কালরাতে পিজিআর 'সুসংগঠিত' থাকলে ইতিহাস অন্য হতে পারত : রাষ্ট্রপতি

প্রকাশ | ০৭ জুলাই ২০২৪, ০০:০০

যাযাদি ডেস্ক
রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন শনিবার প্রেসিডেন্ট গার্ড রেজিমেন্টের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে ঢাকা সেনানিবাসের পিজিআর সদর দপ্তরে আয়োজিত অনুষ্ঠানে বাহিনীর কর্মকর্তা ও অতিথিদের সঙ্গে কেক কাটেন -ফোকাস বাংলা
রাষ্ট্রপ্রধানের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা বিশেষায়িত বাহিনী প্রেসিডেন্ট গার্ড রেজিমেন্ট বর্তমান সময়ের মতো ১৯৭৫ সালে সুসংসঠিত থাকলে ইতিহাস অন্যরকম হতে পারত বলে মন্তব্য করেছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। তিনি বলেছেন, 'সেদিন যদি পিজিআর আজকের মতো সুসংগঠিত ও চৌকস হতো, তাহলে হয়তো বা ১৫ আগস্ট কালরাতে জাতির পিতাকে সপরিবারে হত্যা করতে পারত না ঘাতক দল। বাঙালি ও বাংলাদেশের উন্নয়ন ও অগ্রগতির ইতিহাস অন্যরকম হতে পারত। দেশ পরিণত হতো জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলায়।' পিজিআরের ৪৯তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে শনিবার সংস্থার দরবারে তিনি এ কথা বলেন বলে বাসস জানিয়েছে। ঢাকা সেনানিবাসের পিজিআর সদর দপ্তরের শহীদ ক্যাপ্টেন হাফিজ হলে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। রাষ্ট্রপতি বলেন, অর্থনৈতিক উন্নয়নের পাশাপাশি জাতীয় নিরাপত্তা ও রাষ্ট্রীয় অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিবর্গের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বঙ্গবন্ধু ১৯৭৫ সালের ৫ জুলাই প্রেসিডেন্ট গার্ড রেজিমেন্ট প্রতিষ্ঠা করেন। ১৫ আগস্টের কালরাতের প্রসঙ্গ টেনে সাহাবুদ্দিন বলেন, 'দুঃখজনক হলেও এটি সত্যি, পিজিআর প্রতিষ্ঠার মাত্র ৪২ দিনের মাথায় মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতাবিরোধী ঘাতক চক্রের হাতে বঙ্গবন্ধু ও বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিবসহ তার পরিবারের সদস্য বিপথগামী একদল সেনা কর্মকর্তার নির্মম বুলেটের আঘাতে ধানমন্ডির ৩২ নম্বর বাড়িতে শহীদ হন। সেদিন আমরা আমাদের স্বাধীনতার স্বপ্নদ্রষ্টাকে রক্ষা করতে পারিনি, সেটা ছিল আমাদের অমার্জনীয় অপরাধ।' পিজিআর সদস্যদের 'চেইন অব কমান্ড'র প্রতি আস্থাশীল থেকে নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালনের নির্দেশ দিয়েছেন রাষ্ট্রপ্রধান। তিনি বলেছেন, 'মনে রাখবেন, দেশ ও জাতি যে মহান দায়িত্ব আপনাদের ওপর অর্পণ করেছে, সেই দায়িত্ব পালনে যে কোনো আত্মত্যাগ জাতির ইতিহাসে আপনাদের চিরস্মরণীয় করে রাখবে।' সাহাবুদ্দিন বলেন, 'তাদের (পিজিআর) ওপর অর্পিত দায়িত্ব একদিকে যেমন গুরুত্বপূর্ণ, অন্যদিকে তেমন গৌরবময়। বিগত বছরগুলোয় বিভিন্ন রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠান ছাড়াও অনেক দেশের অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের (ভিআইপি) নিরাপত্তা নিশ্চিত করে তারা দেশের ভাবমূর্তিকে উজ্জ্বল করেছেন। রাষ্ট্রপতি বলেন, পিজিআরের সার্বিক উন্নয়নকে সরকার অগ্রাধিকার দেয়। ভবিষ্যতেও এই রেজিমেন্টকে আরও সুসংহত ও আধুনিক করার চেষ্টা অব্যাহত থাকবে। বিশেষায়িত বাহিনীটির সদস্যদের পেশাগত মান ও দক্ষতা আরও বিকশিত করতে প্রশিক্ষণ কর্মসূচিকে প্রয়োজনে আরও জোরদার করার পরামর্শ দেন রাষ্ট্রপ্রধান। তিনি বলেন, একটি পেশাদার সেনাবাহিনীর অংশ হিসেবে সমসাময়িক বাস্তবতার পাশাপাশি অতীত ইতিহাস ও ঘটনাপ্রবাহ থেকেও পিজিআরকে আলোকিত ভবিষ্যতের দিকে এগিয়ে যেতে হবে। এর আগে সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান এবং পিজিআর কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল খালেদ কামাল পিজিআরের দরবারে রাষ্ট্রপতিকে অভ্যর্থনা জানান। সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের সর্বাধিনায়ক রাষ্ট্রপতি কোয়ার্টার গার্ড পরিদর্শন করেন এবং দর্শনার্থী বইয়ে স্বাক্ষর করেন। সেখানে তিনি প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে একটি কেক কাটেন।