাল বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার মধ্য দিয়ে তথ্যপ্রযুক্তি খাতে লাখ লাখ তরুণের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে। বাংলাদেশে মোট জনসংখ্যার অর্ধেকের বেশি তরুণ। সজীব ওয়াজেদ জয় এই তারুণ্যের উদ্যমতা ও সৃজনশীলতাকে বৃদ্ধি করে বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে।' ওবাযদুল কাদের বলেন, '২০০৭ সালে তিনি ২৫০ তরুণ বিশ্বনেতার মধ্যে অন্যতম একজন হিসেবে বিবেচিত হন। তিনি ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরাম কর্তৃক গেস্নাবাল লিডার অব দ্য ওয়ার্ল্ড হিসেবে নির্বাচিত হন। সজীব ওয়াজেদ জয় প্রযুক্তির উৎকর্ষের এই যুগে নতুন প্রজন্মকে বিশ্বমানের নাগরিক হিসেবে গড়ে তুলতে ডিজিটাল বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশকে এক অনন্য উচ্চতায় অভিষিক্ত করেছেন।' তিনি বলেন, 'তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের এলআইসিটি প্রকল্পে ১০টি অত্যাধুনিক প্রযুক্তির উপর দক্ষ মানবসম্পদ তৈরির প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। সারাদেশে প্রতিটি উপজেলা কারিগরি কলেজ ও প্রশিক্ষণ কেন্দ্র স্থাপনসহ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমূহে মাল্টিমিডিয়া ক্লাস রুম, শেখ রাসেল ডিজিটাল ল্যাব ও কম্পিউটার প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, প্রতিটি জেলায় শেখ কামাল ট্রেনিং ইনস্টিটিউট ও ইনকিউরেশন সেন্টার স্থাপনের মধ্য দিয়ে শিক্ষা ব্যবস্থাকে যুগোপযোগী করে তোলা হচ্ছে। দেশের ১৩ কোটি মানুষ ইন্টারনেট এবং ১৮ কোটি ৬০ লাখ মানুষ মোবাইল ব্যবহার করছে।' 'দেশব্যাপী ডিজিটাল সেন্টারের মাধ্যমে ৩০০-এর অধিক ধরনের সরকারি-বেসরকারি সেবা পাচ্ছে জনগণ। আইসিটি খাতে রপ্তানি আয় দাঁড়িয়েছে ১.৩ বিলিয়ন ডলার, যা ২০২৫ সালে ৫ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত হবে। এসব কিছুই সম্ভব হয়েছে ডিজিটাল বাংলাদেশের স্বপ্নসারথী সজীব ওয়াজেদ জয়-এর ভিশনারি সিদ্ধান্তের মাধ্যমে'- শুভেচ্ছা বার্তায় উলেস্নখ করেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক।