ভারতের সঙ্গে কোনো চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়নি বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও বাংলাদেশ আ.লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী ভারত সফরে গেছেন। ভারতের সঙ্গে কিছু সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়েছে, কিছু সমঝোতা স্মারক নবায়ন করা হয়েছে। কোনো চুক্তি কিন্তু স্বাক্ষরিত হয়নি। বিএনপি নেতারা হরহামেশা বলে যাচ্ছেন চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। বিএনপি নেতারা তো শিক্ষিত। শিক্ষিত মানুষ কেন অশিক্ষিতের মতো কথা বলে যাচ্ছেন সেটা বোধগম্য নয়।
শনিবার চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের বঙ্গবন্ধু হলে আ.লীগের 'পস্নাটিনাম জয়ন্তী' উপলক্ষে উত্তর জেলা আ.লীগ আয়োজিত 'আওয়ামী লীগ ও বঙ্গবন্ধু' শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
জেলা আ.লীগের সভাপতি এমএ সালামের সভাপতিত্বে ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আতাউর রহমানের সঞ্চালনায় এতে আরও বক্তব্য রাখেন উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি এবং চট্টগ্রাম জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এটিএম পেয়ারুল ইসলাম, জেলা আ.লীগের সভাপতি আবুল কালাম আজাদসহ জেলা আ.লীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, যুবমহিলা লীগ ও ছাত্রলীগের নেতারা।
প্রতিটি সমঝোতা স্মারক দেশের মানুষের স্বার্থে করা হচ্ছে উলেস্নখ করে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, 'ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাহেব না কি ঢাকা কলেজে পড়াতেন, মঈনখান তিনিও শিক্ষিত। আরও বেশ কয়েকজন শিক্ষিত মানুষ কেন অশিক্ষিতের মতো কথা বলছে সেটা আমার বোধগম্য নয়। চুক্তি আর সমঝোতা স্মারকের মধ্যে তারা পার্থক্য বুঝতে পারছেন না সেটা আমার বোধগম্য নয়। সব সমঝোতা স্মারক দেশের স্বার্থে করা হয়েছে। আমরা কানেকটিভিটি বাড়াতে চাচ্ছি। কানেকটিভিটি বাড়ানোর জন্য ঢাকা-কলকাতা ট্রেন চালু হয়েছে। ইতোমধ্যে খুলনা কলকাতা ট্রেন চালু হয়েছে। দিনাজপুর শিলিগুড়ি ট্রেন চালু হয়েছে। আখাউড়া দিয়ে ট্রেন চালু হওয়ার সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। আমরা ভারতের ভূমির ওপর দিয়ে নেপাল থেকে জলবিদু্যৎ আমদানির চুক্তি স্বাক্ষর করেছি। ভুটানের সঙ্গেও আলাপ-আলোচনা চলছে। কানেকটিভিটি আমরা আরও বাড়াতে চায়। সেই কানেকটিভিটির সঙ্গে আমরা নেপাল এবং ভুটানকেও যুক্ত করতে চাই। এই অঞ্চলের মানুষের উন্নয়নের স্বার্থে ও অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির স্বার্থে এটি আমরা করতে চায়।'
বিএনপি বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে উলেস্নখ করে তিনি বলেন, যাদের নেত্রী বলেছিলেন সাবমেরিন ক্যাবলের সঙ্গে বাংলাদেশ যুক্ত হলে বাংলাদেশের সমস্ত গোপনীয়তা আউট হয়ে যাবে তারা কানেকটিভিটির মর্ম বোঝার কথা নয়। যেমন নেত্রী তেমন তার সভাসদ। এজন্যই তারা এসব আবল-তাবল কথা বলছেন আর বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছেন। আবার কোনো কোনো পীর সাহেবও দেখি লাফাচ্ছেন। গাজায় যে এভাবে মানুষ হত্যা করা হচ্ছে, মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ সংগঠিত হচ্ছে, নারী ও শিশুদের হত্যা করা হচ্ছে, প্রায় ৩৮ হাজার নিরীহ মানুষকে হত্যা করা হয়েছে কিন্তু তাদের বিরুদ্ধে তো মিছিল নিয়ে লাফাতে দেখি না। বিএনপি-জামায়াত একটি শব্দও বলেনি। তারা এখন জনগণের মধ্যে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে। মনে আছে শান্তিচুক্তি হওয়ার পর বলেছিল ফেনী পর্যন্ত ভারত হয়ে যাবে। এরপর বেগম খালেদা জিয়া তো ফেনী থেকে এমপি নির্বাচিত হয়েছিলেন। তাহলে তিনি কি ভারত থেকে নির্বাচিত হয়েছিলেন? এ ধরনের বিভ্রান্তি ছড়ানো কখনো কাম্য নয়।
সভাপতির বক্তব্যে এমএ সালাম বলেন, আ.লীগ মানে বাংলাদেশ, বাংলাদেশ মানে আ.লীগ। বঙ্গবন্ধু মানে আ.লীগ, বঙ্গবন্ধু মানে স্বাধীনতা। ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত একটি দেশ গড়ে তোলা যে স্বপ্ন বঙ্গবন্ধুর ছিল তা আজ শেখ হাসিনার হাত ধরে বাস্তবায়িত হচ্ছে। মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে বঙ্গবন্ধু যে স্বাধীনতা আমাদের দিয়েছে তার মধ্য দিয়ে বাঙালি জাতিসত্তার বিকাশ ঘটেছে।
এতে আরও বক্তব্য রাখেন উত্তর জেলা যুবমহিলা লীগের আহ্বায়ক রওশন আরা রত্না, জেলা মহিলা আ.লীগের সহসভাপতি সৈয়দা রিফাত আক্তার নিশু, জেলা আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. নাছির উদ্দিন রিয়াজ, জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক রেজাউল করিম, জেলা যুবলীগের ত্রাণ সাহেদ সরওয়ার, জেলা আ.লীগের সদস্য ইফতেখার হোসেন বাবুল, জেলা আ.লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক দেবাশীষ পালিত।