তিন বছরের জন্য আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) পরিচালনা পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হয়েছে বাংলাদেশ।
এই অঞ্চলের সাতটি দেশের জন্য নির্ধারিত আসন থেকে বাংলাদেশের পাশাপাশি ইরান ও পাকিস্তানের নির্বাচন করার কথা ছিল। কিন্তু নির্বাচনের কয়েক মাস আগে থেকেই জেনেভায় বাংলাদেশ মিশন ভোটাভুটিতে না গিয়ে নির্বাচিত হওয়ার উদ্যোগ নেয়। শেষ পর্যন্ত এই উপ-অঞ্চলের দেশগুলো আলোচনার মাধ্যমে সর্বসম্মতভাবে বাংলাদেশকে একক প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করা হয়। ফলে দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়ার জন্য আইএলওর পরিচালনা পরিষদের নির্ধারিত আসনটিতে বাংলাদেশ বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়।
শুক্রবার জেনেভায় ১১২তম আন্তর্জাতিক শ্রম সম্মেলনে আইএলওর পরিচালনা পরিষদের এ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। শেষবার ২০০৮-২০১১ সালে
আইএলওর পরিচালনা পরিষদের সদস্য ছিল বাংলাদেশ।
প্রসঙ্গত আইএলওর নীতিনির্ধারণী ফোরাম পরিচালনা পরিষদের সদস্য সংখ্যা ২৮। এর মধ্যে উচ্চমানের শিল্পে গুরুত্বপূর্ণ ১০টি দেশের জন্য ১০টি সদস্যপদ সংরক্ষিত। এর বাইরে অন্য ১৮টি সদস্যপদের জন্য প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে ১৭৭টি দেশ। বাংলাদেশ নির্বাচিত হয়েছে দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়া থেকে, যেখানে সাতটি দেশ থেকে মাত্র একটি দেশ সদস্যপদে নির্বাচিত হয়ে থাকে।
আইএলওর ৫৬ সদস্যবিশিষ্ট পরিচালনা পরিষদে ২৮টি পদে সদস্যদেশ, ১৪টি পদে শ্রমিক প্রতিনিধি, অন্য ১৪টি মালিকপক্ষের প্রতিনিধিরা থাকেন। এর বাইরে ৫৬টি উপসদস্যের পদ রয়েছে। ওই ৫৬ উপসদস্য মতামত দিতে পারলেও ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারে না।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা বলছেন, বাংলাদেশের বিরুদ্ধে আইএলওর ২৬ ধারা অনুযায়ী, মামলা থাকায় পরিচালনা পরিষদের সদস্য হওয়াটা গুরুত্বপূর্ণ। বাংলাদেশ চাইছে তার বিরুদ্ধে শুনানি বন্ধ করতে। সবশেষ গত মার্চেও ওই মামলার বিষয়ে শুনানি হয়েছে। এবার বাংলাদেশ পরিচালনা পরিষদে সদস্য নির্বাচিত হওয়ায় কিছুটা সুবিধা পেতে পারে।
পররাষ্ট্রসচিব মাসুদ বিন মোমেন সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, জেনেভায় বাংলাদেশের সাবেক স্থায়ী প্রতিনিধি মোহাম্মদ সুফিউর রহমানের নেতৃত্বে মিশন একক প্রতিনিধি হিসেবে বাংলাদেশের ব্যাপারে অন্যদের সমর্থন পেয়েছে। ফলে বাংলাদেশ বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় আইএলওর সদস্য নির্বাচিত হয়েছে। বাংলাদেশ বেশ কয়েক বছর পর আইএলওর নীতিনির্ধারণী প্রক্রিয়ায় ভূমিকা রাখার সুযোগ পেল।