পশু কিনতে গিয়ে হয়রানি হলে ৯৯৯-এ জানান :আইজিপি

প্রকাশ | ১৪ জুন ২০২৪, ০০:০০

যাযাদি রিপোর্ট
পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুলস্নাহ আল-মামুন বলেছেন, কোরবানির পশু কিনতে গিয়ে কেউ যদি হয়রানির শিকার হন তাহলে পুলিশকে জানান। প্রয়োজনে জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯-এ কল করে জানান, পুলিশ তড়িৎ ব্যবস্থা নেবে। বৃহস্পতিবার দুপুরে আসন্ন পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে রাজধানীর গাবতলী বাস টার্মিনাল ও গাবতলীর কোরবানির পশুর হাট পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়ের সময় তিনি এ কথা বলেন। হাটে অতিরিক্ত হাসিল আদায়ের অভিযোগের প্রমাণ পেলে আইন অনুযায়ী যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে, এমন হুঁশিয়ারি দিয়ে আইজিপি বলেন, অজ্ঞানপার্টি, মলমপার্টি বা অতিরিক্ত হাসিল আদায়ের কোনো বিষয়ে অভিযোগ থাকলে পুলিশকে জানান। পুলিশ ব্যবস্থা নেবে। পশুর হাটে পরিবহণ সেক্টরে কোনো ধরনের চাঁদাবাজকে ছাড় দেওয়া হবে না। তিনি বলেন, নৌপথে ও সড়কপথে কোরবানির পশুবাহী গাড়ির সামনে ব্যানারে লেখা থাকতে হবে কোন হাটে যাবে। তাহলে পুলিশের পক্ষ থেকে ব্যবস্থা নিতে সুবিধা হবে। কেউ সমস্যায় পড়লে আর পুলিশকে দ্রম্নত জানালে আমরাও দ্রম্নত সহায়তা করতে পারব। আইজিপি বলেন, নির্দিষ্ট অভিযোগ ছাড়া মহাসড়কে কোনো গরুর গাড়ি কেউ থামাতে পারবে না। এ ব্যাপারে হাইওয়ে পুলিশসহ পুলিশের সব ইউনিটকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে; তারা সজাগ রয়েছে। ঈদযাত্রা নির্বিঘ্ন করার জন্য এবং কোরবানির পশুর হাটে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আমরা আন্তঃমন্ত্রণালয়সহ বিভিন্ন বিভাগে মিটিং করেছি। প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পুলিশ, পরিবহণ, হাট মালিক কর্তৃপক্ষ, ইজারাদার ও স্থানীয় নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেছি। সবাই মিলে আমরা কাজ করছি। আশা করছি এই ঈদে নির্বিঘ্ন হবে সব কিছু। কোরবানির ঈদকে ঘিরে নগদ টাকার চেয়ে ব্যাংকে লেনদেন করার পরামর্শ দেন আইজিপি। তিনি বলেন, বড় অংকের আর্থিক লেনদেন করলে বা পরিবহণ যদি করতে হয়, তাহলে ব্যাংকে যান, পুলিশের সহযোগিতা নিন। অনেক সময় অনেকে সমস্যায় পড়েন। অপরাধীরা অপরাধ করার সুযোগ পায়। এটা করবেন না, পুলিশের সহযোগিতা নিন। পুলিশ সেবা দিতে প্রস্তুত রয়েছে। হয়তো ১০-২০ মিনিট দেরি হতে পারে। কিন্তু এর জন্য আপনি ঝুঁকি নিতে যাবেন কেন? জাল টাকা সম্পর্কে সবাইকে সতর্ক ও সজাগ থাকতে অনুরোধ জানিয়ে পুলিশপ্রধান বলেন, জাল টাকার লেনদেন যাতে না হয় সেজন্য প্রত্যেকটি মার্কেটে জাল টাকা শনাক্তকরণ মেশিন স্থাপন করেছি। কেউ যদি জানতে পারেন বুঝতে পারেন, পুলিশকে সহযোগিতা করুন, পুলিশকে জানান। পুলিশ ব্যবস্থা নেবে। ট্রাক ও ট্রলারে অতিরিক্ত পশু পরিবহণ না করার অনুরোধ জানিয়ে আইজিপি বলেন, অতিরিক্ত লোডের কারণে দুর্ঘটনার আশঙ্কা তৈরি হয়। তাতে পশু, মানুষ উভয়ে মারা যেতে পারে। তাই নিজেদের নিরাপত্তার বিষয়টি আগে খেয়াল রাখুন। ঈদযাত্রায় কোনোভাবেই মহাসড়কে ফিটনেসবিহীন গাড়ি চলাচল করবে না উলেস্নখ করে আইজিপি আবদুলস্নাহ আল-মামুন বলেন, মহাসড়কে চলবে না নছিমন, করিমন বা ভটভটি। যারা চালানোর চেষ্টা করবে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। নিয়ন্ত্রণহীন গতিতে গাড়ি না চালানোর জন্য অনুরোধ জানান তিনি। আইজিপি বলেন, বরাবরের মতো এবারও আমরা ঈদ উপলক্ষে পশুর হাট, রেল, সড়ক ও নৌপথে ঈদযাত্রার নিরাপত্তা নিশ্চিতে সবকিছু মিলিয়ে ব্যবস্থা নিয়েছি। কোরবানির ঈদের চ্যালেঞ্জ উলেস্নখ করে আইজিপি বলেন, রোজার ঈদে একমুখী চাপ থাকে। কিন্তু কোরবানির ঈদে একদিকে ঘরমুখো মানুষের চাপ, অন্যদিকে পশুবাহী ট্রাক-পিকআপের চাপ। অর্থাৎ মানুষ বাড়ি যায় অন্যদিকে ঢাকায় গরু আসে। সড়কে দ্বিমুখী চাপ মোকাবিলা করতে হয়। পুরো বিষয় বিবেচনায় রেখে ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক ও সঠিক রাখার জন্য পুলিশের পক্ষ থেকে পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, কোরবানির পশুবাহী গাড়ি যাতে যথাযথভাবে নিরাপদে চলাচল করতে পারে, ঢাকাসহ সারাদেশে সে বিষয়ে ব্যবস্থা করা হয়েছে। সড়কে হাইওয়ে পুলিশ ব্যাপক নজরদারি করছে। বুধবার রাত থেকে মহাসড়কে চাপ দেখছে পুলিশ উলেস্নখ করে আইজিপি বলেন, ঘরমুখো মানুষের আরও চাপ আজ বিকাল থেকে শুরু হবে। ঈদের দু-একদিন আগ পর্যন্ত এই চাপ অব্যাহত থাকবে।