কিশোরগঞ্জের ভৈরবে সাত দিনের নবজাতককে ৯ তলা ভবন থেকে নীচে ফেলে হত্যার অভিযোগ উঠেছে মা তৃষা আক্তারের (২৪) বিরুদ্ধে। খবর পেয়ে পুলিশ নিহত শিশুর লাশ উদ্ধার করেছে।
মঙ্গলবার ভোর রাতে শহরের নিউটাউন এলাকায় ফুল মিয়া সিটির ৯ তলা ভবনে এ ঘটনা ঘটে।
এদিকে, নবজাতককে হত্যার ঘটনায় চিকিৎসক ওসমান গণি বাদী হয়ে স্ত্রী তৃষাকে একমাত্র আসামি করে ভৈরব থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। এ ঘটনায় পুলিশ তৃষা আক্তারকে গ্রেপ্তার করেছে। নিহত শিশুর নাম তাসনিদ এহসান।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, শিশুটির বাবা উসমান গণি ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সার্জারি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক। তার বাড়ি ভৈরব পৌর শহরের ভৈরবপুর উত্তরপাড়ায়। তিনি দুই বিয়ে করেছেন। তার প্রথম স্ত্রী একজন চিকিৎসক, তিনি ঢাকায় থাকেন। সাড়ে তিন বছর আগে উসমান গণি তৃষা বেগমকে দ্বিতীয় বিয়ে করেন। তৃষার বাবার বাড়ি কুলিয়ারচরের ছয়সূতী গ্রামে। সাত দিন আগে তৃষা একটি ছেলেসন্তানের জন্ম দেন। গণি-তৃষা দম্পতির দেড় বছর বয়সি আরও একটি পুত্র সন্তান রয়েছে। সন্তানদের নিয়ে তৃষা ভৈরব পৌর শহরের নিউটাউন এলাকার একটি ফ্লাটে থাকেন। তার সঙ্গে সব সময় থাকেন দুইজন গৃহকর্মী ও তৃষার এক বান্ধবী। উসমান গণি সপ্তাহে একদিন শুক্রবার ভৈরবের একটি বেসরকারি হাসপাতালে রোগী দেখেন। তিনি এবার ঈদ করেছেন দ্বিতীয় স্ত্রীর সঙ্গে।
এ বিষয়ে নিহত শিশুর স্বজনরা জানান, বাচ্চাকে খাইয়ে ঘুমিয়ে ছিল মা তৃষা। বাবা ঘুমিয়ে ছিলেন আরেক রুমে। ঘরে শিলা ও মিম নামে দুইজন কাজের লোকও ছিলেন। এ ছাড়াও সুমাইয়া নামের একজন নারীও ছিলেন। হঠাৎ মঙ্গলবার রাত তিনটার দিকে তৃষা বিছানা থেকে উঠে বাথরুমে গেলে ১০ মিনিটের মধ্যে বাচ্চাটি নিখোঁজ হয়। সবাই খোঁজাখুঁজি করে সকাল সাড়ে আটটার দিকে কাজের মহিলার মাধ্যমে জানতে পারে শিশুটি বাড়ির পাশে একটি ঝোপে মৃত অবস্থায় পড়ে আছে। পরে পুলিশকে খবর দিলে পুলিশ এসে মরদেহ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়।
\হভৈরব থানা অফিসার ইনচার্জ মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, মা নিজ হাতেই নবজাতক সন্তানকে হত্যা করেছেন বলে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেছেন। নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে নবজাতকের মা তৃষা আক্তার ৯ তলার বেলকনির জানালা দিয়ে শিশুটিকে ছুড়ে ফেলে হত্যা করেন। স্ত্রী তৃষাকেই আসামি করে মামলা করেছে নবজাতকের বাবা চিকিৎসক উসমান গনি। বিল্ডিং থেকে পড়েই নবজাতকটির মৃতু্য হয়েছে। শিশুটির মাথায় ও শরীরে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। এ ঘটনায় মা তৃষা আক্তারকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ময়নাতদন্তের জন্য শিশুটির মরদেহ কিশোরগঞ্জ মর্গে পাঠানোর হয়েছে।