নাশকতাকারীরা যেই হোক ছাড় দেওয়া হবে না :স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
প্রকাশ | ২৬ জুলাই ২০২৪, ০০:০০
নাশকতাকারী যেই হোক, কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না মন্তব্য করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বলেছেন, আমরা হতবাক হয়েছি বাঙালিরা কিভাবে এই ধ্বংসাত্মক কর্মকাÐ করতে পারে। এটা আমাদের ধারণাই ছিল না। এটা ছাত্র আন্দোলন হতে পারে না। এই আন্দোলনে ছাত্রলীগের ৯ থেকে ১০ জন নিহত হয়েছে। এমনকি আওয়ামী লীগ নেতাদেরও হত্যা করা হয়েছে।
তিনি আওয়ামী লীগ নেতাদের উদ্দেশে বলেন, আপনারা ব্যর্থ হয়েছেন। নেতারা হাত গুটিয়ে বসেছিলেন কেন? আওয়ামী লীগ-ছাত্রলীগ নেতাদের গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। আমরা ঘুমিয়ে থাকলে ঘরে ঢুকে মেরে ফেলবে।
বৃহস্পতিবার দুপুরে রংপুর শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বিএনপি-জামায়াত এক হয়েছে। তারা এক হয়ে ধ্বংসাত্মক কর্মকাÐ চালিয়েছে। সেনাবাহিনী এগিয়ে এসেছে এ দেশের জনগণকে রক্ষা করার জন্য। আমরা কাউকে ছাড় দেব না। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী অনেককে চিহ্নিত করেছে। আপনারা ২০১৪ সালে বিএনপি-জামায়াতের ধ্বংসাত্মক কর্মকাÐ দেখেছেন। আপনারা সাহস করে দাঁড়িয়ে যান। উত্তেজিত হবেন না। উত্তেজিত হলে হেরে যাবেন।
মন্ত্রী বলেন, এই আন্দোলনে সাংবাদিক নিহত হয়েছেন। অনেকে আহত হয়েছেন। একটি উদ্দেশ্য নিয়ে তারা এই কাজ করেছে। আন্দোলনের নামে শিশুদের সামনের দিকে এগিয়ে দেওয়া হয়েছে। এটি আন্দোলন হতে পারে না। সন্ত্রাসীরা হাজার হাজার মানুষ নিয়ে এসে থানা, পুলিশ ফাঁড়ি, বিভিন্ন সরকারি স্থাপনা, বিভিন্ন অফিস, জেলখানায় হামলা চালিয়ে সেগুলো জ¦ালিয়ে দিয়েছিল। জঙ্গিদের জেল ভেঙে বের করেছে। ঢাকা-রংপুরসহ বিভিন্ন এলাকায় ধ্বংসাত্মক কর্মকাÐ চালানো হলো। এটা কোটা আন্দোলন হতে পারে না।
এদিকে, মতবিনিময় সভার মঞ্চে রংপুর সিটি করপোরেশনের মেয়র ও জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফাকে দেখে আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ ও যুবলীগের নেতাকর্মীরা উত্তেজিত হয়ে পড়েন। এ সময় তারা বলেন, মেয়রের নির্দেশে রংপুরে জাতীয় পার্টি, বিএনপি ও জামায়াত তাÐবলীলা চালিয়েছে। এ সময় তারা মেয়রের বিচার দাবি করেন।
সংরক্ষিত মহিলা আসনের এমপি নাসিমা জামান ববি মেয়রকে উদ্দেশ করে বলেন, আপনার উপস্থিতিতে জাতীয় পার্টির নেতাকর্মীরা কিভাবে ভাঙচুর করে। আপনাকে কেন আমাদের সঙ্গে দেখলাম না?
সংসদ সদস্য টিপু মুনসি বলেন, আওয়ামী লীগ কেন দুর্বল হয়ে গেল। এ অবস্থায় আমাদের ঘুরে দাঁড়াতে হবে। আমরা দিন দিন সুবিধাবাদী হয়ে যাচ্ছি। আইন তার গতিতে চলবে। সংগঠন শক্তিশালী করতে যা যা করা দরকার তা-ই করা হবে। সাংগঠনিকভাবে ঘুরে দাঁড়াই, দেখি কার কত শক্তি আছে।
এর আগে মন্ত্রী আগুনে ভস্মীভ‚ত তাজহাট থানা, বেগম রোকেয়া বিশ^বিদ্যালয়, সেন্ট্রাল রোড পুলিশ ফাঁড়ি ও মহানগর ডিবি অফিস, আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ, শ্রমিকলীগ পরিবার পরিকল্পনা অফিস পরিদর্শন করেন।
মতবিনিময় সভায় পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন, আনসার বাহিনীর মহাপরিচালক মেজর জেনারেল এ কে এম আমিনুল হক স্বপন, রংপুর বিভাগীয় কমিশনার মো. জাকির হোসেন, রংপুর রেঞ্জের ডিআইজি আব্দুল বাতেনসহ সেনাবাহিনী, বিজিবি, র?্যাব ও পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
জননিরাপত্তা বিভাগের সচিব জাহাঙ্গীর আলমের সভাপতিত্বে মতবিনিময় সভায় আরও বক্তব্য রাখেন মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার মো. মনিরুজ্জামান, জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোবাশ্বের হাসান প্রমুখ। এছাড়া উপস্থিত ছিলেন সাবেক সংসদ সদস্য হোসনে আরা লুৎফা ডালিয়া, রংপুর সিটি করপোরেশনের মেয়র মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা, সংসদ সদস্য আসাদুজ্জামান বাবলু, জাকির হোসেন, জেলা পুলিশ সুপার মো. শাহজাহান প্রমুখ।