আগামী পহেলা জুলাই থেকে দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়, স্ব-শাসিত, স্বায়ত্তশাসিত, রাষ্ট্রায়ত্ত, সংবিধিবদ্ধ বা সমজাতীয় সংস্থা বা অধিনস্ত প্রতিষ্ঠানগুলো পেনশন স্কিম 'প্রত্যয়' এর অন্তর্ভুক্ত হবে। ফলে সরকারি অন্যান্য চাকরিজীবী এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের মধ্যে অর্থনৈতিক ও সামাজিক বৈষম্য তৈরি হবে। এটি বাস্তবায়িত হলে মেধাবী শিক্ষার্থীরা আগামীদিনে শিক্ষকতার মতো মহান পেশায় আগ্রহ হারিয়ে ফেলবে। এজন্য প্রত্যয় স্কিম প্রত্যাহারের
দাবিতে বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের সঙ্গে একাত্মতায় বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (বাকৃবি) শিক্ষক সমিতি আগামী ২৫ থেকে ২৭ জুন অর্ধদিবস ও ৩০ জুন পূর্ণদিবস কর্মবিরতি পালন করবে। এরপরও দাবি আদায় না হলে পহেলা জুলাই থেকে দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত সর্বাত্মক কর্মবিরতি পালিত হবে।
এদিকে আগামী ২০ জুলাই কৃষি গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা হওয়ার কথা রয়েছে। কিন্তু দাবি না মানলে এবং আন্দোলন চলমান থাকলে না হওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হবে এ বছরের কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা।
সর্বজনীন পেনশন সংক্রান্ত বৈষম্যমূলক প্রজ্ঞাপন প্রত্যাহার, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সুপারগ্রেড কার্যকর এবং স্বতন্ত্র বেতন স্কেল প্রবর্তনের দাবিতে চলমান আন্দোলন প্রসঙ্গে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠকালে এসব কথা বলেন বাকৃবি শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক (ভারপ্রাপ্ত) অধ্যাপক ড. তানভীর রহমান।
সোমবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক কমপেস্নক্সে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে বাকৃবি শিক্ষক সমিতি। এ সময় বাকৃবি শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. রফিকুল ইসলাম সরদারসহ শিক্ষক সমিতির অন্যান্য নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনে ড. তানভীর রহমান আরও বলেন, এই প্রজ্ঞাপন বাস্তবায়িত হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা কার্যক্রম পিছিয়ে পড়বে এবং দক্ষ মানবসম্পদ তৈরির ক্ষেত্র সংকুচিত হবে। এটি আগামীদিনের তরুণ সমাজের স্বার্থরক্ষা তথা উচ্চশিক্ষা ব্যবস্থা ধ্বংস ও জাতিকে মেধাশূন্য করার অপচেষ্টা। এটিকে আমাদের শিক্ষক সমাজ ও সরকারের মুখোমুখি দাঁড় করানোর চক্রান্ত বলে দাবি করেন তিনি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার স্বার্থে অনতিবিলম্ব এই বৈষম্যমূলক প্রজ্ঞাপনের দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, বাকৃবি শিক্ষক সমিতি এককভাবে ও বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের সাথে প্রত্যয় স্কিম বাতিলের দাবিতে আন্দোলন করছে। গত মার্চ মাস থেকে বিভিন্ন সময় বিবৃতি প্রদান, মানববন্ধন, গণস্বাক্ষর সংগ্রহ, কালোব্যাজ ধারণ, মৌন মিছিল, প্রতিবাদ সভা ও অর্ধদিবস কর্মবিরতি পালন করে আসছে। দাবি আদায়ে সরকারের পক্ষ থেকে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ না করা হলে পহেলা জুলাই থেকে সর্বাত্মক কর্মবিরতি পালন করা হবে বলে জানান তিনি। এ সময় বন্ধ থাকবে সব ক্লাস ও পরীক্ষা।
সংবাদ সম্মেলনে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের জন্য সুপার গ্রেড কার্যকর ও স্বতন্ত্র বেতন স্কেল প্রবর্তনের দাবিও জানানো হয়।
এ সময় বাকৃবি শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. রফিকুল ইসলাম সরদার বলেন, 'আমরা কর্মবিরতির মধ্যেও বিভিন্ন পর্যায়ের ফাইনাল পরীক্ষা ও অনলাইন ক্লাস চলমান রেখেছি। আমরা কখনোই আমাদের আন্দোলনের জন্য শিক্ষার্থীদের ক্ষতিগ্রস্ত করতে চাই না। সাময়িক এই ক্ষতি পুষিয়ে নেওয়া যাবে বলে আমরা আশা করি।'