ইউএনও কার্যালয়ের অফিস সহকারী ও তার স্ত্রীর নামে দুদকের মামলা

প্রকাশ | ০৫ জুলাই ২০২৪, ০০:০০

স্টাফ রিপোর্টার, ব্রাহ্মণবাড়িয়া
সম্পদের তথ্য গোপনসহ জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কার্যালয়ের কর্মচারী মিহির কুমার ঘোষ ও তার স্ত্রী শিল্পী রানী ঘোষের নামের মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। বুধবার দুপুরে দুদকের সমন্বিত কুমিলস্না জেলা কার্যালয়ে উপসহকারী পরিচালক ইমরান খান এ দম্পতির নামে পৃথক দুটি মামলা করেন। মিহির কুমার ঘোষ (৫১) ও শিল্পী রানী ঘোষ (৪২) দম্পতি জেলা শহরের টিএ রোড মৌড়াইলের বাসিন্দা। মিহির বর্তমানে বিজয়নগর ইউএনও কার্যালয়ের অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার মুদ্রাক্ষরিক পদে কর্মরত?। এর আগে একই পদে তিনি নাসিরনগরে কর্মরত ছিলেন। একটি মামলায় মিহিরকে আসামি করা হয়েছে। অপর মামলায় শিল্পী ও তার সহযোগী হিসেবে মিহিরকে আসামি করা হয়েছে। মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, ২০১৯ সালে দুদক অনুসন্ধান শেষে শিল্পী রানী ঘোষ ও তার স্বামী মিহির কুমার ঘোষের বিষয়ে প্রাথমিক তথ্য পান। ২০২১ সালের ১৬ আগস্ট শিল্পী রানীর কাছে সম্পদ বিবরণী নোটিশ দেয় দুদক। ২০২১ সালের ৯ সেপ্টেম্বর দুদকের কুমিলস্নার সমন্বিত কার্যালয়ে সম্পদ বিবরণী ফরম পূরণ করে পাঠান শিল্পী। শিল্পী রানী দুদকে দাখিলকৃত সম্পদ বিবরণীতে তার ৩৬ লাখ ৬৬ হাজার ৭৮২ টাকার স্থাবর সম্পদ এবং ১৫ লাখ ৬৮ হাজার ৪১ টাকার অস্থাবর সম্পদের কথা উলেস্নখ করেন। কিন্তু সম্পদ বিবরণী যাচাইকালে তার নামে ৩৯ লাখ ৫৬ হাজার ২৬ টাকার স্থাবর সম্পদ ও ১৫ লাখ ৬৮ হাজার ৪১ টাকার অস্থাবর সম্পাদ অর্জনের তথ্য পায় দুদক। পারিবারিকসহ অন্যান্য ব্যয় পাওয়া যায় ৮ লাখ ২৬ হাজার ২৯১ টাকা। পারিবারিক ও স্থাবর-অস্থাবর সম্পদসহ তার নামে মোট ৬৩ লাখ ৫০ হাজার ৩৫৮ টাকার সম্পদ পায় দুদক। তিনি ২০১০-১১ করবর্ষে আয়কর নথি খোলেন। সে সময় গৃহ সম্পদ ও ব্যবসা থেকে তার আয় ছিল ৩৪ লাখ ৭৫ হাজার ৮১৯ টাকা। শিল্পীর জ্ঞাত আয়ের সঙ্গে সম্পদের তারতম্য পাওয়া যায়। তার জ্ঞাত-আয় বহির্ভূত সম্পদের পরিমাণ ২৮ লাখ ৭৪ হাজার ৫৩৯ টাকা। তিনি সম্পদ বিবরণীতে ৫২ লাখ ৩৪ হাজার ৮২৩ টাকার সম্পদ উলেস্নখ করলেও দুদক অনুসন্ধানে পান ৫৫ লাখ ২৪ হাজার ৬৭ টাকা। তিনি সম্পদ বিবরণীতে ২ লাখ ৮৯ হাজার ২৪৪ টাকার সম্পদের তথ্য গোপন করেছেন। ২০১০-১১ সালের আয়কর নথি পর্যালোচনা করে দেখা যায়, ওই আয়বর্ষে ব্যবসা থেকে তিনি আয় দেখান ৫ লাখ ৭৩ হাজার টাকা। কিন্তু সে সময় ব্যবসার পুঁজি দেখান মাত্র ২ হাজার টাকা। এতে বুঝা যায় যে, আয়কর নথি খোলার পূর্বে তার নামে কোনো প্রকার ব্যবসা ছিল না। তার স্বামী মিহির কুমার অবৈধ পন্থায় উপার্জিত অর্থ দিয়ে ২০১০-১১ সালে ৫ তলাবিশিষ্ট বাড়ি নির্মাণ করেন। দুদকের উপসহকারী পরিচালক ইমরান খান বলেন, 'স্বামী-স্ত্রী দুজনেরই সম্পদ অর্জনের বিষয়ে তথ্য গোপন করেছেন। স্ত্রীর নামে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের তথ্য পেয়েছি। স্বামীকে সহায়তা করায় স্ত্রীর মামলায় মিহিরকে আসামি করা হয়েছে।'