শনিবার, ০২ নভেম্বর ২০২৪, ১৬ কার্তিক ১৪৩১
আশা মির্জা ফখরুলের

ভারতের নতুন সরকার বাংলাদেশের জনগণের প্রত্যাশাকে মর্যাদা দেবে

যাযাদি রিপোর্ট
  ১১ জুন ২০২৪, ০০:০০
সোমবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর -যাযাদি

ভারতের নতুন সরকার বাংলাদেশের জনগণের প্রত্যাশাকে মর্যাদা দেবে- এমন আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

সোমবার দুপুরে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের ৪৩তম মৃতু্যবার্ষিকী উপলক্ষে জাতীয়তাবাদী কৃষক দলের উদ্যোগে এক আলোচনা সভায় তিনি এই আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বাধীন বিজেপির তৃতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় আসীন হওয়া প্রসঙ্গে বিএনপি মহাসচিব বলেন, 'ভারত নিঃসন্দেহে অনেক প্রভাবশালী প্রতিবেশী দেশ। তাদের দেশে যেভাবে জনগণ তাদের প্রতিনিধি নির্বাচন করতে পারে, এখনো তাদের নির্বাচন কমিশন যেভাবে স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারে, তাদের বিচার বিভাগ যেভাবে কাজ করতে পারে। বাংলাদেশের জনগণও এ দেশে গণতন্ত্রকে সেভাবেই প্রতিষ্ঠিত করতে চায়। ভারতের নতুন সরকার বাংলাদেশের জনগণের সেই প্রত্যাশাকে মর্যাদা দেবে এবং সেভাবেই তারা

বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক গড়বে।'

আওয়ামী লীগের সমালোচনা করে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, এটা (আওয়ামী লীগ) আজিজ-বেনজীরের আওয়ামী লীগ। সেই আওয়ামী লীগ এখন নেই যে স্বাধীনতার জন্য সংগ্রাম করেছিল, সেই আওয়ামী লীগ নেই যারা বিএনপির সঙ্গে স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে সংগ্রাম-লড়াই করেছিল। আওয়ামী লীগ যখনই ক্ষমতায় আসে তখনই তাদের কেমিস্ট্রিতে পরিবর্তন শুরু হয়। সেই পরিবর্তনটা হচ্ছে- সর্বগ্রাসী হয়ে যাওয়া শুরু করে। শেখ মুজিবুর রহমান নিজেই বলেছিলেন, 'সবাই পায় সোনার খনি, আমি পাই চোরের খনি।' তাদের চোরের খনি সব দিকে।

তিনি বলেন, তারা (সরকার) পরিকল্পিতভাবে সচেতনভাবে বাংলাদেশকে একটা নতজানু ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করতে চায়। সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতা শেষ পর্যায় গিয়ে পৌঁছেছে। এখন আবার লুটপাটের বাজেট দিয়েছে সরকার। দেশের কোথাও বিচার নাই, কোথাও সাধারণ ব্যবসায়ীদের কোনো ব্যবসা নাই। টাকা দিতে হবে, ঘুষ ছাড়া কেউ কথা বলে না। শিক্ষাব্যবস্থা শেষ করেছে। সবচেয়ে বড় সংকট হচ্ছে, গণতান্ত্রিক অধিকার, প্রতিনিধি নির্বাচনের অধিকার, ভোটের অধিকার তারা কেড়ে নিয়েছে। আজকে গোটা পরিবার, দল এবং ব্যক্তিকে নিয়ে সে একটা পুরোপুরি ফ্যাসিবাদ কায়েম করেছে।

মির্জা ফখরুল বলেন, যেমন করে হোক এই দানবকে সরিয়ে ফেলতে হবে। এর পথ একটাই- জনগণকে সংগঠিত করে আন্দোলন আরও তীব্র করতে হবে এবং সেই আন্দোলনের মধ্য দিয়ে তাদের পরাজিত করতে হবে।

জলাবায়ু তহবিল খেয়ে ফেলার অভিযোগ করে মির্জা ফখরুল বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনে ভয়াবহ অবস্থা চলছে। এটাকে প্রতিরোধ করার জন্য আন্তর্জাতিকভাবে কিছু তহবিলও বাংলাদেশকে দেওয়া হয়েছিল। সেটা তারা (সরকার) খেয়ে ফেলেছে। তাদের তো খিদার শেষ নেই। সর্বগ্রাসী ক্ষুধা। তারা এখন সব কিছু খেয়ে ফেলছে।

কৃষকদলের সভাপতি হাসান জাফির তুহিনের সভাপতিত্বে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু, কৃষক দলের সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম বাবুল, সহ-সভাপতি নাসির হায়দার প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।

জিয়া মঞ্চের কর্মসূচি

এদিকে বিকালে দলের প্রতিষ্ঠাতার শাহাদতবার্ষিকী উপলক্ষে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপি কার্যালয়ের কনফারেন্স হলে জিয়া মঞ্চের উদ্যোগে দোয়া এবং গুম-খুনির শিকার পরিবারে সেলাই মেশিন বিতরণ করেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আহমেদ। এ সময় তিনি বলেন, যখনই জনগণ নির্যাতিত হয়, নিষ্পেষিত হয়, তখনই বিএনপি জনগণের পাশে দাঁড়ায়। এ দেশে জিয়াউর রহমান যেভাবে একদলীয় শাসন থেকে বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রবর্তন করেছিলেন, তেমনি আন্দোলন-সংগ্রামের মাধ্যমে দেশকে স্বৈরাচারমুক্ত করেছিলেন। বিএনপির জন্মই হয়েছে নিপীড়িত নির্যাতিত মানুষের পাশে দাঁড়ানোর জন্য।

ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক ও জিয়া মঞ্চ কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি আব্দুস সালামের সভাপতিত্বে, সাধারণ সম্পাদক মো. ফয়েজ উলস্নাহ ইকবালের সঞ্চালনায় সভায় উপস্থিত ছিলেন- বিএনপির ঢাকা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম আজাদ, স্বেচ্ছাসেবক-বিষয়ক সম্পাদক মীর সরাফত আলী সপু, ধর্ম-বিষয়ক সম্পাদক রফিকুল ইসলাম জামাল, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক সেলিমুজ্জামান সেলিম, জিয়া মঞ্চ কেন্দ্রীয় কমিটির সিনিয়র সহ-সভাপতি আবু তালেব প্রমুখ।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে