লাগাতার দুবারের বন্যায় মৌলভীবাজার সড়ক ও জনপথ বিভাগের ৩৭৬ কিলোমিটার সড়কের ২০ কিলোমিটার সড়কধস, পাহাড় আছড়ে ও জলে তলিয়ে গিয়ে প্রায় ৬৭ কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। মঙ্গলবার মৌলভীবাজার সড়ক ও জনপথ বিভাগ সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
সরেজমিন দেখা যায়, ভারতের ঢল আর লাগাতার বৃষ্টিতে জেলার পাহাড়ি এলাকা থেকে এখনো পানি নেমে ১৭টি সড়কের ৯টির বিভিন্ন এলাকা তলিয়ে আছে। আর নদ-নদীর পানি বৃদ্ধির প্রভাবে নিম্নাঞ্চলের সড়ক তলিয়ে রয়েছে। তলিয়ে যাওয়া সড়ক দিয়ে ভারী যানবাহন চলাচল করায় আরও দেবে যাচ্ছে সওজের বিভিন্ন এলাকার সড়ক।
সড়ক বিভাগের অধীন থাকা রাজনগর-কুলাউড়া, জুড়ি-বড়লেখা-বিয়ানীবাজার-শেওলা-চারখাই সড়কের ৭৮ কিমি, জুড়ী-লাঠিটিলা সড়কের ২.২ কিমি, জুড়ী-ফুলতলা-বটুলী সড়কের ৫.৮ কিমি, মৌলভীবাজার-শমসেরনগর-চাতলা চেকপোস্ট সড়কের শূন্য দশমিক ৪ কিমি, কুলাউড়া-শমসেরনগর-শ্রীমঙ্গল সড়কের শূন্য দশমিক ২৫০ কিমি, শাহবাজপুর-জলঢুপ সড়কের শূন্য দশমিক ৫ কিমি, বড়লেখা-শাহবাজপুর-লাতু সড়কের শূন্য দশমিক ২ কিমি, হামরকোনা এন-২০৭ পুরনো অ্যালাইনমেন্ট সড়কের শূন্য দশমিক ৮৫০ কিমি, জুড়ী (ক্লিবডন চা বাগান)-কুলাউড়া (গাজীপুর) সড়কের ২.৫ কিমিসহ মোট ২০ দশমিক ৫শ' কিলোমিটার সড়কের মারাত্মক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
এদিকে রাজনগর-কুলাউড়া-জুড়ী-বড়লেখা-বিয়ানীবাজার সড়কে দীর্ঘস্থায়ী বন্যায় প্রায় ৭ কিমি সড়ক তলিয়ে গিয়ে নিচে দেবে গেছে। ঢাকা- মৌলভীবাজার-বিয়ানীবাজারগামী সড়কে ভারী যানবাহন চলাচল করে দিন দিন আরও ক্ষতির মুখে পড়েছে। তলিয়ে যাওয়া সড়কে যে কোনো সময় ঘটতে পারে মারাত্মক সড়ক দুর্ঘটনা। তারা দ্রম্নত ভরাট করে গাড়ি চলাচলের উপযোগী করার দাবি তোলেন।
এদিকে মৌলভীবাজার সড়ক বিভাগ জানিয়েছে, তাদের সড়কের ওই স্থানগুলো দীর্ঘস্থায়ী বন্যা ও পাহাড়ি ঢলে প্রতিনিয়ত চলাচলের অনুপযোগী হয়ে দাঁড়িয়েছে। জলের নিচে তলিয়ে যাওয়া সড়কের কি পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে এখনো পরিপূর্ণভাবে বলা যাচ্ছে না। বন্যার পানি সম্পূর্ণ কমে গেলে পুরো ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ জানা যাবে। সড়কের বহু জায়গা নিচু থাকায় বন্যাক্রান্ত হচ্ছে বেশি। ওই জয়গাগুলো উঁচু করে ভরাটসহ সংস্কার করতে হবে। এর আগেও ঘূর্ণিঝড় রেমাল'র তান্ডবে তাদের ২৬ কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হলেও ফের লাগাতার বন্যা ক্ষতির পরিমাণ বাড়িয়ে দিয়েছে।
মৌলভীবাজার সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. কায়সার হামিদ বলেন, 'জেলাজুড়ে ৭৬ কিমি সড়ক রয়েছে। আমাদের ৯টি সড়কের ২০ কিমি সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এই সড়কে স্বল্পমেয়াদি সংস্কার কাজ করলে ৯ কোটি ৪০ লাখ ও দীর্ঘমেয়াদি কাজ করা হলে ৬৭ কোটি ৫০ লাখ টাকা খরচ হবে। পানি নেমে গেলে ক্ষতিগ্রস্ত সড়কের কাজের প্রস্তাব পাঠানো হবে। অনুমোদন পেলে এরই আলোকে কাজ করা হবে।'