দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের বন্যা পরিস্থিতির আরও কিছুটা উন্নতি হয়েছে। তবে অপরিবর্তিত রয়েছে উত্তরাঞ্চলের সার্বিক পরিস্থিতি। এ অঞ্চলের ওপর দিয়ে প্রবাহিত ব্রহ্মপুত্র, দুধকুমার, ঘাঘট, তিস্তা, বাঙালি ইত্যাদি নদ-নদীর পানি এখনো বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। একই সঙ্গে যমুনার পানি সমতলে কিছুটা কমলেও বাড়ছে পদ্মার পানি। এদিকে জামালপুরে বন্যার পানিতে ডুবে ৪ জনের মৃতু্যর খবর পাওয়া গেছে।
বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র (এফএফডবিস্নউসি) সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ভারতের প্রবল বর্ষণের কারণে উজান থেকে নেমে আসা পানির কারণে উত্তরাঞ্চলের বন্যা পরিস্থিতি স্থিতিশীল রয়েছে। আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে এ অঞ্চলের নিচু এলাকাগুলোর পরিস্থিতি কিছুটা উন্নতি হতে পারে।
ব্রহ্মপুত্র-যমুনা নদ-নদীগুলোর পানির স্তর নামছে জানিয়ে বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, গঙ্গার পানি আগামী ৭২ ঘণ্টা পর্যন্ত বাড়তে পারে। অন্যদিকে পদ্মা নদীর পানি এখন স্থিতিশীল আছে। আগামী ২৪ ঘণ্টা এ অবস্থা বজায় থাকতে পারে। আগামী ৪৮ ঘণ্টায় কুড়িগ্রামের ব্রহ্মপুত্র-যমুনা নদী সংলগ্ন এলাকা, জামালপুর, গাইবান্ধা, বগুড়া, টাঙ্গাইল ও সিরাজগঞ্জ জেলার বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হতে পারে।
এছাড়া ২৪ ঘণ্টায় দেশের উত্তরাঞ্চলের তিস্তা, ধরলা ও দুধকুমার নদ-নদীর পানি স্থিতিশীল থাকতে পারে এবং কুড়িগ্রাম জেলার দুধকুমার নদী সংলগ্ন কিছু নিম্নাঞ্চলের বন্যা পরিস্থিতি স্থিতিশীল থাকতে পারে। উত্তর ও উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের মহানন্দা বাদে বাকি নদ-নদীর পানি কমতে পারে। আত্রাই নদীর তীরবর্তী সিরাজগঞ্জ জেলার নিম্নাঞ্চলের বন্যা পরিস্থিতির ধীরে ধীরে উন্নতি হতে পারে।
এদিকে, দেশে বৃষ্টির পরিমাণ কমেছে জানিয়ে আবহাওয়াবিদ শাহনাজ সুলতানা রোববার জানান, শনিবার বরিশাল বিভাগের কোথাও বৃষ্টি হয়নি। রাজশাহী ও চট্টগ্রাম বিভাগের কিছু জায়গায় বৃষ্টি হলেও অন্যান্য বিভাগেও অতিভারী কোনো বৃষ্টি হয়নি। সর্বোচ্চ ৫১ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে মোংলাতে। এছাড়াও শনিবার ঢাকা বিভাগেও বৃষ্টি হয়নি। ফলে এ সপ্তাহে তাপমাত্রা বৃদ্ধি অব্যাহত থাকবে। গরমও থাকবে। সারাদেশের বৃষ্টির প্রবণতা কম থাকবে। আগামী সপ্তাহে বৃষ্টির প্রবণতা বাড়তে পারে।
সোমবারের পূর্বাভাস জানিয়ে এই আবহাওয়াবিদ বলেন, 'এদিন রংপুর, ময়মনসিংহ, সিলেট ও চট্টগ্রাম বিভাগের অনেক জায়গায় এবং রাজশাহী, ঢাকা, খুলনা ও বরিশাল বিভাগের দু-এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে রংপুর, ময়মনসিংহ, সিলেট ও চট্টগ্রাম বিভাগের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারী থেকে ভারী বর্ষণ হতে পারে। এদিন সারাদেশে দিনের তাপমাত্রা সামান্য বাড়তে পারে এবং রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।'
