নারায়ণগঞ্জ জেলা পরিষদ কার্যালয়ে প্রকাশ্যে দুই প্রকৌশলীর বিরুদ্ধে ঘুষ গ্রহণের অভিযোগ উঠেছে। এতে চারদিকে আলোচনা সমালোচনার ঝড় উঠেছে। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার পর এই ঘটনার পাঁচ মিনিটের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা গেছে, নারায়ণগঞ্জ জেলা পরিষদ কার্যালয়ে প্রকাশ্যে ঘুষ লেনদেন হচ্ছে। সেখানে প্রকৌশলীর কক্ষে প্রবেশ করেন জহির নামে এক ব্যক্তি। প্রকৌশলীদের সঙ্গে কোনো একটি বিষয়ে কথা বলেন। কথার শুরুতে জহির বলেন, 'স্যার মানুষ নাই তাড়াতাড়ি কথা বলে ফেলি। আমাদের সঙ্গে লজ্জার কিছু নাই। সবকিছু কিন্তু ক্লিয়ার হয়ে গেছে। গতকাল স্যারে (কুদ্দুস সাব) আমাকে জিজ্ঞাসা করেছিল, জহির ভাই আপনার যদি কিছু বলার থাকে বলেন। অর্থাৎ আমাকে একটা সুযোগ দিয়েছে। মানে কুদ্দুস সাব। পেরেশান হইয়েন না দাদা, আপনাদের কথা আমি সব শুনব। তবে আমার একটা বিষয় কনসিডার করা যায় কি না দেখেন। সেটা হচ্ছে একের (এক লাখ) মধ্যে কাজটা শেষ করে ফেলেন। আর যদি দেড় (দেড় লাখ) দিয়ে দেই তাহলে তেমন কিছু থাকে না।'
এ সময় তাদেরকে টাকা নিয়ে কথা বলতে শোনা যায়। এর এক পর্যায়ে এক হাজার টাকার বান্ডেল বের করে প্রকৌশলীদের হাতে দেওয়া হয়। তারা টাকা গুনে নেন। তবে কত টাকা এবং কী কারণে এই টাকা গ্রহণ করেছেন সে বিষয়ে তেমন কিছু বলতে শোনা যায়নি।
একাধিক সূত্রে জানা গেছে, ঈদুল ফিতর বা ঈদুল আজহার আগে ভিডিওটি করা হয়েছে। আর প্রকৌশলীকে ঘুষ প্রদানকারী ওই ব্যক্তির নাম জহির। তিনি পেশায় একজন ঠিকাদার।
অভিযুক্ত দুই প্রকৌশলী হলেন বর্তমান উপসহকারী প্রকৌশলী কাঞ্চন কুমার পালিত ও অপরজন বদলি হওয়া সাবেক সহকারী প্রকৌশলী আব্দুল কুদ্দুস।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে জেলা পরিষদের উপসহকারী প্রকৌশলী আবু আশরাফুল হাসান বলেন, ভিডিওর বিষয়ে আমি কিছু জানি না। তবে সহকারী প্রকৌশলী আব্দুল কুদ্দুস প্রায় দুই মাস আগে বদলি হয়ে অন্যত্র চলে গেছেন। আর উপসহকারী প্রকৌশলী কাঞ্চন পালিত বাবু রূপগঞ্জ, আড়াইহাজার ও সদর উপজেলার দায়িত্বে রয়েছেন। আর জহির হচ্ছেন একজন ঠিকাদার। সে হিসেবে জহির জেলা পরিষদের আসা যাওয়া করত। এর বেশি কিছু জানা নেই।
নারায়ণগঞ্জ জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান চন্দন শীল বলেন, জহির হচ্ছে একটা টাউট-বাটপার। সে জেলা পরিষদের কিছু না। পুলিশ তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে এ বিষয়ে সব বেরিয়ে আসবে। ভাইরাল হওয়া ভিডিও দেখে এ বিষয়ে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এ বিষয়ে জানতে অভিযুক্ত উপসহকারী প্রকৌশলী কাঞ্চন পালিতের মোবাইল নম্বরে একাধিকবার কল করলেও বন্ধ ছিল।