রাজধানীর মতিঝিলে 'শ্রী শ্রী লক্ষ্ণী নারায়ণ জিউ মন্দির বিগ্রহ' নামে প্রায় ২০০ কোটি টাকা মূল্যের ৩০ শতাংশ দেবোত্তর সম্পত্তি উদ্ধার করেছে ঢাকার জেলা প্রশাসন।
শনিবার মতিঝিল রাজস্ব সার্কেলের সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মাহমুদুল হাসান এই অভিযান পরিচালনা করেন।
মাহমুদুল হাসান জানান, রাজধানীর মতিঝিল এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে স্থানীয় কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তি অবৈধভাবে প্রায় ২০০ কোটি টাকা মূল্যের ৩০ শতাংশ দেবোত্তর সম্পত্তি বেদখল করে রেখেছিল। ঢাকার জেলা প্রশাসকের নির্দেশে এই সম্পত্তি উদ্ধার করা হয়েছে।
আইন অনুযায়ী দেবোত্তর সম্পত্তি বিক্রির কোনো সুযোগ নেই। এজন্য উদ্ধার করা জমি হিন্দু কল্যাণ ট্রাস্টকে বুঝিয়ে দেওয়া হবে।
তিনি আরও জানান, নির্মাণাধীন এই ভবন
ভেঙে এখানে নতুন মন্দির তৈরি করা হবে। কিছুদিন আগে এখানে আনসার ক্যাম্প ছিল। সেটি সরানোর পর প্রভাবশালী একটি মহল ক্রয়সূত্রে মালিকের ভুয়া কাগজপত্র দেখিয়ে জায়গাটি দখল করে নেয়। পরে বিষয়টি মন্দির কমিটির নজরে আসলে এ আবেদন করা হয়। তদন্তে বিষয়টি প্রমাণিত হওয়ায় এই উদ্ধার অভিযান চালানো হয়েছে।
জানা যায়, মতিঝিল মৌজার সি.এস ১০/৪৩৩ নম্বর দাগ, এস.এ ২৪২২ নম্বর দাগ ও আর.এস ২২৩৪ নম্বর দাগের ০.৩৮০০ একর ভূমি এবং সিটি ২৮৭০ নম্বর দাগের ০.২৯৭৪ একর ভূমি সি.এস, এস.এ, ও আর.এস রেকর্ডের ধারাবাহিকতায় শ্রী শ্রী লক্ষ্ণী নারায়ণ জিউ ঠাকুর ম্যানেজিং সেবাইত সুজিত কুমার বসু, পিং সচিন্দ্র নাথ বসু, সাং ৩ নম্বর হরিশ চন্দ্র বাবু স্ট্রিট বাংলা বাজার, ঢাকার নামে সর্বশেষ সিটি রেকর্ড রয়েছে। এই দেবোত্তর সম্পত্তি রক্ষণাবেক্ষণ না করে কিছু অসাধু ব্যবসায়ী অবৈধ স্থাপনা ও দোকানঘর তৈরি করে দীর্ঘদিন ধরে ভোগ দখল করছে।
হিন্দু ধর্ম কল্যাণ ট্রাস্টের ভাইস চেয়ারম্যান সুব্রত পাল জানান, দীর্ঘদিন ধরে এই ৩৬ শতাংশ জায়গা অবৈধ দখলদারদের হাতে ছিল। আমরা ঢাকার জেলা প্রশাসকের কাছে আমাদের সম্পত্তি ফিরে পাওয়ার জন্য আবেদন করেছি। পরে তিনি (ডিসি) এসিল্যান্ডের মাধ্যমে তদন্ত করেছেন যে, এটি দেবোত্তর সম্পত্তি কিনা? তদন্ত শেষে সত্যতা পাওয়ায় তারা এটি হিন্দু ধর্ম কল্যাণ ট্রাস্টকে বুঝিয়ে দেওয়ার জন্য সিদ্ধান্ত নেন। আমরা এখানে একটি মন্দির নির্মাণ করব। আগেও এখানে মন্দির ছিল।
সম্পত্তি উদ্ধার অভিযানের সময় উপস্থিত ছিলেন- বাংলাদেশ কৃষক লীগের সভাপতি কৃষিবিদ সমীর চন্দ, কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ নেতা নির্মল গোস্বামী, বাংলাদেশ পূজা উদযাপন কমিটির সাধারণ সম্পাদক ও দৈনিক কালবেলার সম্পাদক ও প্রকাশক সন্তোষ শর্মা, বাংলাদেশ হিন্দু কল্যাণ ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য ইঞ্জিনিয়ার রতন দত্ত, ঢাকা মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহ-সভাপতি ব্যারিস্টার পার্থ সারথিসহ প্রমুখ।