গাইবান্ধা : দ্বিতীয় দফা বন্যার করলে পড়া গাইবান্ধার পরিস্থিতি অপরিবর্তিত। জেলায় ব্রহ্মপুত্র নদের পানি হ্রাস পেলেও বিপৎসীমার ১০ সে.মি ওপরে রয়েছে। পানি কমেছে ঘাঘট ও তিস্তা নদীর। এদিকে করতোয়া নদীর পানি বৃদ্ধি পেলেও তা রয়েছে বিপৎসীমার নিচে। বিপৎসীমার ওপরে থাকায় ব্রহ্মপুত্র নদ বেষ্টিত সদরের কামারজানি, ঘাগোয়া, ফুলছড়ির ফজলুপুর, এরেন্ডাবাড়ি এলাকা এখনো নিমজ্জিত রয়েছে। এতে হতাশ আর দুচিন্তায় পড়েছে বন্যাকবলিতরা। পানিবন্দি এসব এলাকার মানুষজন শিশু-বৃদ্ধ ও গবাদিপশু নিয়ে বিপাকে পড়েছেন। প্রকট আকার ধারণ করেছে গো-খাদ্যসহ বিশুদ্ধ পানি ও স্যানিটেশন ব্যবস্থা। দ্বিতীয় দফায় বন্যায় জেলায় এখনো পানিবন্দি হয়ে রয়েছে ৪০ হাজরেরও বেশি পরিবারের প্রায় লক্ষাধিক মানুষ। পানিতে নিমজ্জিত রয়েছে আউশ ধান, পাট, ভুট্টা, বীজতলা ও শাকসবজিসহ ৬ হাজার ৪৩৬ হেক্টর কৃষি জমির ফসল।
কুড়িগ্রাম : রোববার সকাল থেকে পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়েছে। জেলার সব নদ-নদীর পানি কমে বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ফলে বন্যায় পানি নামতে শুরু করেছে। তবে নতুন করে কয়েকটি জায়গায় ভাঙন দেখা দিয়েছে, স্যানিটেশনের দুরবস্থায় ভোগান্তিতে পড়েছেন নারী ও কিশোরীরা।
এদিকে নদ-নদীগুলোর পানি কমলেও নতুন করে দেখা দিচ্ছে নদীভাঙন। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বন্যা দুর্গতদের জন্য ত্রাণ তৎপরতা অব্যাহত থাকলেও দুর্গম অঞ্চলগুলোতে তা অপর্যাপ্ত। বন্যাকবলিত এসব এলাকায় গো-খাদ্য, ওষুধ ও বিশুদ্ধ খাবার পানির সংকট প্রকট আকার ধারণ করেছে।
উলিপুরের বেগমগঞ্জ ইউনিয়নের মুসার চরের লালবানু বলেন, 'পানি একনা কমছে। হামরা বাঁশের মাচান ও নৌকাত ছিলং। খুব কষ্টে দিনগুলা পার করছি। হাত-পাওত সাদা ঘা হইছে, কাজ করা যায় না।'
চিলমারী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলাম বলেন, 'পানি কমতে শুরু করলেও এখনও আমার ইউনিয়নের চর ও দ্বীপচর পানির তলে। অনেক কষ্টে দিনাতিপাত করছেন বানভাসিরা। সরকারিভাবে ধাপে ধাপে ত্রাণ সহায়তা পৌঁছায় দিচ্ছি।'
ব্রহ্মপুত্র, দুধকুমার আর ধরলা অববাহিকার উঁচু চরাঞ্চলে বসবাসরত মানুষজন বসতভিটায় ফিরতে শুরু করেছেন। তবে নিচু চরগুলোতে বসতভিটায় এখনো বন্যার পানি রয়েছে। এসব এলাকায় এখনো যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম নৌকা ও কলা গাছের ভেলা। বন্যাকবলিত হওয়ায় জেলায় প্রাথমিক ও মাধ্যমিক পর্যায়ের ৬ শতাধিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পাঠদান বন্ধ রয়েছে। অপরদিকে বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে পাট, আমন বীজতলা ও সবজিসহ ৭ হাজার ৩৫০ হেক্টর জমির ফসল।
রোববার বিকাল ৩টায় জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) দেওয়া তথ্য বলছে, গত ২৪ ঘণ্টায় ব্রহ্মপুত্র নদের পানি নুনখাওয়া পয়েন্টে বিপৎসীমার ৫ সেন্টিমিটার, চিলমারী পয়েন্টে বিপৎসীমার ১১ সেন্টিমিটার, দুধকুমার নদের পানি পাটেশ্বরী পয়েন্টে ৯ সেন্টিমিটার ও ধরলা নদীর পানি সেতু পয়েন্টে ৬ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
কুড়িগ্রাম পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী রাকিবুল হাসান বলেন, 'জেলায় ও ভারতের উজানে ভারী বৃষ্টিপাত না থাকায় জেলার প্রধান সব নদ-নদীর পানি গত ৩ তিন দিন ধরে ধীরগতিতে কমছে। যার ফলে জেলার উঁচু চরগুলোতে বন্যা পরিস্থিতি কিছুটা উন্নতির দিকে যাচ্ছে।'
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইদুল আরীফ বলেন, 'বানভাসিদের কষ্ট লাঘবের জন্য ৯ উপজেলায় রোববার বিকাল পর্যন্ত ৬০৯ টন চাল, ৩৫ লাখ ৮৫ হাজার টাকা ও ২৫, ৯৭০ প্যাকেট শুকনো খাবার বিতরণের জন্য বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। যা বিতরণ করা হচ্ছে। পাশাপাশি জরুরি মুহূর্তে যেখানেই প্রয়োজন সেখানে ত্রাণ দেওয়া হচ্ছে।'
জামালপুর
জামালপুরে কমছে যমুনা নদীর পানি। গত ২৪ ঘণ্টায় যমুনার পানি ২৬ সেন্টিমিটার কমে বাহাদুরাবাদঘাট পয়েন্টে বিপৎসীমার ২৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। বন্যার পানিতে এখনো ডুবে আছে বেশিরভাগ এলাকার রাস্তাঘাট ও বাড়িঘর। টানা এক সপ্তাহ ধরে পানি জমে থাকায় দুর্ভোগ পোহাচ্ছে দুর্গত এলাকার মানুষ।
এদিকে রোববার বিকালে মেলান্দহ উপজেলার শ্যামপুর ইউনিয়নের দক্ষিণ বালুচর এলাকায় বন্যার পানিতে গোসল করতে নেমে শিশুসহ চারজনের মৃতু্য হয়েছে। নিহতরা হলেন- গৃহবধূ রোকসানা (৩২), তৃষ্ণা (১৭), খাদিজা (১১) ও সাদিয়া (১১)।
মেলান্দহ থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রাজু আহমেদ জানান, নিহতরা একে অপরের প্রতিবেশী। তারা বিকালে জমে থাকা বন্যার পানিতে গোসল করতে নামে। এ সময় খাদিজা ও সাদিয়া পানিতে ডুবে গেলে রোকসানা ও তৃষ্ণা তাদের উদ্ধারে এগিয়ে যান এবং তারাও ডুবে যান। পরে এলাকাবাসী তাদের মৃত অবস্থায় উদ্ধার করেন।
গত ৩ জুলাই জামালপুরে যমুনার পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করে। এতে পস্নাবিত হয় জেলার সাতটি উপজেলার ৪২টি ইউনিয়নের বিস্তীর্ণ জনপদ। ভেঙে যায় গ্রামীণ জনপদের কাঁচাপাকা রাস্তা ও ব্রিজ কালভার্ট। পানির কারণে বন্ধ হয়ে যায় দুর্গত এলাকার ৩৬৮টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, ২০টি কমিউনিটি ক্লিনিক। পানিতে তলিয়ে যায় ১২ হাজার হেক্টর জমির ফসল। পানিবন্দি হয়ে পড়ে প্রায় আড়াই লাখ মানুষ।
দেওয়ানগঞ্জ উপজেলার গুজিমারী গ্রামের বাসিন্দা ইমান আলী বলেন, 'বাড়িঘরে পানি থাকার কারণে ঠিকমতো রান্না করা যাচ্ছে না। আজ পাঁচ দিন পর ভাত খাইলাম। পানি কমতে থাকলেও আমাদের দুর্ভোগ কমছে না। অনেক কষ্টে দিনযাপন করছি।'
একই এলাকার বাসিন্দা রমজান আলী বলেন, 'খুব অল্প সময়ের মধ্যে আমাদের এলাকা পানিতে তলিয়েছিল। এখন পানি কমছে ধীরে ধীরে। আমরা ঠিকমতো শৌচাগার ব্যবহার করতে পারছি না। অনেক দূর থেকে খাবার পানি আনতে হচ্ছে। গবাদিপশুর তীব্র খাবারের সংকট দেখা দিয়েছে।'
টাঙ্গাইল
টাঙ্গাইলে সব নদীর পানি ফের কমতে শুরু করলেও এখানো যমুনা, ঝিনাই, ধলেশ্বরী নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। বন্যার পানিতে জেলার গোপালপুর, ভূঞাপুর, কালিহাতী, সদর, নাগরপুর, দেলদুয়ার ও বাসাইল উপজেলার চরাঞ্চল এবং নিম্নাঞ্চলের বাড়িঘর, রাস্তাঘাট, হাটবাজার, ফসলি জমি তলিয়ে গেছে।
