চট্টগ্রামে সংবাদ সম্মেলনে মুক্তিযোদ্ধারা

ভারতে ট্রেনিং নিয়েও মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেননি সিরু বাঙালি

প্রকাশ | ২৭ জুন ২০২৪, ০০:০০

চট্টগ্রাম বু্যরো
জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়ে মিথ্যাচারের অভিযোগ উঠেছে বীর মুক্তিযোদ্ধা সিরু বাঙালির বিরুদ্ধে। তার বিরুদ্ধে ভারতে প্রশিক্ষণ নেওয়ার পরও মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ না করার অভিযোগ আছে। বুধবার চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবে 'বীর মুক্তিযোদ্ধা সিরু বাঙালির মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃতির প্রতিবাদে' সংবাদ সম্মেলন এমন অভিযোগ করা হয়। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান লাহোরে অনুষ্ঠিত বিরোধীদলীয় রাজনৈতিক কনভেনশনে ঐতিহাসিক ৬ দফা দাবি উত্থাপনের পর ১১ ফেব্রম্নয়ারি তার সফরসঙ্গীদের নিয়ে কুর্মিটোলা বিমানবন্দরে অবতরণ করেন। অবতরণের সময় ছিল দুপুর ১টা ১৫ মিনিট। অথচ সিরু বাঙালি তার লিখিত 'বাঙ্গাল কেন যুদ্ধে গেল' বইয়ের ১৩ পৃষ্ঠায় দাবি করেছেন, ওইদিন ফজরের নামাজের পর শেখ মুজিবুর রহমানের বাড়িতে বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে তিনি সাক্ষাৎ করেছিলেন। এই মিথ্যাচার পাগলের প্রলাপ ছাড়া আর কি হতে পারে? লিখিত বক্তব্য আরও বলা হয়, 'সিরু বাঙালি একের পর এক মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃতি করেই যাচ্ছেন। মুক্তিযুদ্ধের বিশুদ্ধ ইতিহাস সংরক্ষণের তাগিদ থেকে বাধ্য হয়ে আজকে সংবাদ সম্মেলন করতে বাধ্য হয়েছি আমরা।' চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার চৌধুরী মাহবুবুর রহমান সংবাদ সম্মেলনে বলেন, 'সিরু বাঙালি চট্টগ্রামে কোনো আলোচিত ব্যক্তি ছিলেন না। আমরা পটিয়ায় তার কোনো দিন নামও শুনিনি। বইতে লিখেছেন তিনি থাকতেন ঢাকায়। চট্টগ্রাম শহরে তাকে কেউ চিনে না। এখন সবাই তার বন্ধু। ছাবেরও তার বন্ধু, রাজ্জাক, মাহফুজও তার বন্ধু। কালুরঘাট যুদ্ধে তিনি চারটি গ্রেনেড পেলেন কোথায়? এই গ্রেনেডগুলো বিস্ফোরণ ঘটানো শেখালেন কে? তিনি গ্রেনেডগুলো বিচারপতির ওখানে মেরেছেন, এখানে মেরেছেন, বলে বেড়াচ্ছেন। সব মিথ্যা।' তিনি বলেন, 'সিরু বাঙালি মোটেই যুদ্ধ করেননি। তিনি ট্রেনিং নিয়ে এসেছেন, অনেক কিছু দেবে দেশ হয়তো। তিনি শহরে অপারেশন করেছেন বলে প্রমাণ নেই। তবে গল্প বানিয়ে বানিয়ে বই লিখেছেন। এমনভাবে গল্পগুলো বানাচ্ছেন যে, কেউ টেরই পায় না। পরে খতিয়ে দেখতে গেলে বুঝতে পারে সবাই। মুক্তিযোদ্ধারা বলছেন যে, তিনি তো কোথাও ছিলেন না। তিনি পটিয়ার মানুষ, শহরে কেন আসবেন? এখানে কীভাবে গ্রেনেড চার্জ করলেন? ক্যাপ্টেন করিমের কথা বলছেন সিরু বাঙালি। অথচ করিমকে তিনি জীবনে চোখেও দেখেননি।' সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, সিরু বাঙালি মুক্তিযোদ্ধা, লেখক, গবেষক- যে নামেই তিনি পরিচিত হোন না কেন তিনি যে মিথ্যাচার করছেন তাতে বিন্দুমাত্র সন্দেহের অবকাশ নেই। একজন মুক্তিযোদ্ধা সিরু বাঙালি তার মিথ্যাচারে তিনি লজ্জা না পেলেও আমরা লজ্জা পাই। এ লজ্জা কীভাবে ঢাকি? আমরা মনে করি, সিরু বাঙালির মিথ্যাচারে নতুন প্রজন্ম বিভ্রান্ত হবে। এর দায় অবশ্যই সিরু বাঙালিকে নিতে হবে। সংবাদ সম্মেলনে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- মো. ফেরদাউছ ইসলাম খান, এ এইচ এম নাসিরউদ্দিন চৌধুরী, আজিজুল হক, এ কে এম মতিন চৌধুরী, মো. শফি খাঁন, প্রদ্যোৎ কুমার পাল, মাহবুবুর রহমান চৌধুরী (চৌধুরী মাহবুব), মোহাম্মদ সাহাদুল হক, মোহাম্মদ জমির, মো. কামাল উদ্দিন, মুহাম্মদ ইদ্রিস আলী, ডা. মাহফুজুর রহমান, ফজলুল হক ভুঁইয়া, ফাহিম উদ্দিন, মোহাম্মদ আবুল কাসেম, মোজাফফর আহমেদ রাজু, এম এন ইসলাম, মোহাম্মদ হারিছ, মুহাম্মদ সবুর, দেওয়ান মাকসুদ আহমেদ ও এস এম নুরুল আমিন।