পিরোজপুরের নাজিরপুরে মা জুতিকা বালাকে কুপিয়ে হত্যা করেছে তারই বড় ছেলে য্যোতিশ বালা। ঘটনাস্থল উপজেলার উত্তর জয়পুর থেকে য্যোতিশকে আটকের পর পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদে সে তার মাকে হত্যার কথা স্বীকার করেছে বলে দাবি করেছে পুলিশ। তার স্বীকারোক্তি অনুযায়ী হত্যায় ব্যবহৃত দা ডোবা থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। শুক্রবার রাতে এক সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার মুহাম্মদ শরীফুল
ইসলাম এসব তথ্য সাংবাদিকদের নিশ্চিত করেন।
পুলিশ সুপার জানান, বৃহস্পতিবার রাতে নাজিরপুর উপজেলার শ্রীরামকাঠী ইউনিয়নের উত্তর জয়পুর এলাকায় জুতিকা বালাকে (৫০) কুপিয়ে হত্যার ঘটনা ঘটে। তিনি উত্তর জয়পুর গ্রামের বাসিন্দা নারায়ণ বালার স্ত্রী। ঘটনার পরপরই পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে তদন্ত শুরু করে। বিভিন্ন বিষয়ে তদন্ত করে নিহতের বড় ছেলে য্যোতিশ বালাকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে এক পর্যায়ে সে পুলিশের কাছে তার মাকে ধারালো দা দিয়ে কুপিয়ে হত্যার কথা স্বীকার করে। সে জানায়, দীর্ঘদিন আর্থিক নানা সংকট ও পারিবারিক বিরোধের কারণে তার মায়ের ওপর ক্ষোভ ছিল।
পুলিশ সুপার জানান, য্যোতিশ জানায়- তার মা কিছুটা মানসিকভাবে অসুস্থ ছিল, তারা ৪ ভাইয়ের মধ্যে দুই ভাই ঢাকায় থাকে, বাস দুর্ঘটনায় ছোটভাই ক্ষিতিশের এক পা কেটে ফেলায় সে এক রকম পঙ্গু, তার মায়ের সঙ্গে ঝগড়া করে স্ত্রী বাড়ি ছেড়ে চলে গেছে। তাছাড়া মায়ের জন্য প্রতিমাসে ৪ হাজার টাকা ওষুধ কিনতে খরচ হতো, উপজেলা সদরসংলগ্ন কালিবাড়ীতে তার চায়ের দোকানটিই পরিবারের একমাত্র আয়ের উৎস। তার বৃদ্ধ বাবা রান্না-বান্নাসহ সাংসারিক কাজ করত। ওদিকে তার একটি ৭ বছর বয়সি মেয়ে আছে। তাই পূর্বপরিকল্পিকভাবে ঘটনার দিন রাতে ঘরে থাকা দা দিয়ে মাকে কুপিয়ে হত্যা করে য্যোতিশ।
পুলিশ সুপার আরও জানান, এ হত্যাকান্ডের ঘটনায় নিহতের স্বামী নারায়ণ বালা বাদী হয়ে নাজিরপুর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) মো. মুকিত হাসান খান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মো. রবিউল ইসলাম, নাজিরপুর থানার অফিসার ইনচার্জ মো. শাহআলম হাওলদার, গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) পুলিশ বিশেষ শাখাসহ জেলা পুলিশের কর্মকর্তারা।