ঢাকা এক্সপ্রেসওয়ের চোরাই মালামাল বিক্রি হচ্ছে বিভিন্ন হাউজিং কোম্পানির কাছে। কোম্পানিগুলো সস্তায় এসব দামি মালামাল কিনে নিচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। যদিও পুলিশ বলছে, মালামাল আসলেই হাউজিং কোম্পানিগুলো কিনে নিচ্ছে, নাকি পরিকল্পিতভাবে চুরি করিয়ে নিচ্ছে, সেটি পরিষ্কার নয়। এজন্য মালামাল চুরির সময় হাতেনাতে গ্রেপ্তার হওয়া দুই চোরকে জিজ্ঞাসাবাদের পাশাপাশি এ ব্যাপারে তদন্ত করা হবে।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গত ২৭ জুন বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে ঢাকার তেজগাঁও থানাধীন বাউলবাগ এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের উপর থেকে মালামাল চুরির সময় হাতেনাতে গ্রেপ্তার হয় দুই চোর। তারা হলেন- সাদ্দাম হোসেন (৩০) ও মোরশেদ (২৯)। জব্দ করা হয় চুরির কাজে ব্যবহৃত ট্রাক। এ ঘটনায় এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের টহল কর্মকর্তা আরাফাত রবিন (২৯) বাদী হয়ে তেজগাঁও থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, দুই জন সন্দেহভাজন ব্যক্তি একটি হলুদ-নীল রংয়ের ফুটন নামের ঢাকা-মেট্রো-ন-১১-১০২০ নম্বরের ট্রাক নিয়ে ঘোরাফেরা করছেন বলে সিসি ক্যামেরার কন্ট্রোল রুম থেকে জানানো হয়। তারা ট্রাকটিতে এক্সপ্রেসওয়ের পস্নাস্টিকের ৫টি দামি রোড ব্যারিয়ার চুরি করে ট্রাকে তুলে নিয়ে বিমানবন্দরের দিকে পালিয়ে যাচ্ছে। চুরি করা জিনিসের দাম কমপক্ষে অর্ধলাখ টাকা। খবর পেয়ে এক্সেপ্রেসওয়ে ও স্থানীয় লোকজন এবং পুলিশের সহায়তায় তাদের ধরে ফেলা হয়। এ সময় চোরেরা মারামারি করে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেও যেতে পারেনি। মারামারিতে আহত হওয়ার পর তাদের ঢাকার শেরেবাংলানগর শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে পুলিশে সোপর্দ করা হয়।
মামলার এজাহার মোতাবেক, গ্রেপ্তার সাদ্দামের পিতার নাম রফিকুল ইসলাম। মায়ের নাম মোছা. নাজমুন নাহার। বাড়ি লক্ষ্ণীপুর জেলা সদরের ভাঙ্গাখাঁর মিন হাজী বাড়ি এলাকায়। তিনি উত্তরা পশ্চিম থানাধীন খালপাড়ের হাউজ বিল্ডিংয়ের ২১৬/৩৬ নম্বর বাড়িতে বসবাস করেন। গ্রেপ্তার মোরশেদের পিতার নাম ফখরুল ইসলাম। মায়ের নাম মনোয়ারা বেগম। বাড়ি লক্ষ্ণীপুর জেলায়। তিনি তেজগাঁও ট্রাক স্ট্যান্ডে বসবাস করেন।
এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে তেজগাঁও থানার ওসি মোহাম্মদ মহসীন যায়যায়দিনকে বলেন, সাদ্দাম ট্রাক ভাড়া করে এক্সপ্রেসওয়ের বিভিন্ন স্পটে ঘুরতে থাকেন। সুযোগ বুঝে এক্সপ্রেসওয়ের বিভিন্ন মালামাল চুরি করে ট্রাকে তুলে পালিয়ে যেত। এক্সপ্রেসওয়ের চুরি করা মালামাল বিভিন্ন হাউজিং কোম্পানির কাছে তারা বিক্রি করে দিত বলে দাবি করেছেন গ্রেপ্তার সাদ্দাম। হাউজিং কোম্পানিগুলো সস্তায় এসব মালামাল কিনে নিত। তবে সত্যিই চোরেরা চুরি করে এক্সপ্রেসওয়ের মালামাল হাউজিং কোম্পানির কাছে বিক্রি করে দিত, নাকি হাউজিং কোম্পানিগুলো নিজস্ব চোর দিয়ে এক্সপ্রেসওয়ের মালামাল চুরি করাত সেটি পরিষ্কার নয়। প্রকৃত রহস্য জানতে গভীর অনুসন্ধান ও গ্রেপ্তারদের জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। সাদ্দামের বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় ৩টি চুরির মামলা আছে।