কুমিলস্নায় কোটাবিরোধী আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ঘণ্টাব্যাপী সংঘর্ষে শিক্ষার্থী, পুলিশ ও সাংবাদিকসহ আহত হয়েছেন কমপক্ষে ৫০ জন। বৃহস্পতিবার সকাল শিক্ষার্থীরা ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিলস্না অংশের কোটবাড়ি এলাকা অবরোধ করে আন্দোলনকালে এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। আন্দোলনে কুমিলস্না বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা অংশ নেন।
বৃহস্পতিবার সকাল থেকে মহাসড়কে অবস্থান নেয় আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। এ সময় তারা পুলিশকে 'ভুয়া ভুয়া' বলে দুয়োধ্বনি দিচ্ছিল। এ সময় পুলিশ, বিজিবি ও র?্যাব শিক্ষার্থীদের সরাতে টিয়ার শেল ও কয়েকশ' রাবার বুলেট ছোড়ে। এতেও পিছু হটেনি আন্দোলনকারীরা। এক পর্যায়ে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে তাদের থেমে থেমে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে।
বিকাল ৪টা পর্যন্ত চলা এ সংঘর্ষে শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত আহত হয়েছেন অন্তত অর্ধশত। সংবাদ সংগ্রহে গিয়ে আহত হয়েছেন বাংলা ট্রিবিউনের কুমিলস্না প্রতিনিধি আবদুলস্নাহ আল মারুফ ও ঢাকা পোস্টের প্রতিনিধি আরিফ আজগরসহ আরও কয়েকজন সাংবাদিক।
অবরোধে মহাসড়কের দুই পাশে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। এদিকে আশপাশে থমথমে অবস্থা বিরাজ করায় পুলিশ পিছু হটতে বাধ্য হয়েছে।
\হবৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডাকে দেশজুড়ে ডাকা 'কমপিস্নট শাটডাউন' কর্মসূচিতে কুমিলস্না বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ছাড়াও কুমিলস্না ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজসহ জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় অধিভুক্ত কলেজ, জেলার বিভিন্ন প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় ও মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থীরা অংশ নেন।
কুমিলস্না বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের শিক্ষার্থী ও আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক মোহাম্মদ সাকিব হোসাইন বলেন, 'পুলিশ নির্বিচারে আমাদের ওপর গুলি চালিয়েছে, কাঁদানে গ্যাস নিক্ষেপ করেছে। এতে আমাদের বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। পুলিশের বাধার পরও আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা মহাসড়ক ছাড়েননি। যত বাধাই আসুক দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাব আমরা।'
এর আগে কুমিলস্না বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শিক্ষার্থীদের একটি মিছিল মহাসড়কের দিকে অগ্রসর হয়। এ ছাড়া বড় একটি মিছিল নগরীর টমছম ব্রিজ সড়ক হয়ে মহাসড়কের দিকে যেতে চাইলে পুলিশের বাধার মুখে পড়ে। পরে তারা বিভিন্ন সড়ক হয়ে মহাসড়কের দিকে অগ্রসর হয়।
এদিকে সকাল থেকে মহাসড়কে চলছে না দূরপালস্নার বাসসহ কোনো গাড়ি। স্বল্পপালস্নার কিছু মাইক্রোবাস মহাসড়কে চলাচল করতে দেখা গেছে।
কুমিলস্নার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) কামরান হোসেন বলেন, 'আন্দোলনের নামে যাতে কেউ মহাসড়কে প্রবেশ করে বিশৃঙ্খলা করতে না পারে সেদিকে লক্ষ্য রাখা হচ্ছে।'