চূড়ান্ত ছাড়পত্র নিয়েও প্রায় ২০ হাজারের মতো কর্মী মালয়েশিয়া যেতে না পারার ঘটনায় করা সুদসহ অর্থ ফেরত এবং কর্তৃপক্ষের নিষ্ক্রিয়তা নিয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট।
মঙ্গলবার বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি এস এম মাসুদ হোসাইন দোলনের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রুল জারি করেন। একইসঙ্গে এ বিষয়ে কর্তৃপক্ষকে প্রতি তিন মাস পর পর আপডেট রিপোর্ট দাখিল করতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
আদালতে শুনানি করেন রিটকারী আইনজীবী মো. তানভীর আহমেদ ও বিপস্নব কুমার পোদ্দার। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল তুষার কান্তি রায়।
গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, একটি অংশ উড়োজাহাজের টিকিট সংগ্রহ করতে পারেনি। আরেকটি অংশ মালয়েশিয়া থেকে নিয়োগকর্তার চূড়ান্ত সম্মতি পায়নি। বিমানবন্দর থেকে তাদের গ্রহণ করার নিশ্চয়তা পাঠায়নি নিয়োগকর্তা। এ অবস্থায় কর্তৃপক্ষের নিষ্ক্রিয়তা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট করেছিলেন আইনজীবী তানভীর আহমেদ।
মালয়েশিয়ায় কর্মী পাঠানো নিয়ে সংকটের কারণ অনুসন্ধানে গত ২ জুন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব নূর মো. মাহবুবুল হককে প্রধান করে ছয় সদস্যের তদন্ত কমিটি করেছিল প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়। ওই কমিটির সুপারিশের আলোকে কয়েকটি ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, মালয়েশিয়া গমনেচ্ছু যেসব কর্মীর ই-ভিসা এবং বহির্গমন ছাড়পত্র সংগ্রহ করার পরও মালয়েশিয়ায় পাঠানো হয়নি সেসব অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে সংশ্লিষ্ট রিক্রুটিং এজেন্সিসগুলোকে আগামী ১৮ জুলাইয়ের মধ্যে কারণ দর্শাতে বলা হয়েছে।
মালয়েশিয়া গমনেচ্ছু যেসব কর্মীর কাছ থেকে অর্থ গ্রহণের পরও মালয়েশিয়ায় না পাঠানোর অভিযোগ পাওয়া গেছে সে সব রিক্রুটিং এজেন্সিসগুলোকে কর্মীদের সব প্রকার দেনা-পাওনা নিষ্পত্তিপূর্বক প্রমাণকসহ আগামীকাল ১৮ জুলাইয়ের মধ্যে অবহিতকরণের জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রীর সভাপতিত্বে মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন সংস্থাগুলোর প্রধান, সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা, বায়রার (বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ইন্টারন্যাশনাল রিক্রুটিং এজেন্সি) নেতারা এবং সংশ্লিষ্ট এজেন্সির মালিকদের সমন্বয়ে অনুষ্ঠিত সভায় সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় যে, মালয়েশিয়ায় যেতে না পারা কর্মীদের কাছ থেকে গ্রহণ করা সমুদয় অর্থ আগামীকাল ১৮ জুলাইয়ের মধ্যে ফেরত দিতে হবে। সংশ্লিষ্ট রিক্রুটিং এজেন্সিগুলোকে এ বিষয়ে জবাব দেওয়ার জন্য কারণ দর্শানোর নোটিশ পাঠানো হয়েছে।
এ বিষয়ে সরকার পক্ষে একটি প্রতিবেদনের বিষয়ে অবহিত করা হয়। এরপর মঙ্গলবার হাইকোর্ট রুলসহ আদেশ দেন বলে জানান আইনজীবী তানভীর আহমেদ।
তিনি বলেন, 'আদালত রুলে মালয়েশিয়া শ্রমিক পাঠানো কান্ডে ভিকটিমের জীবন ধ্বংসের জন্য কর্তৃপক্ষের নিষ্ক্রিয়তা এবং খামখেলিপোনাকে কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না এবং কেন একটি নির্দেশনা দেওয়া হবে না তাদের জমাকৃত টাকা সুদসহ ফেরত দেওয়া এবং যথাযথ জরিমানা দেওয়া- তা জানতে চেয়েছেন।'