আসন্ন আওয়ামী লীগের পস্নাটিনাম জয়ন্তীর অনুষ্ঠানে পক্ষ-প্রতিপক্ষ না দেখে সব নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলকে আমন্ত্রণ জানানো হবে বলে জানিয়েছেন দলের সাধারণ সম্পাদক সড়ক পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
সোমবার দুপুরে রাজধানীর ধানমন্ডিতে অবস্থিত আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে দলটির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর বিষয়ে নেতাকর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময় শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে তিনি এ কথা জানান।
এ সময় আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য এবং বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী জাহাঙ্গীর কবির নানক, ঢাকা-৮ আসনের সংসদ সদস্য আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, ঢাকা-৬ আসনের সংসদ সদস্য সাঈদ খোকন, ঢাকা-১০ আসনের সংসদ সদস্য ফেরদৌস আহমেদ, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম, যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হোসেন খান নিখিলসহ অন্যান্য নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, আমাদের আজকের (সোমবার) মিটিং দলের পস্নাটিনাম জয়ন্তী নিয়ে। এ উপলক্ষেই আমরা এ সভা ডেকেছি। সবাই এসে আলাপ-আলোচনা করেছেন। তবে আমরা সাজসজ্জা, আলোকসজ্জা করব না। আমাদের নেত্রীর
নির্দেশ যে, এ কঠিন সময় আলোকসজ্জা বিষয়টা বাদ দেওয়ার জন্য।
তিনি বলেন, আমরা সারাদেশে ইউনিয়ন-ওয়ার্ড পর্যন্ত ৭৫ বছরের উৎসব উদযাপন করব। এটিকে সর্বাঙ্গীণ সফল করার জন্য আমরা আমাদের এমপি সাহেব ও মেয়র সাহেবদের ডেকেছি। তারাও কথা বলেছেন। একটি সর্বাঙ্গীণ সুন্দর অনুষ্ঠানমালা দেশের জনগণকে দিতে আমরা প্রস্তুত হচ্ছি।
তিনি আরও বলেন, প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আমরা ২১ তারিখ বিকাল ৩টায় ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন থেকে বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউ পর্যন্তর্ যালি করব। আর ২৩ তারিখ সকালে বঙ্গবন্ধু ভবনের সামনে পস্নাটিনাম জয়ন্তীর শুভ উদ্বোধন করবেন আমাদের সভাপতি প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনা। এরপর বিকাল ৩টায় সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আলোচনা সভা হবে। সেই আলোচনার শুরুতে ছোট একটি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হবে। এছাড়া বিচ্ছিন্নভাবে বিভিন্ন অনুষ্ঠান হবে। ধানমন্ডির এমপি বলেছেন রবীন্দ্র সরোবরে একটি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান করবেন। উত্তরের মেয়র সাহেব বলেছেন, তিনিও একটি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করবেন হাতিরঝিলে। তার পরে পুরান ঢাকায় নৌকাবাইচ হবে। আওয়ামী লীগের জন্মস্থান রোজ গার্ডেনে আমরা একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করব। এছাড়া ঢাকার সড়কে একটি সাইকেলর্ যালি হবে। ওই সময় কোরবানির ঈদ থাকলেও আমাদের আয়োজনে কোনো ত্রম্নটি থাকবে না। আমাদের নেতাকর্মীরা সজাগ। অনেকে হয়তো বাড়ি যাবেন না। আয়োজনে অংশগ্রহণ করবেন।
দেশের বাইরে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর কোনো অনুষ্ঠান করা হবে কিনা জানতে চাইলে ওবায়দুল কাদের বলেন, এখন সময় আমাদের হাতে খুব কম। তবে আমরা দলের পক্ষ থেকে বিভিন্ন দূতাবাসে নিযুক্ত বিদেশি কূটনীতিকদের আমন্ত্রণ জানাব। বিভিন্ন রাজনৈতিক দলকেও আমরা আমন্ত্রণ জানাব। এটা আমাদের ঐতিহ্য। এখানে কে আমাদের প্রতিপক্ষ-পক্ষ সেটা আমরা দেখব না। রাজনৈতিক হিসেবে নিবন্ধিত সব দলকে আমরা আমন্ত্রণ জানাব।
ভারতের প্রধানমন্ত্রীর শপথ অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী গেছেন, বিভিন্ন রাষ্ট্রপ্রধানদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন, এ সফরে নতুন কিছু আমরা পাব কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ভারতের প্রধানমন্ত্রী রোববার রাতে শপথ গ্রহণ করেছেন। এত কম সময়ের মধ্যে বড় কিছুর আশা, সময় তো লাগে। কথাবার্তা বলতে হয়। তারপরও তাদের বৈঠক আছে, সেই বৈঠক থেকে কোনো গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত এলে আপনারা (সাংবাদিক) জানতে পারবেন। আর প্রধানমন্ত্রী দেশে ফিরলে তিনি নিজেও সাংবাদিকদের সঙ্গে মিলিত হবেন। সেখানে তিনি ভারত সফর সম্পর্কে বিস্তারিত বলবেন।
এ সময় ওবায়দুল কাদের দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, রোববার আমাদের মূল আলোচনা ছিল আওয়ামী লীগের ৭৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী, পস্নাটিনাম জয়ন্তী। এটি নিয়ে একটি শব্দও নাই পত্রিকায়। আপনারা (সাংবাদিক) চলে গেলেন আজিজ আর বেনজীরের বিষয়ে। এটা হওয়া উচিত নয়। আমরা আমাদের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীকে ফোকাসে রেখে কথা বলেছি। আপনারা (সাংবাদিক) ওখানে আজিজ আর বেনজীরকে বার বার ঢুকিয়ে দেন। এটা তো প্রথম না। আমি কিছু বললেই ওই দুইজন আসে। তারেক রহমানের বিরুদ্ধে কিছু বললে সেটা আসে না। তারেক রহমানের দুর্নীতি নিয়ে কথা বলি, সেটা পত্রিকার পাতায় পরদিন পাই না। খুব দুর্ভাগ্যজনক।
তিনি আরও বলেন, আমাদের সাংবাদিকতায় অনেক প্রতিভাবান ছেলে-মেয়েরা কাজ করেন। পত্রিকা-মিডিয়ার কর্তৃত্ব তাদের হাতে। তারপরও যা দেখবে, যা শুনবে সেটাই তো প্রচারিত হবে। এটাই তো মিডিয়ার ধর্ম, কর্তব্য। এখন আমার মূল বিষয় থেকে আপনি (সাংবাদিক) এক হাজার মাইল দূরে চলে যান। এটা তো ঠিক নয়।
\হ