চাকরি প্রার্থীদের অপহরণ ও এক শিক্ষার্থীকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) ৯ ছাত্রলীগ নেতাকর্মীকে আজীবন বহিষ্কার করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। পাশাপাশি ছাত্রত্ব না থাকায় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি সোহেল রানাসহ অন্য চারজনকে ক্যাম্পাসে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। এ নিয়ে ছাত্রলীগের ১৩ নেতাকর্মীকে ক্যাম্পাসে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে।
মঙ্গলবার বিকালে যবিপ্রবির প্রশাসনিক ভবনের সম্মেলন কক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ নীতি-নির্ধারণী ফোরামরিজেন্ট বোর্ডের ১০০তম (বিশেষ) সভায় এ সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। রিজেন্ট বোর্ডের সদস্যদের অনেকে ভার্চুয়ালি সভায় অংশ নেন।
জানা যায়, এ সংক্রান্ত তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন দাখিলের পর তা নিয়মানুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিসিপিস্ননারি কমিটিতে উপস্থাপন করা হয়। পরে ডিসিপিস্ননারি কমিটির সুপারিশ রিজেন্ট বোর্ডের সভায় উপস্থাপন করার পর তা ঘটনার গুরুত্ব বিবেচনায় নিয়ে এ সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
সভার শুরুতে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাম্প্রতিক ঘটনার বিষয়ে যবিপ্রবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আনোয়ার হোসেন বক্তব্য দেন। বক্তব্যে তিনি ২০২৩ সালের ৭ ডিসেম্বর লিফট অপারেটর নিয়োগ নির্বাচনী বোর্ডের সময় উদ্ভূত ঘটনাগুলো রিজেন্ট বোর্ডের সদস্যদের অবহিত করেন এবং চলতি বছরের ৪ জুন যবিপ্রবির শারীরিক শিক্ষা ও ক্রীড়া বিজ্ঞান (পিইএসএস) বিভাগের শিক্ষার্থী শাহরিন রহমানকে রাতভর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের ঘটনা অবহিত করেন।
রিজেন্ট বোর্ড সভায়, লিফট অপারেটর পদে চাকরি প্রার্থীদের অপহরণের ঘটনা সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় এবং তাদের বিষয়ে ইতোমধ্যে জারিকৃত বিধি-নিষেধ লঙ্ঘন করায় যবিপ্রবির ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের শিক্ষার্থী মো. বেলাল হোসেন, ফার্মেসি বিভাগের শিক্ষার্থী জিএম রাইসুল হক রানা, শারীরিক শিক্ষা ও ক্রীড়া বিজ্ঞান (পিইএসএস) বিভাগের শিক্ষার্থী নৃপেন্দ্র নাথ রায়, মুশফিকুর রহমান, ফাহিম ফয়সাল লাবিব ও মো. আবু বক্কারকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে যবিপ্রবির রুলস অব ডিসিপিস্নন ফর স্টুডেন্টস অনুযায়ী আজীবন বহিষ্কার করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। এদের মধ্যে ফাহিম ফয়সাল লাবিবের ছাত্রত্ব নেই। বহিষ্কৃত সবাইকে বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরে ও আবাসিক হলে প্রবেশে বিধি-নিষেধ আরোপের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। এ ঘটনায় জড়িত সবাই ছাত্রলীগের নেতাকর্মী হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিচিত।
রিজেন্ট বোর্ডের সভায়, চলতি বছরের ৪ জুন দিবাগত রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মসিয়ূর রহমান হলের ৩০৬ নম্বর কক্ষে শারীরিক শিক্ষা ও ক্রীড়া বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী শাহরিন রহমানকে রাতভর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের ঘটনা প্রমাণিত হওয়ায় যবিপ্রবি শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি সোহেল রানা, পিইএসএস বিভাগের ছাত্রলীগকর্মী রেদওয়ান আহমেদ জিসান, মো. বিপুল শেখ, ইছাদ হোসেন, মো. আশিকুজ্জামান (লিমন) ও মো. আমিনুল ইসলাম; ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের মো. বেলাল হোসেন ও পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের মো. রায়হান রহমান রাব্বীকে যবিপ্রবির রুলস অব ডিসিপিস্নন ফর স্টুডেন্টস অনুযায়ী আজীবন বহিষ্কার করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। এর মধ্যে সোহেল রানা, ইছাদ হোসেন এবং আশিকুজ্জামানের (লিমন) ছাত্রত্ব নেই। এ ঘটনায়ও বহিষ্কৃত সবাইকে বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরে ও আবাসিক হলে প্রবেশে বিধি-নিষেধ আরোপের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। এ ঘটনার সঙ্গে জড়িতরা সবাই ছাত্রলীগের নেতাকর্মী হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিচিত।