সরকার অন্যায়ভাবে বিরোধীদল দমনে নিয়োজিত বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জয়নুল আবদিন ফারুক।
শুক্রবার বাংলাদেশের ওপর দিয়ে ভারতের রেললাইন নেওয়ার প্রস্তাবের প্রতিবাদে আয়োজিত এক সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন। জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে এ প্রতিবাদ সভার আয়োজন করে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী নাগরিক পরিষদ।
প্রতিবাদ সমাবেশে ফারুক বলেন, 'এই সরকারের সঙ্গে জনগণের সম্পর্ক নেই, জনগণ আছে তারেক রহমানের সঙ্গে। তার প্রমাণ হয়েছে ৭ জানুয়ারির নির্বাচনে। তার প্রমাণ হয়েছে চার ধাপে উপজেলা নির্বাচনে। এসব নির্বাচনে কোনো মানুষ ভোটকেন্দ্রে যায়নি। ভাইয়ে ভাইয়ে নির্বাচন দিয়ে ডামি নির্বাচনের সেই সরকারপ্রধান আজকে আবার দিলিস্ন যাচ্ছেন। তিনি কী নিয়ে আসবেন আমরা দেখব। এবার খালি হাতে আসলে কিন্তু জনগণ আপনাকে ক্ষমা করবে না। রাজনৈতিকভাবে আপনার বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলা হবে।'
প্রতিবেশী দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক নতুন করে এগিয়ে নিতে শুক্রবার দুইদিনের রাষ্ট্রীয় সফরে ভারতে গেছেন শেখ হাসিনা। যেখানে উভয় দেশের মধ্যকার দীর্ঘদিনের অমীমাংসিত বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা হতে পারে বলে জানানো হয়েছে।
ভারতের ভূমিকার সমালোচনা করে ফারুক বলেন, 'বাংলাদেশের মানুষ বলা শুরু করেছে, ভারত তুমি বন্ধু থাকো। কিন্তু বন্ধু বলে আজকে আমাদের সব কিছু কেড়ে নিয়ে যাবে, আমার ন্যায্য পানির হিস্যা থেকে আমাদের বঞ্চিত করবে, তা হয় না। জানিয়ে দিতে চাই, বাংলাদেশের নদ-নদীর পানির ন্যায্য হিস্যা আপনাকে দিতেই হবে।'
তিনি আরও বলেন, 'আপনারা বাংলাদেশের ওপর দিয়ে রেললাইন নির্মাণ করবেন আর সেই রেলে ক্যানসারের নমুনা পাওয়া যাবে- এমন সব পণ্যসামগ্রী অন্য প্রান্তে নিয়ে যাবেন, তা কখনো বাংলাদেশের মানুষ গ্রহণ করবে না। আমরা দ্ব্যর্থহীন কণ্ঠে বলতে চাই, আমরা দিলিস্নর আগ্রাসন মেনে নেব না, বাংলাদেশের মানুষ তা কখনো জীবন থাকতে করবে না।'
ফারুক আরও বলেন, 'আমরা বলতে চাই, তারেক রহমানকে মিথ্যা মামলায় সাজা দিয়ে দেশের বাইরে রাখতে পারেন, খালেদা জিয়াকে জেলে রাখতে পারেন কিন্তু কিছুসংখ্যক আমলা, কিছু পুলিশ কর্মকর্তা, যারা বাংলাদেশে আজকে অন্যায়ভাবে বিরোধীদলকে দমন করার কাজে নিয়োজিত। তার প্রমাণ আজিজ, বেনজীর, আসাদুজ্জামান মিয়া। এই আজিজ-বেনজীর-আসাদুজ্জামান মিয়া আপনারা এখন কোথায়?'
কাউকে খুশি করার জন্য মিঠামইন-অষ্টগ্রাম সড়ক নির্মাণ করে বাংলাদেশের অগণিত মানুষকে আজকে পানিতে ডুবিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে মন্তব্য করেন ফারুক।
তিনি বলেন, 'পুরো সিলেটে বন্যায় লাখ লাখ মানুষ চরম দুর্ভোগে দিন কাটাচ্ছে। এক ব্যক্তিকে খুশি করার জন্য এই সড়ক বা বাঁধ সিলেটের মানুষের জন্য উপহাস হয়ে পড়েছে।'
জাতীয়তাবাদী নাগরিক পরিষদের সভাপতি মাইনুল ইসলাম বাদল তালুকদারের সভাপতিত্বে প্রতিবাদ সমাবেশে মুসলিম লীগের সভাপতি শেখ জুলফিকার বুলবুল চৌধুরী, বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব আবদুস সালাম আজাদ, কেন্দ্রীয় নেতা আবু নাসের মুহাম্মদ রহমাতুলস্নাহ, এইচএম সাইফ আলী খান, আ ক ম মোজাম্মেল, শাহ নেছারুল হক, তাঁতি দলের কাজী মনিরুজ্জামান মুনির, কৃষক দলের ভিপি ইব্রাহিম, উলামা দলের কাজী আলমগীর হোসেনসহ অনেকে বক্তব্য রাখেন।