রোববার, ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২৪ ভাদ্র ১৪৩১
'বন্দরের কার্যক্রম এখন স্বাভাবিক।'

মোংলা বন্দরে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যের সব সূচকে ঊর্ধ্বগতি

যাযাদি ডেস্ক
  ২৭ জুলাই ২০২৪, ০০:০০
মোংলা বন্দরে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যের সব সূচকে ঊর্ধ্বগতি

মোংলা সমুদ্রবন্দরের মাধ্যমে বৃদ্ধি পেয়েছে রাজস্ব আয়। জাহাজ আগমন, কনটেইনার হ্যান্ডলিং, গাড়ি আমদানি, কার্গো হ্যান্ডলিং, সব সূচকেই ঊর্ধ্বগতি অবস্থানে রয়েছে মোংলা সমুদ্রবন্দর। সেই সঙ্গে বন্দরকে ঘিরে বাস্তবায়ন হচ্ছে নানা মেগা প্রকল্প, সৃষ্টি হচ্ছে কর্মসংস্থান। এদিকে মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল শাহীন রহমান জানান, 'বন্দরের কার্যক্রম এখন স্বাভাবিক। দাপ্তরিক সব কার্যক্রম স্বাভাবিকভাবে চলছে।'

মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের তথ্যমতে, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে বন্দরে ৮৪৬টি জাহাজ এসেছে। অন্যদিকে ২০২২-২৩ অর্থবছরে ৮২৭টি জাহাজ এসেছিল। গত অর্থবছরে আগের অর্থবছরের চেয়ে ১৯টি জাহাজ বেশি আসে। যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৬টি জাহাজ বেশি।

২০২২-২০২৩ অর্থবছরের মোট গাড়ি আমদানি হয়েছিল ১৩ হাজার ৫৭৬টি, অন্যদিকে ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরে ১৫ হাজার ৩৪০টি গাড়ি আমদানি হয়েছে। অর্থাৎ গত অর্থবছরে আগের বছরের তুলনায় ১ হাজার ৭৬৪টি গাড়ি বেশি আমদানি হয়েছে। গত ১০ বছরে এ বন্দর দিয়ে আমদানি হয় এক কোটি সাত লাখ ৮৫ হাজার ৯৮০টি গাড়ি।

২০২৩-২৪ অর্থবছরে ১০৮ দশমিক ৬৮ লাখ মেট্রিক টন কার্গো হ্যান্ডলিং করা হয়েছে। অন্যদিকে ২০২২-২৩ অর্থবছরে ৯৯ দশমিক ০৫ লাখ টন কার্গো হ্যান্ডলিং করা হয়েছিল। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে মোংলা বন্দরের মাধ্যমে মোট ৩১ হাজার ৪৪ টিইইউজ কনটেইনার হ্যান্ডলিং করা হয়েছে। যা ২০২২-২৩ অর্থবছরে ছিল ২৬ হাজার ৫৮৩ টিইইউজ।

আমদানি-রপ্তানির মাধ্যমে ২০২৩-২৪ অর্থবছরে মোট ৩১৯ কোটি টাকা রাজস্ব আদায় করে মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষ, যা ২০২২-২৩ অর্থবছরে ছিল ৩০২ কোটি টাকা। অর্থাৎ পূর্ববর্তী অর্থবছরের তুলনায় অর্থবছরের অর্জিত রাজস্ব আয় ২৮ দশমিক ৫৫ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।

মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল শাহীন রহমান বলেন, প্রধানমন্ত্রীর সুদক্ষ নেতৃত্ব ও নৌপরিবহণ মন্ত্রণালয়ের সার্বিক তত্ত্বাবধানে মোংলা বন্দরের গতিশীলতা বৃদ্ধি পেয়েছে। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে এ বন্দরে জাহাজ আগমন লক্ষ্যমাত্রাকে ছাড়িয়েছে। শুধু জাহাজ আগমন নয়, সব সূচকেই ঊর্ধ্বগতি অবস্থানে রয়েছে মোংলা বন্দর। বর্তমানে এ বন্দরে সক্ষমতা বাড়াতে 'এলসি' প্রকল্পের আওতায় অনেক মেগা প্রকল্প বাস্তবায়িত হচ্ছে। কিছু প্রকল্পের কাজ ইতোমধ্যে শেষ হয়েছে।

তিনি জানান, প্রতিনিয়ত বাড়ছে মোংলা বন্দরের সক্ষমতা। আগামীতে দেশের অর্থনীতিতে আরও বেশি ভূমিকা রাখতে পারবে মোংলা সমুদ্রবন্দর। একই সঙ্গে এ বন্দরকে ঘিরে সরকারি, আধা-সরকারি ও বেসরকারিভাবে নতুন নতুন শিল্পকারখানা তৈরি হচ্ছে। এতে সৃষ্টি হচ্ছে কর্মসংস্থানের।

রিয়ার অ্যাডমিরাল শাহীন রহমান বলেন, 'বন্দরের কার্যক্রম এখন স্বাভাবিক। দাপ্তরিক সব কার্যক্রম স্বাভাবিকভাবে চলছে। নিরাপত্তার জন্য বন্দরের জেটি ও বন্দরের সদর দপ্তরের সামনে নৌবাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। সেই সঙ্গে বন্দর জেটিতে একটি নৌবাহিনীর জাহাজ রাখা আছে। এ ছাড়া কোস্টকার্ডসহ বন্দরের নিজস্ব বাহিনী টহলে আছে।'

মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের উপসচিব মাকরুজ্জামান মুন্সী বলেন, পদ্মা সেতুর কল্যাণে রাজধানীর সব থেকে কাছের বন্দর হওয়ায় মোংলা ব্যবহার করে পোশাক শিল্পের বিভিন্ন পণ্য যাচ্ছে ইউরোপের বিভিন্ন দেশে। মোংলা বন্দরের সঙ্গে রেল সংযোগ স্থাপন করায় পণ্য আমদানি-রপ্তানিতে নবদিগন্তের সূচনা হতে যাচ্ছে। মোংলা বন্দরে জাহাজ হ্যান্ডলিং দ্রম্নত ও নিরাপদ হওয়ায় দেশি-বিদেশি ব্যবসায়ীরা এ বন্দর ব্যবহারে আরও আগ্রহী হয়ে উঠেছেন। এর ফলে এই মোংলা বন্দর দিয়ে এখন পণ্য আমদানি-রপ্তানি বেড়ে চলেছে। পণ্যগুলোকে নিরাপদ ও নির্বিঘ্নে আমদানি-রপ্তানি করার ক্ষেত্রে বন্দর কর্তৃপক্ষ সার্বিক দিক দিয়ে প্রস্তুত রয়েছে।

মো. মাকরুজ্জামান আরও বলেন, 'বন্দরে বর্তমানে আটটি বিদেশি বাণিজ্যিক জাহাজ অবস্থান করছে। নৌপথে এসব জাহাজ থেকে পণ্য খালাসের কাজ চলছে। দেশে কারফিউ থাকলেও স্বাভাবিক রয়েছে মোংলা বন্দরের কার্যক্রম। বন্দর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, গত কয়েক দিন দেশে কারফিউ বলবৎ থাকায় আমদানি ও রপ্তানি সড়কপথে কিছুটা ব্যাহত হলেও স্বাভাবিক রয়েছে নৌপথে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে