ইসলামি আন্দোলন বাংলাদেশের নেতারা বলেছেন, বাংলাদেশের ওপর দিয়ে ভারতের রেল করিডরের স্বপ্ন পূরণ করতে দেওয়া হবে না। যে কোনো মূল্যে এই সিদ্ধান্ত রুখে দেওয়া হবে। তাই চূড়ান্ত আন্দোলনের আগেই সরকারকে রেল করিডরসহ ১০টি অসম চুক্তি বাতিল করতে হবে। না হয় সারাদেশে দল-মত-নির্বিশেষে এ ব্যাপারে তীব্র আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।
শুক্রবার রাজধানীর জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে জুমার নামাজের দলটির ঢাকা মহানগর দক্ষিণের উদ্যোগে আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে তারা এসব কথা বলেন।
বিক্ষোভ মিছিল পূর্ব সমাবেশে বক্তারা বলেন, প্রধানমন্ত্রীর সাম্প্রতিক ভারত সফরে দেশের স্বার্থের বিরুদ্ধে বিভিন্ন চুক্তি করা হয়েছে। তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে রেল করিডর। এটি দেশের স্বাধীনতার সার্বভৌমত্বের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে। দেশের জনগণের স্বার্থ উপেক্ষা করে চুক্তি করা হয়েছে। তাই এসব চুক্তি অবিলম্বে বাতিল করতে হবে।
সমাবেশে ইসলামি আন্দোলন বাংলাদেশের রংপুর বিভাগের সাংগঠনিক সম্পাদক হাসিবুল ইসলাম বলেন, ভারতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী অবৈধ চুক্তি করে এসেছেন যা বাংলাদেশের জনগণ মানবে না। বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চল এবং সিলেট, সুনামগঞ্জ এখন ভারতের পানিতে তলিয়ে গেছে। তিস্তা চুক্তির কোনো কিছুই বাস্তবায়ন হয়নি। প্রধানমন্ত্রী দিলিস্নর স্বার্থে চুক্তি করেছেন না কি ঢাকার স্বার্থে চুক্তি করেছেন তা স্পষ্ট করতে হবে।
ইসলামি আন্দোলন বাংলাদেশের ঢাকা জেলার সহসভাপতি প্রফেসর মোহাম্মদ কামরুজ্জামান বলেন, কেয়ামত পর্যন্ত ক্ষমতায় থাকার জন্য এই সরকার ভারতের সঙ্গে একের পর এক চুক্তি করছে। এটি বাংলাদেশের সরকার নয়। এই সরকার ভারতের। ভারতকে তোষামোদ করে তারা ক্ষমতায় থাকতে চায়।
দলটির কেন্দ্রীয় প্রচার ও দাওয়া বিষয়ক সম্পাদক মাওলানা আহমদ আবদুল কাইয়ূম বলেন, সরকার ডামি নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতায় এসে ভারতকে সবকিছু উজাড় করে দিচ্ছে। গত মাসেও প্রধানমন্ত্রী ভারতে দুইবার সফর করেছেন। সেখানে তিনি ১০টি চুক্তি করেছেন। তার মধ্যে একটি হচ্ছে বাংলাদেশের ওপর দিয়ে ভারতের রেল যাবে। কিন্তু সেই রেলের ভেতর কী থাকবে তা বাংলাদেশ জানবে না। এতে অস্ত্র, মাদকদ্রব্য থাকতে পারে। সেজন্য দেশের ওপর দিয়ে অবৈধ রেল করিডর আমরা মানি না। এই সরকার দুর্নীতিগ্রস্ত সরকার। এই দুর্নীতিগ্রস্ত সরকারকে দেশের জনগণ আর এক মুহূর্ত ও ক্ষমতায় দেখতে চায় না।
সমাবেশের সভাপতি এবং দলটির ঢাকা জেলা দক্ষিণ সভাপতি হাফেজ মুহাম্মদ জয়নুল আবেদীন বলেন, অল্প কিছুদিনের মধ্যেই ট্রেনের পরীক্ষামূলক যাতায়াত শুরু হবে। কিন্তু বাস্তবে এটি পরীক্ষামূলক থাকবে না। তাই দল-মত-নির্বিশেষে সবাইকে আন্দোলনের ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে। যদি ভারত এই রেল করিডর ব্যবহার করা শুরু করে তাহলে বাংলাদেশের স্বাধীনতার সার্বভৌমত্ব থাকবে না। এখন যেমন বাংলাদেশের মানুষ সরকার গঠন করার ক্ষমতা হারিয়েছে, তখন বাংলাদেশের মানুষ সার্বভৌমত্ব হারাবে। এজন্য বাংলাদেশের ওপর দিয়ে ভারতের রেল চলতে দেওয়া হবে না।