জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হচ্ছে ৫শ' মিলিয়ন ঘনফুট এলএনজি
সারাদেশে চলমান গ্যাস সংকট কিছুটা কমবে
প্রকাশ | ১৫ জুলাই ২০২৪, ০০:০০
ঘূর্ণিঝড় রেমালের আঘাতে ক্ষতিগ্রস্ত ভাসমান এলএনজি টার্মিনাল 'সামিট' সংস্কারকাজ শেষে সিঙ্গাপুর থেকে বঙ্গোপসাগরে ফিরিয়ে আনা হয়েছে। দৈনিক ৫০০ মিলিয়ন ঘনফুটের বেশি রিগ্যাসিফিকেশন ক্যাপাসিটির টার্মিনালটি আগামী ১৮ জুলাই থেকে অপারেশনাল কাজে যুক্ত হবে। এতে ঢাকা-চট্টগ্রামসহ সারাদেশে বিদ্যমান গ্যাস সংকট কিছুটা কমবে। বিষয়টি নিশ্চিত করেন রূপান্তরিত প্রাকৃতিক গ্যাস কোম্পানি লিমিডেটের (আরপিজিসিএল) উপ-মহাব্যবস্থাপক (এলএনজি) প্রকৌশলী মুহাম্মদ নাছির উদ্দিন। তিনি বলেন, সিঙ্গাপুরে মেরামত শেষে সামিটের ভাসমান এলএনজি টার্মিনালটি গত ১০ জুলাই মহেশখালীর অদূরে বঙ্গোপসাগরে ফিরেছে। আগামী ১৮ জুলাই থেকে জাতীয় গ্রিডে এলএনজি সরবরাহ আবারও স্বাভাবিক পর্যায়ে চলে আসবে বলে আশা করা যাচ্ছে। সংশ্লিষ্টরা জানান, দেশে গ্যাসের চাহিদা মেটাতে আমদানি করা এলএনজি কার্গো কক্সবাজারের মহেশখালী এলাকার অদূরে বঙ্গোপসাগরে স্থাপন করা দুই ভাসমান টার্মিনাল দিয়েই খালাস করা হয়। এর একটি মার্কিন কোম্পানি এক্সিলারেট এনার্জির 'এক্সিলেন্স'। অন্যটি দেশীয় সামিট প্রাইভেটের মালিকানাধীন 'সামিট'। এ দুই টার্মিনালের দৈনিক রিগ্যাসিফিকেশন ক্যাপাসিটি ১ হাজার ১০০ মিলিয়ন ঘনফুটের কাছাকাছি। তবে গত ২৭ মে ঘূর্ণিঝড় রেমালের আঘাতে একটি ভাসমান পন্টুন এসে বঙ্গোপসাগরে ভাসমান সামিটের ফ্লোটিং স্টোরেজ রিগ্যাসিফিকেশন ইউনিটে (এফএসআরইউ) আঘাত করে। এতে একটি এফএসআরইউর ব্যালাস্ট ট্যাংক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ফলে ওই টার্মিনাল দিয়ে জাতীয় গ্রিডে এলএনজি সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়া হয়। দুই টার্মিনালের একটি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় জাতীয় গ্রিডে এলএনজি সরবরাহ প্রায় অর্ধেকে নেমে আসে। দেশে কূপ ও এলএনজি টার্মিনাল দিয়ে গ্যাস সরবরাহের সক্ষমতা দৈনিক ৩ হাজার ৮২৯ মিলিয়ন ঘনফুট। তবে জাতীয় গ্রিডে মিলতো দৈনিক ৩ হাজার মিলিয়ন ঘনফুটের কিছু বেশি। এর মধ্যে সামিটের টার্মিনাল থেকে দৈনিক প্রায় ৫০০ মিলিয়ন ঘনফুট এলএনজি সরবরাহ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় জাতীয় গ্রিডে মোট গ্যাস সরবরাহ ২ হাজার ৬০০ মিলিয়ন ঘনফুটে নেমে আসে। ফিরিয়ে দেওয়া হয় কয়েকটি কার্গো। দেশে শুরু হয় গ্যাস সংকট। এদিকে, এলএনজি সরবরাহের দুটি পাইপলাইনের মধ্যে একটি গত মঙ্গলবার (৯ জুলাই) ফুটো হয়ে যাওয়া ওই পাইপলাইন বন্ধ করে দেয় রূপান্তরিত প্রাকৃতিক গ্যাস কোম্পানি লিমিডেটের (আরপিজিসিএল) কর্তৃপক্ষ। এমন পরিস্থিতিতে জাতীয় গ্রিডে এলএনজি সরবরাহ নেমে আসে ২৫০ মিলিয়ন ঘনফুটে। চট্টগ্রামের আনোয়ারা প্রান্তে চীনা ইকনোমিক জোনের জেটি নির্মাণের সয়েল টেস্ট করার সময় মাটির নিচে থাকা পাইপলাইনটি ফুটো হয়ে যায়। টানা তিন দিন মেরামত কাজ শেষে গত শুক্রবার (১২ জুলাই) সকাল ৮টা থেকে ৪২ ইঞ্চি ব্যাসের এই পাইপলাইন দিয়ে আবারও এলএনজি সরবরাহ শুরু হয়। বর্তমানে মার্কিন কোম্পানি এক্সিলারেট এনার্জির ভাসমান টামিনাল 'এক্সিলেন্স' থেকে জাতীয় গ্রিডে এলএনজি সরবরাহ করা হচ্ছে ৬০০ মিলিয়ন ঘনফুট। আগামী ১৮ জুলাই সামিটের ফ্লোটিং স্টোরেজ রিগ্যাসিফিকেশন ইউনিট আবারও অপারেশনাল হলে আরও ৫০০ মিলিয়ন ঘনফুট এলএনজি জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হবে। এতে ঢাকা, চট্টগ্রামসহ বিভিন্ন জেলায় চলমান গ্যাস সংকট কিছুটা দূর হবে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা।