কচুরিপানা অপসারণে প্রাণ ফিরছে ভৈরব নদীর
প্রকাশ | ২১ জুলাই ২০২৪, ০০:০০ | আপডেট: ২৭ জুলাই ২০২৪, ১২:৩৮
মেহেরপুর প্রতিনিধি
একসময় ভৈরব নদী দিয়ে তৎকালীন পুরো বাংলার ব্যবসায়িক প্রসার ঘটেছিল। কিন্তু কালের বিবর্তনে নদীটি পরিণত হয় শুকনো মরা খালে।
গণমাধ্যমে নদীটির নাব্যতা হারানোর খবর প্রকাশ হওয়ায় ২০১৭ সালে তা পুনঃখনন করা হয়। খনন-পরবর্তী ৪-৫ বছর নদী পাড়ের মানুষ এর সুফল পেলেও পরবর্তী সময়ে কচুরিপানায় ভরে যায় নদীটি। সেই সঙ্গে ময়লা আবর্জনা ও পচে যাওয়া কচুরিপানায় নষ্ট হচ্ছিল পানির পরিবেশ। গেল দুই মাস ধরে কচুরিপানা ও পলি অপসারণ করায় আবারও প্রাণ ফিরছে ভৈরব নদীর।
এলাকাবাসী জানান, 'খনন-পরবর্তী সময়ে আমরা গোসল করা, মাছ ধরা, গবাদি পশুর গোসল করানো, সেচ সুবিধাসহ নানান সুবিধা পাচ্ছিলাম। এই ২-৩ বছরে কচুরিপানা ও বিভিন্ন বর্জ্য ফেলায় জলজ উদ্ভিদ ও ময়লা আবর্জনায় ভরে যায় পুরো ভৈরব। কচুরিপানা ও পলি অপসারণ করায় আবার আমরা মাছ ধরা, গোসল করাসহ নানান সুবিধা পাব।'
সদর উপজেলার বুড়িপোতা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শাহজামান জানান, 'এই এলাকার পানিতে মাত্রাতিরিক্ত আর্সেনিক। ভৈরব নদী খনন করায় এলাকার পানিতে আর্সেনিক কমে গেছে। নদীতে যেন আর কচুরিপানা জমতে না পারে তার জন্য এই কার্যক্রম অব্যাহত রাখার দাবি জনপ্রশাসন মন্ত্রীর কাছে।'
পরিবেশবিদ সহকারী অধ্যাপক মাসুদ রেজা জানান, নদীমাতৃক বাংলাদেশের প্রাকৃতিক পরিবেশ রক্ষা এবং আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের স্বার্থে সচল নদীগুলোকে যথাযথভাবে সংরক্ষণ করা যেমন জরুরি, তেমন বিলুপ্ত সব নদনদীকে উদ্ধার ও খননের মাধ্যমে প্রবহমান করাও আবশ্যক।
মেহেরপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল হান্নান প্রধান যায়যায়দিনকে জানান, 'প্রচুর কচুরিপানা জমে নদীটি ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে গিয়েছিল। সাংবাদিকদের লেখনী ও স্থানীদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে জনপ্রশাসন মন্ত্রীর প্রচেষ্টায় কচুরিপানা ও পলি অপসারণ করে দেওয়া হচ্ছে। আবারও প্রাণ ফিরছে ভৈরব নদীর। পরবর্তীতে এই কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে।'
জেলা প্রশাসক শামীম হাসান জানান, 'কচুরিপানা ও পলি অপসারণ করায় ভৈরব তার পূর্বের রূপ ফিরে পাচ্ছে। এতে পাড়ের মানুষ খুব খুশি। মানুষ আবারও মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করতে পারছে, গোসল করতে পারছে। কচুরিপানা যেন আর নদীকে গ্রাস করতে না পারে তার জন্য এই কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে।'
জনপ্রশাসন মন্ত্রী ফরহাদ হোসেন জানান, বাংলাদেশ নদীমাতৃক দেশ। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মানবতার নেত্রী। তিনি জানেন, দেশের সার্বিক উন্নয়ন করতে হলে বাংলাদেশের নদনদী ও এর তীরবর্তী মানুষকে রক্ষা করতে হবে। তাই তো সরকার একদিকে যেমন নদীর ভাঙন রোধে কাজ করে যাচ্ছে, পাশাপাশি যেসব নদী নাব্যতা হারিয়ে ফেলছে সেগুলোর নাব্যতা ফিরিয়ে আনতে কাজ করে যাচ্ছে।