রোববার, ০৩ নভেম্বর ২০২৪, ১৭ কার্তিক ১৪৩১

গ্রাম ও শহুরে জীবনমানের ব্যবধান কমিয়ে আনাই আমাদের লক্ষ্য

একান্ত আলাপচারিতায় এলজিইডি'র প্রধান প্রকৌশলী মো. আলি আখতার হোসেন
বজলুর রশীদ
  ১০ জুলাই ২০২৪, ০০:০০
মো. আলি আখতার হোসেন

স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) প্রধান প্রকৌশলী মো. আলি আখতার হোসেন বলেছেন, দেশের মানুষের আর্থসামাজিক উন্নয়নে গ্রাম ও শহরের জীবনধারায় পরিবর্তন আনতে বর্তমান সরকার দিন-রাত পরিশ্রম করে চলেছে। বঙ্গবন্ধুর কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বর্তমান সরকার ২০৩০ সালের মধ্যে মধ্যম আয়ের দেশ তথা ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে সমৃদ্ধ উন্নত দেশে রূপান্তর করার এক উচ্চাভিলাষী লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে। স্থানীয় সরকার, পলস্নী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের দিকনির্দেশনায় এই মিশনের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে এলজিইডি যাদের নেতৃত্বে একঝাঁক অভিজ্ঞ প্রকৌশলী দিন-রাত পরিশ্রম করে বিভিন্ন উদ্বাবনী অবকাঠামো প্রকল্প গ্রহণ, বাস্তবায়ন ও কার্যকর ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে গ্রাম ও শহুরে জীবনমানের মধ্যে ব্যবধান কমানোর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। তিনি বলেন, গ্রামীণ সড়ক সেতু এবং পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থার উন্নয়নে এলজিইডি এখন আধুনিক তথ্য-প্রযুক্তির মাধ্যমে নিজেদের ইনফরমেশন ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম ব্যবহার করে বিভিন্ন গবেষণা ও উন্নয়ন কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। যার ফলে দেশে দুর্গম অঞ্চলে উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন সহজ থেকে সহজতর হচ্ছে। ফলে উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থার পাশাপাশি দেশের মানুষ ও পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠী শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কৃষি এবং অন্যান্য মৌলিক সুবিধার সুফল পেয়ে জাতীয় অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারছে। মো. আলি আখতার হোসেন বলেন, বঙ্গবন্ধুর কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশকে মধ্যম আয়ের দেশ থেকে সমৃদ্ধ উন্নত দেশে রূপান্তরের লক্ষ্যে তিনি নারী ও শিশুর উন্নয়নে বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছেন। নারী কর্মসংস্থান সৃষ্টি, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের উন্নয়ন এবং শিশুদের জন্য স্বাস্থ্যসম্মত পরিবেশ নিশ্চিত করতে এলজিইডি বিভিন্ন প্রকল্প গ্রহণ ও বাস্তবায়নে অসামান্য অবদান রাখছে। যা সরকারের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য অর্জনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়িয়ে এবং বিভিন্ন উদ্বাবনী চিন্তাধারা প্রয়োগ করে এলজিইডি দেশের অবকাঠামো উন্নয়নে আরও সক্রিয় ভূমিকা পালন করতে আগ্রহী। এছাড়াও এলজিইডি সুশাসন ও স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে এবং উন্নয়ন প্রকল্পের সঠিক বাস্তবায়ন করতে বিভিন্ন মনিটরিং ও মূল্যায়ন ব্যবস্থা গ্রহণ করছে। উলেস্নখ্য, অভিজ্ঞতার আলোকে এলজিইডি'র প্রধান প্রকৌশলী মো. আলি আখতার হোসেন (গ্রেড-১) একজন মেধাবী, চৌকস, সৎ এবং দক্ষ প্রকৌশলী হিসেবে সুদীর্ঘ ৩৪ বছরের অধিককাল যাবৎ দায়িত্ব পালন করে আসছেন। বর্তমানে তার কর্মতৎপরতায় এলজিইডি আরও উন্নত সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে বিভিন্ন দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা গ্রহণ করছে। তিনি উপজেলা প্রকৌশলী, নির্বাহী প্রকৌশলী ও প্রকল্প পরিচালকসহ বিভিন্ন কারিগরি ব্যবস্থাপনা পরিকল্পনা ও অন্যান্য বিষয়ে ৩০টির বেশি প্রশিক্ষণ ও কর্মশালায় অংশ নেন। প্রকল্প পরিচালক হিসেবে তিনি সফলভাবে এশিয়া উন্নয়ন ব্যাংক সহায়তাপুষ্ট সাসটেইনেবল রুরাল ইনফ্রাস্ট্রাকচার ইমপ্রম্নভমেন্ট প্রজেক্ট (এসআরআইআইপি) বাস্তবায়ন কাজ সম্পন্ন করেন। তাছাড়া তিনি এলজিইডির বহু প্রকল্প প্রস্তুতকরণে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িত ছিলেন। কর্মজীবনে তিনি কেয়ার বাংলাদেশের গোল্ড মেডেল অ্যাওয়ার্ড ১৯৯৫ এবং এশিয়া উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) থেকে সাসটেইনেবল রুরাল ইনফ্রাস্ট্রাকচার ইমপ্রম্নভমেন্ট প্রজেক্ট-এর জন্য পরপর তিন বছর (২০১৪, ২০১৫, ২০১৬) বেস্ট প্রজেক্ট অ্যাওয়ার্ড অর্জন করেন। সরকারি দায়িত্ব পালনের অংশ হিসেবে তিনি নেপাল, শ্রীলঙ্কা, থাইল্যান্ড, ভিয়েতনাম, ফিলিপাইন, ইন্দোনেশিয়া, ফ্রান্স, মালয়েশিয়া, দক্ষিণ কোরিয়া, জাপান, অস্ট্রেলিয়া, ব্রাজিল, তুরস্ক, সিঙ্গাপুর, জার্মানি, হংকং, বেলজিয়াম, নেদারল্যান্ডস ও যুক্তরাজ্যসহ বিভিন্ন দেশ ভ্রমণ করেন। প্রধান প্রকৌশলী মো. আলি আখতার হোসেন ১৯৬৫ সালের ২০ অক্টোবর রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার বিজয় নগর গ্রামে এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবার নাম আলাউদ্দিন মন্ডল এবং মায়ের নাম হাজেরা খাতুন। তিনি কৃতিত্বের সঙ্গে ১৯৮০ সালে চাঁপাইনবাবগঞ্জের গোমস্তাপুর আলীনগর হাই স্কুল থেকে এসএসসি এবং ১৯৮২ সালে রাজশাহী কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করেন। ১৯৮৬ সালে তৎকালীন বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি (বিআইটি), খুলনা (বর্তমান খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, কুয়েট) থেকে পুরকৌশলে স্নাতক এবং ২০০২ সালে যুক্তরাজ্যের নটিংহ্যাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এনভায়রনমেন্টাল ম্যানেজমেন্ট বিষয়ে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে