বুধবার ঢাকার এফবিসিসিআই ইনোভেশন অ্যান্ড রিসার্চ সেন্টার ভবনে 'টেকসই পস্নাস্টিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনা' বিষয়ক কর্মশালা এক কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়। কর্মশালায় 'টেকসই পস্নাস্টিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনা'র বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা করেন ব্যবসায়ী, শিক্ষাবিদ, গবেষক এবং নীতিনির্ধারকরা। কর্মশালায় অংশগ্রহণকারীরা এর বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা ও চ্যালেঞ্জ সম্পর্কে ধারণা লাভ করেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও দেশবাসীর স্বপ্ন ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে স্মার্ট উন্নত দেশ হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। পস্নাস্টিকের বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ব্যয়ের অর্থায়নের জন্য উৎপাদকদের বাধ্যবাধকতা, পুনর্ব্যবহারযোগ্য এবং মেরামতের সুবিধা দেওয়া এমন পণ্যের নকশাকে উৎসাহিত করা এবং কার্যকর বর্জ্য সংগ্রহ এবং পুনর্ব্যবহারযোগ্য ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে। বাংলাদেশে ২০১৯ সালে উৎপাদিত ৮.২৫ লাখ টন পস্নাস্টিক বর্জ্যের মাত্র ৩৬ শতাংশ পুনর্ব্যবহৃত হয়েছিল যেখানে ২০০৬ সালে এই পরিমাণ ছিল ৫১ শতাংশ, যা দেশের জন্য একটি বড় উদ্বেগের বিষয়।
বাংলাদেশের শহরাঞ্চলে বার্ষিক মাথাপিছু পস্নাস্টিক পুনর্ব্যবহার ২০০৫ সালে .০ কেজি থেকে বেড়ে ২০২০ সালে ১.০ কেজিতে উন্নীত হয়েছে। ঢাকার বার্ষিক মাথাপিছু পস্নাস্টিক ব্যবহার আরও বেশি, ২৪ কেজি। বৈশ্বিক পস্নাস্টিক বাজারের ৫৭০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের মধ্যে মাত্র ০.৬% অংশ বাংলাদেশের রয়েছে। বাংলাদেশ সরকার এই খাতের প্রবৃদ্ধি নিশ্চিত করতে পস্নাস্টিক শিল্প উন্নয়ন নীতি প্রস্তুত ও প্রকাশ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
কর্মশালায় বুয়েটের ইঞ্জিনিয়ারিং অনুষদের সাবেক ডিন অধ্যাপক ইজাজ হোসেন বলেন, '২০২২-২৩ অর্থবছরে পস্নাস্টিক এবং পস্নাস্টিক পণ্য রপ্তানি করে আমরা আয় করেছি ১৩৪২.৭ হাজার কোটি টাকা। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে 'টেকসই পস্নাস্টিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনা'র প্রচার ও প্রসারের ক্ষেত্রে একটি ইতিবাচক ভূমিকা পালন করবে।'
কর্মশালায় উঠে আসে, আমরা দৈনন্দিন জীবনে যা ব্যবহার করি, তার মধ্যে পস্নাস্টিকের মতো বহুমুখী জিনিস খুব কমই আছে। আমাদের চারপাশে এখানে-সেখানে ছড়িয়ে আছে পস্নাস্টিক। আর ব্যাপকভাবে এই বেড়ে যাওয়া পস্নাস্টিকের অর্থই হলো পরিবেশের ক্ষতি। অর্থাৎ এই পরিস্থিতিতে আমাদের আরও বেশ পরিমাণে পস্নাস্টিকের নিষ্পত্তি করতে হবে। সতর্ক হতে হবে আমাদের। সর্বোপরি পস্নাস্টিকের পুনর্ব্যবহার করা শুধু প্রয়োজনীয়ই নয়, আবশ্যিকও বটে। পস্নাস্টিক যোদ্ধারা প্রতিনিয়ত লড়ে যাচ্ছেন সমাজে পস্নাস্টিকের ব্যবহার কমিয়ে তার বদলে অর্থনৈতিক উন্নয়ন নিয়ে আসার জন্য। সেই সঙ্গে চলছে পরিবেশ বদলের ছোট্ট প্রয়াসও।
সরকার পস্নাস্টিক খাতকে অগ্রাধিকার প্রান্ত রপ্তানি খাত হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করে গেজেট প্রজ্ঞাপন জারি করেছে। এই সিদ্ধান্ত সময়োপযোগী এবং কার্যকর পদক্ষেপ বলেও মন্তব্য করেন অংশগ্রহণকারীরা। সংবাদ বিজ্ঞপ্তি