ফায়ার সার্ভিসের গাড়ির টোল না নেওয়ার নির্দেশ হাইকোর্টের

প্রকাশ | ০২ জুলাই ২০২৪, ০০:০০

যাযাদি রিপোর্ট
এক্সপ্রেসওয়ে, হাইওয়ে, গুরুত্বপূর্ণ ব্রিজ, ফেরি ও রোডে চলাচলের ক্ষেত্রে ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি থেকে টোল আদায় না করতে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি চলাচলে টোল নেওয়া কেন বেআইনি ও অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন আদালত। সোমবার হাইকোর্টের বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি মাসুদ হোসেন দোলনের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ সংক্রান্ত বিষয়ে করা এক রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানিতে এ আদেশ দেন। আদালতে রিট আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মোহাম্মদ মনির উদ্দিন। আদেশের বিষয়টি তিনিই নিশ্চিত করেন। এর আগে গত ৭ মে জনস্বার্থে রিটটি করেছিলেন বলেও জানান তিনি। 'টোল আগে না জীবন আগে?' শিরোনামে গত ২৮ এপ্রিল অনলাইন পোর্টালে একটি বিশেষ প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। এতে উলেস্নখ করা হয়, ফায়ার সার্ভিস একটি সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান। আগুন লাগা, নৌকাডুবি, ভূমিকম্প, কোনো ভবন ধস কিংবা কোনো বড় দুর্ঘটনায় ফায়ার সার্ভিসই সবার আগে ছুটে যায়। এমনকি কোনো জাহাজ বা লঞ্চ যখন দুর্ঘটনায় পড়ে তখনো এই ফায়ার ফাইটাররাই ছুটে যান। জীবনবাজি রেখে মানুষের কল্যাণে কাজ করেন। কিন্তু ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন সেতু ও ফেরি পার হয়ে ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি যখন অগ্নিনির্বাপণ কিংবা উদ্ধার কার্যক্রম চালাতে যায় তখন টোল পস্নাজায় টোল পরিশোধ করতে হয়। এতে ব্যাহত হয় উদ্ধার কার্যক্রম। বাড়তে থাকে জানমালের ক্ষতি। এ নিয়ে ফায়ার সার্ভিসের পক্ষ থেকে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে চিঠি দিলেও সমাধান হয়নি এখনো। প্রায় দুই মাস পর ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি থেকে টোল না নিতে নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০১৪ সালের বাংলাদেশ সরকারের গেজেটের ২০৬৩৯ এর ৪(খ) নির্দেশনা মোতাবেক সরকারি যানবাহন হিসেবে ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি টোলমুক্ত থাকবে। কিন্তু এত দিনেও তা বাস্তবায়ন হয়নি। জানা যায়, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেল, বঙ্গবন্ধু সেতু, ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে, নারায়ণগঞ্জের মুরাদপুর সেতু, আরিচা ও পাটুরিয়ার ফেরি পারাপারের আগে নির্দিষ্ট বুথে টাকা পরিশোধ করা কিংবা টিকিট কাটা লাগে ফায়ার সার্ভিসের গাড়িগুলোকে। দুর্ঘটনার পরিস্থিতি যেমনই হোক এতে ছাড় দেওয়া হয় না। বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ বলছে, সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানের গাড়ি টোলের আওতামুক্ত রাখার নির্দেশনা যদি থাকে তা মানতে বাধ্য। তবে কী কারণে মানা হচ্ছে না সেটা বলতে পারেনি সেতু কর্তৃপক্ষ। ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তারা বলছেন, সেবাদানকারী সরকারের প্রতিষ্ঠান হিসেবে যদি সরকারকে টোল দিতে হয় সেটি দুর্ভোগ ছাড়া কিছু নয়। টোল পরিশোধ করতে গিয়ে যে সময় ব্যয় হয় তাতে জীবন ও সম্পদহানি বেড়ে যায়। এক্ষেত্রে বঙ্গবন্ধু টানেল কর্তৃপক্ষ ভিন্ন উদ্যোগ নিলেও এখন পর্যন্ত সুখবর নেই। জরুরি দায়িত্ব বা অপারেশনাল কার্যক্রম চলাকালে জরুরি যানবাহনের টোল মওকুফের ঘোষণা দিয়েছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেল কর্তৃপক্ষ। ফলে পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস, নৌবাহিনীর যানবাহন জরুরি প্রয়োজনে টানেলের ভেতর টোল ছাড়া চলাচল করতে পারবে। গত ১৭ এপ্রিল বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেলের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মো. আবুল কালাম আজাদ নগরীর পতেঙ্গায় টানেল সাইট অফিসে 'নিরাপত্তা ও সুরক্ষা' বিষয়ক এক সভায় এ সিদ্ধান্তের কথা জানান।