বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব লঙ্ঘনের প্রশ্নে তোপ দেগেছেন সড়ক পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেছেন, মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব লঙ্ঘন করলে আমরা আঙুল চুষবো না। অর্থাৎ ওপার থেকে কোনো আক্রমণ এলে বাংলাদেশ ছেড়ে কথা বলবে না।
বুধবার সকালে সচিবালয়ে সড়ক পরিবহণ ও সেতু মন্ত্রণালয়ের সম্মেলনকক্ষে ঈদুল আজহা পরবর্তী কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন মন্ত্রী। পরে তিনি সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন। সেখানেই এমন তোপ দাগেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক।
বিএনপি অভিযোগ করেছে সেন্ট মার্টিন ইসু্যতে সরকার নতজানু পররাষ্ট্রনীতি গ্রহণ করেছে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, বিরোধী দলের একটা ভাষা আছে, সরকারি দলের সিদ্ধান্তকে তারা নতজানু আখ্যায়িত করে। কিন্তু কীভাবে নতজানু, সেটা একটু ব্যাখ্যা করে দিক না। সেন্ট মার্টিনে যে গুলিটা এসেছে, সেটা মিয়ানমার সরকার করেনি। এটা আরকান আর্মি নামে যে বিদ্রোহীরা আছে তাদের গুলি। যেকোনো উস্কানির মুখে বাংলাদেশ যুদ্ধে না জড়িয়ে আলাপ-আলোচনায় সমাধানে বিশ্বাসী। সেখানে যে জাহাজের কথা বলা হয়, সে জাহাজ সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। মিয়ানমার উস্কানি দিলে আমরা তাদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করব। একটা সমাধান বের করব। যুদ্ধে জড়াব না।
ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর যদি যুদ্ধে জড়াতে চান, তাহলে উস্কানির ফাঁদে আমরা পড়তে পারি? আমরা সরকারে আছি, আমাদের দায়িত্ব আছে, কর্তব্য আছে। সার্বভৌমত্ব চলে গেলে আমাদেরই ব্যথা লাগবে বেশি। কারণ এ জাতির মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধিকার লড়াইয়ে আমরা ওতপ্রোতভাবে জড়িত।
ফখরুল তখন (মুক্তিযুদ্ধের সময়) কী করেছেন, কোন সেক্টরে যুদ্ধ করেছেন, তা জানি না। এসব কথা বলে লাভ নেই। সার্বভৌমত্ব ঠিক আছে। সার্বভৌমত্ব লঙ্ঘিত হলে, আলাপ-আলোচনার সময় পেরিয়ে যদি যায়, যদি সত্যিই তারা আক্রমণে আসে, তখন কী আমরা বসে থাকব, আমরা বসে বসে আঙুল চুষবো? আমাদেরও পাল্টা জবাব দিতে হবে।
তিনি আরও বলেন, আমরা এখনো কোনো আক্রমণ দেখিনি। তাদের (মিয়ানমার) অভ্যন্তরীণ ৫৪টি গোষ্ঠী আছে। ওদের অভ্যন্তরীণ অনেক সমস্যা। আমরা সীমান্তে আছি, গুলি এসে লাগতে পারে, গুলির আওয়াজ আসতে পারে, এটা সার্বভৌমত্বের লঙ্ঘন। তাদের নৃতাত্ত্বিক বিদ্রোহীরা আছে। তাদের থেকেই এসব ঘটনা ঘটছে। সেটার জন্য কেন মিয়ানমার সরকারকে দায় দেব? যতদিন সম্ভব শেষ পর্যন্ত আমরা আলাপ-আলোচনা চালিয়ে যেতে চেষ্টা করব।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, মূল্যস্ফীতি ব্যাপকভাবে বাড়ার কারণে মানুষ স্বস্তিতে ঈদ করতে পারেনি। এ বিষয়ে মতামত জানতে চাইলে ওবায়দুল কাদের বলেন, আমি মির্জা ফখরুল সাহেবকে বলব, কোরবানির ঈদে গত বছরের থেকে এ বছর ৩ লাখ গরু বেশি কোরবানি হয়েছে। কিছু কিছু জায়গায় ছোটখাটো যানজট হয়েছে। সেটা বেশি সময়ের জন্য নয়। তারপরও এবারের ঈদযাত্রায় মানুষের মধ্যে উলস্নাস কাজ করেছে। অনেকেই ঈদযাত্রায় শামিল হয়েছেন।
এবার পদ্মা সেতুতে একদিনে টোল আদায় হয়েছে ৫ কোটি টাকা। বঙ্গবন্ধু সেতুতে একদিনে টোল আদায় হয়েছে ৪ কোটি টাকা। তাহলে অসুবিধা কোথায়। কোনো হিসেবেই তো ফখরুল সাহেবের বক্তব্য মিলছে না। বাস্তবে যা, তার সঙ্গে ফখরুলের বক্তব্য মিলছে না। এটা বিরোধিতার জন্য বিরোধিতা, সমালোচনার জন্য সমালোচনা।