থ্যালাসেমিয়া একটি বংশগত রক্তস্বল্পতাজনিত রোগ। থ্যালাসেমিয়ার বাহক আর থ্যালাসেমিয়ার রোগী এক কথা নয়। মা-বাবা দুজনই থ্যালাসেমিয়ার বাহক হলে সন্তান থ্যালাসেমিয়ার রোগী হওয়ার ঝুঁকি থাকে। বাংলাদেশে থ্যালাসেমিয়ার বাহক রয়েছে ১১ দশমিক চার শতাংশ। এই বাহকদের মধ্যে পুরুষ ১১ দশমিক ৯ শতাংশ ও মহিলা ১১ দশমিক দুই শতাংশ।
রোববার আগারগাঁওয়ে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান বু্যরোতে জাতীয় থ্যালাসেমিয়া সার্ভে ২০২৪ এ প্রকাশিত জরিপে এ তথ্য দেওয়া হয়।
জরিপে সারাদেশের ৮ হাজার ৬৮০ জনের রক্ত পরীক্ষা করা হয়। এদের মধ্যে থ্যালাসেমিয়া বহন করছে ১১ দশমিক ৪ শতাংশ মানুষ, হেপাটাইটিস বি ১ দশমিক ২ শতাংশ ও হেপাটাইটিস সি ০ দশমিক শূন্য ৫ শতাংশ।
এছাড়া এই বাহকদের মধ্যে ১৪ থেকে ১৯ বছর বয়সিদের ১১ দশমিক ৯ শতাংশ, ২০ থেকে ২৪ বছর বয়সিদের মধ্যে ১২ শতাংশ, ২৫ থেকে ২৯ বছর বয়সিদের মধ্যে ১০ দশমিক তিন শতাংশ ও ৩০ থেকে ৩৫ বছর বয়সিদের মধ্যে ১১ দশমিক তিন শতাংশ।
এই জরিপে উঠে আসে রংপুর বিভাগে সবচেয়ে বেশি থ্যালাসেমিয়া বহনকারী পাওয়া যায়। রংপুরে ২৭ দশমিক ৭০ শতাংশ। এর পরের অবস্থানে আছে রাজশাহীতে ১১ দশমিক ৩০ শতাংশ ও চট্টগ্রামে ১১ দশমিক ২০ শতাংশ। এছাড়া অন্যান্য বিভাগের মধ্যে বরিশালে ৭ দশমিক ৩০ শতাংশ, ঢাকায় ৮ দশমিক ৬০ শতাংশ, খুলনায় ৮ দশমিক ৬০ শতাংশ, ময়মনসিংহে ৯ দশমিক ৮০ শতাংশ ও সিলেটে ৪ দশমিক ৮০ শতাংশ। বাহকদের মধ্যে গ্রামের বাসিন্দা ১১ দশমিক ৬ শতাংশ ও শহরে ১১ শতাংশ।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী মো. শহীদুজ্জামান সরকার বলেন, এই সার্ভে আমাদের পথ প্রদর্শক। থ্যালাসেমিয়া ক্যারিয়ার টু ক্যারিয়ার নির্মূল করতে বাহক টু বাহক বিবাহটা বন্ধ করতে হবে। বিয়ের চেয়ে অনাগত ভবিষ্যতের কথাটা সবাই চিন্তা করবে।
স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মুহাম্মদ ওয়াহিদুজ্জামান বলেন, এই রোগ নিয়ে আমাদের সচেতন হতে হবে, পেনিক হওয়া যাবে না। এই সার্ভের মাধ্যমে একটি দ্বার উন্মোচিত হলো।
পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের সচিব ড. শাহনাজ আরেফিন বলেন, অনেক সচেতনতার সঙ্গে এই সার্ভেটা করা হয়েছে। আমরা মাঠপর্যায়ে স্বাস্থ্যকর্মীদের সহায়তা নিয়ে এই সার্ভে করেছি। তাই আমরা মনে করি, যদি বাহক টু বাহক বিবাহ বন্ধ রাখা যায় তাহলে থ্যালাসেমিয়া নির্মূল করা সম্ভব বলে তিনি মনে করেন।
বিবিএসের মহাপরিচালক মোহাম্মদ মিজানুর রহমানের সভাপতিত্বে প্রতিবেদন উপস্থাপন প্রধান অতিথি ছিলেন পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী শহীদুজ্জামান সরকার। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের সচিব ড. শাহনাজ আরেফিন, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মোহাম্মদ ওয়াহিদুজ্জামান।