বিশেষ সেনা প্রহরায় ফিরলেন আটকে পড়া পর্যটকরা
প্রকাশ | ২৪ জুলাই ২০২৪, ০০:০০
কক্সবাজার প্রতিনিধি
শিক্ষার্থীদের কোটাবিরোধী আন্দোলন ও চলমান কারফিউয়ের কারণে কক্সবাজারে আটকে পড়া পর্যটকরা বিশেষ সেনা প্রহরায় বাড়ি ফিরে গেছেন। গত রোববার ও সোমবার দুই দিনে সাড়ে ৫ হাজার পর্যটক গন্তব্যে ফেরেন। মঙ্গলবার বিশেষ সেনা প্রহরায় আটকে পড়া অবশিষ্টরা ৭৫ থেকে ৯০টি ছোট-বড় বাসে করে গন্তব্যে ফিরেছেন।
মানবিক পরিস্থিতি বিবেচনায় জেলা প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সভায় আটকে পড়া পর্যটকদের বাড়ি ফেরানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় বলে জানান কক্সবাজার জেলা প্রশাসন মো. শাহীন ইমরান। ফলে গত তিন দিনে বিশেষ সেনা সহায়তায় পর্যটকদের ফেরত পাঠানো হয়েছে।
কক্সবাজার পাবলিক লাইব্রেরির শহীদ দৌলত ময়দানে পর্যটকদের জন্য স্থাপিত অস্থায়ী টিকিট কাউন্টারে বাসের টিকিট কাটতে আসা ঢাকার এক এলজিইডি কর্মকর্তা সাংবাদিকদের বলেন, আত্মীয়-স্বজন ও পরিবারের ৩০ সদস্য নিয়ে গত বৃহস্পতিবার কক্সবাজার আসি। রোববার ঢাকায় ফেরার বাসের টিকিটও কাটা ছিল। কিন্তু কারফিউর কারণে বাস যাচ্ছে না। সেই টিকিট ক্যানসেল করতে হয়েছে। এখন বিশেষ ব্যবস্থায় জেলা প্রশাসনের তত্ত্বাবধানে সেনা প্রহরায় যাওয়ার জন্য বাসের টিকিট কাটতে এসেছি। সাভার থেকে আসা ইকরামুল হোসেন জানান, তিনিও পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কক্সবাজার আসেন। কারফিউর কারণে আটক পড়েন। তাদের কাছে থাকা নগদ টাকা শেষ হয়ে যাওয়ায় বিপাকে পড়েন। নিজেদের অলঙ্কার বিক্রির টাকায় বাসের টিকিট কিনেছেন।
এদিকে, সাগরে নিম্ন্নচাপ সৃষ্টি হওয়ায় উত্তাল রয়েছে সাগর। সোমবার সন্ধ্যা থেকে বৃষ্টিও ঝরেছে মুষলধারায়। আবহাওয়া অধিদপ্তর থেকে কক্সবাজার উপকূলে ৩ নম্বর সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। এছাড়া চলমান কারফিউয়ে সেনাবাহিনী বিভিন্ন স্থানে চেকপোস্ট বসিয়ে তলস্নাশি চালিয়েছে। ফলে আটকে পড়া পর্যটকদের হোটেলে বন্দি অবস্থায় মানবেতর সময় পার করতে হচ্ছে। তবে বিশেষ সেনা প্রহরায় বাড়ি ফিরতে পেরে পর্যটকরা খুশি।
অন্যদিকে, কক্সবাজার হোটেল-মোটেল ও মালিক সমিতির সভাপতি আবুল কাশেম শিকদারের সভাপতিত্বে সমিতির জরুরি সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সভায় আটকে পড়া পর্যটকদের জন্য বিশেষ ছাড়ের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এর আগে, কক্সবাজার জেলা প্রশাসকের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় মালিক সমিতির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছিল, বর্তমান পরিস্থিতিতে হোটেল মালিকরা পর্যটকদের কাছ থেকে ৭০-৮০ শতাংশ কম ভাড়া নিচ্ছেন। শুধু বিদু্যৎ বিল ও লন্ড্রির খরচটুকুই নেওয়া হচ্ছে পর্যটকদের কাছ থেকে। এছাড়া যারা টাকা দিতে পারছেন না, তাদের ফোন নম্বর ও ঠিকানা রাখা হচ্ছে, যাতে তারা বাড়ি ফিরে টাকা পরিশোধ করতে পারেন।
মালিক সমিতির সভাপতি আবুল কাশেম শিকদার বলেন, কক্সবাজারের হোটেলগুলোতে দুই লাখের মতো পর্যটক থাকতে পারেন। এদের মধ্যে সাড়ে ছয় হাজার পর্যটক আটকা পড়েন। হোটেলগুলোর পক্ষ থেকে তাদের সব ধরনের সহায়তা করা হয়েছে।