চরাঞ্চলে বানভাসি মানুষরা বেশি দুর্ভোগে আছেন। জেলার ৬টি উপজেলায় এখনো ৪৭ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে জীবনযাপন করছেন। বন্যার কারণে জেলার প্রাথমিক এবং মাধ্যমিক স্কুলের ৭২টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে।
টাঙ্গাইল জেলা প্রশাসক মো. কায়ছারুল ইসলাম জানান, জেলার ৬টি উপজেলায় প্রায় ১১ হাজার পরিবারের ৪৭ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে জীবনযাপন করছেন। বন্যার্তদের মধ্যে ত্রাণ সহায়তা কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে।
সুনামগঞ্জ
দুই দিন ভারী বৃষ্টি না হওয়ায় সুনামগঞ্জ জেলার নদ-নদী ও হাওড়ে আবার পানি কমতে শুরু করেছে। নদীতে দ্রম্নত পানি কমলেও হাওড়ে কমছে ধীরে। হাওড় এলাকার অনেক বাড়িঘর, রাস্তাঘাট এখনো বন্যার পানিতে তলিয়ে আছে। এতে ভোগান্তিতে আছেন লোকজন। পৌর শহরের বিভিন্ন এলাকায়ও এখনো পানি নামেনি।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) সুনামগঞ্জ কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, রোববার তিনটায় পৌর শহরের ষোলঘর পয়েন্টে সুরমা নদীর পানি বিপৎসীমার ২৬ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এখানে বিপৎসীমা ৭ দশমিক ৮০ মিটার। গত শুক্রবার একই সময়ে পানি বিপৎসীমার ১৪ সেন্টিমিটার ওপরে ছিল। গতকাল সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় সুনামগঞ্জে ২৩ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। এর আগের ২৪ ঘণ্টায় বৃষ্টি হয় ১২ মিলিমিটার।
সুনামগঞ্জে দ্বিতীয় দফা বন্যার পানি কমতে শুরু করে ১ জুলাই থেকে। ৪ জুলাই সুরমা নদীর পানি বিপৎসীমার নিচে নামে। তবে নদী ও হাওড়ে পানি কমে ধীরে। অনেক স্থানে রাস্তাঘাট ও মানুষের বাড়িঘরে পানি ছিল। মঙ্গলবার সুরমা নদীর পানি বিপৎসীমার ৪৬ সেন্টিমিটার নিচে ছিল। এরপর মঙ্গলবার রাত থেকে আবার সুনামগঞ্জে ও উজানে ভারতের মেঘালয়ে ভারী বৃষ্টি হয়। এতে পাহাড়ি ঢল নেমে নদীর পানি বেড়ে যায়।
সুনামগঞ্জ পৌর শহরের পশ্চিম তেঘরিয়া এলাকার সেলিনা বেগম (৫৫) জানান, মেয়ে ও দুই নাতি-নাতনি নিয়ে একটি আধা পাকা টিনশেড ঘরে বসবাস করেন তিনি। ঈদের দিন সকালে (১৭ জুন) ঘরে বন্যার পানি ঢুকেছিল। এখনো নামেনি। পুরো পরিবার নিয়ে বড় ভোগান্তিতে আছেন।
সেলিনা বেগমের মেয়ে তমা বেগম (২৫) বলেন, 'নদীর পানি সকালে কমছে। কিন্তু হাওড়ের পানি না কমলে আমরা ঘর থাকি নামত না। আমরা বড় কষ্টে আছি।'
তাহিরপুরের দুর্গাপুর গ্রামের বাসিন্দা ইসমাইল হোসেন বলেন, 'পাহাড়ি ঢল নামলেই বিপদ। তখন পানি বাড়ে। ঢল না নামলে পানি কমে।'
পাউবোর সুনামগঞ্জ কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মামুন হাওলাদার বলেন, আগামী ২৪ ঘণ্টা হালকা ও মাঝারি বৃষ্টির পূর্বাভাস আছে। এ সময় বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হবে না। মূলত ভারী বৃষ্টির সঙ্গে উজানের ঢল নামলেই পানি বাড়ে। এখন ভারী বৃষ্টি ও ঢল কম। তাই পানি কমতে শুরু করেছে।