চাঁদপুরে ৬ মাসে ঘর ছেড়েছেন ১৬৩ জন

১২৫ জনকে উদ্ধার

প্রকাশ | ০৮ জুলাই ২০২৪, ০০:০০

চাঁদপুর প্রতিনিধি
চাঁদপুরে গত ছয় মাসে ঘর ছেড়ে নিখোঁজ হয়েছেন ১৬৩ জন। এসব ঘটনায় চাঁদপুর সদর মডেল থানায় গত ১ জানুয়ারি থেকে ৩০ জুন পর্যন্ত ১৬৩টি নিখোঁজ ডায়েরি হয়েছে। এর মধ্যে ১২৫ জনকে উদ্ধার করতে সক্ষম হয়েছে পুলিশ। এদের মধ্যে শিশু, কিশোর, কিশোরী, বিবাহিত নারী, কলেজ শিক্ষার্থী, যুবক-যুবতী এবং বৃদ্ধ-বৃদ্ধা রয়েছেন। তবে এসব নিখোঁজ ডায়েরির মধ্যে পরকীয়া ও প্রেম-ভালোবাসার কারণে ঘরছাড়ার সংখ্যাই বেশি। গড়ে প্রতি মাসে ২৭টি করে নিখোঁজ ডায়েরি হয়েছে বলে থানা সূত্রে জানা গেছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তথ্য মতে, চাঁদপুরে কিশোর-কিশোরী, যুবক-যুবতী নিখোঁজের ঘটনায় ১৬৩টি নিখোঁজ ডায়েরি করেছে ভুক্তভোগী পরিবার। নিখোঁজদের মধ্যে পরকীয়া ও প্রেম-ভালোবাসা এবং পারিবারিক কলহে ঘরছাড়ার সংখ্যাই বেশি। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি সংখ্যায় ঘর ছেড়েছে কথিত প্রেমিকযুগল। পারিবারিক কলহেও অনেকে ঘর ছেড়েছেন। পরকীয়ার ঘটনাও রয়েছে এগুলোর মধ্যে। চাঁদপুর সদর মডেল থানার পুলিশ সূত্রে জানা যায়, গত ছয় মাসে চাঁদপুর সদর মডেল থানায় নিখোঁজ ডায়েরি ও উদ্ধারের পর ৩৮টি নিখোঁজ ডায়েরি তদন্তাধীন রয়েছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় পরিচয়, অতঃপর প্রেম, সবশেষে ঘর ছেড়ে পালানোদের সংখ্যা বেশি। পিছিয়ে নেই পরকীয়া প্রেমিকরাও। স্বামী বিদেশ কিংবা পেশাগত কাজে ব্যস্ত, এ সুযোগে স্ত্রী পালিয়ে গেছে অন্য পুরুষের সঙ্গে এমন সংখ্যাও রয়েছে। সব মিলিয়ে চাঁদপুর সদর মডেল থানায় নিখোঁজ ডায়েরি কমছে না। এ বিষয়ে চাঁদপুর পুরানবাজার মধুসূধন উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক গণেশ দাশ বলেন, বর্তমানে দেখা যাচ্ছে তরুণ সমাজ পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাচ্ছে। হঠাৎ করেই শোনা যায় অমুককে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। শিক্ষার্থীরা অধিকাংশ সময় পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কাটায়। এ ব্যাপারে পরিবারের সদস্যদের বেশি সচেতন হওয়া দরকার। চাঁদপুর সচেতন নাগরিক কমিটির (সনাক) সভাপতি ডা. পীযূষ কান্তি বড়ুয়া বলেন, অতিরিক্ত ডিভাইসের সহজলভ্যতা এর অধিকাংশ কারণ। এই ডিভাইসের অপব্যবহারের কারণে অনেক ক্ষেত্রে মেয়েরা প্রতারিতও হচ্ছে। তাই অপ্রাপ্তদের হাতে ডিভাইসের ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ দরকার। এ বিষয়ে চাঁদপুর মডেল থানার ওসি মো. শেখ মুহসীন আলম জানান, প্রতিদিনই নিখোঁজ ডায়েরি হচ্ছে। মানসিক ভারসাম্যহীন, শিশু-কিশোরসহ প্রেম-ভালোবাসা ও পরকীয়ার ঘটনায় নিখোঁজ ডায়েরি বেশি হয়। পারিবারিক ও সামাজিক অবক্ষয়ের কারণে এসব ঘটনা বেশি ঘটছে। এ ছাড়া সোশ্যাল মিডিয়ার আগ্রাসন তো রয়েছেই। এসব ক্ষেত্রে অভিভাবক ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে আরও সচেতন হতে হবে। পুলিশের এই কর্মকর্তা বলেন, 'তবে নিখোঁজ ডায়েরির বিপরীতে আমাদের পুলিশ অধিকাংশ ক্ষেত্রে ভিকটিমকে উদ্ধার করেছে।'