সিলেটের নিম্নাঞ্চলে সড়ক ও ফসলের ব্যাপক ক্ষতি

ভারী বৃষ্টিপাত ও পাহাড়ি ঢল পানি নামছে নগরীতে বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি

প্রকাশ | ০৫ জুন ২০২৪, ০০:০০

সিলেট অফিস
নতুনভাবে বৃষ্টি না হওয়ায় সিলেট নগরীর জলাবদ্ধ এলাকা থেকে পানি নামতে শুরু করেছে। ফলে বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়েছে। তবে এখনো পানিবন্দি নগরীর বেশকিছু এলাকা। এদিকে, পানি কমলেও জৈন্তাপুর ও গোয়াইনঘাটে বন্যার ক্ষতচিহ্ন ভেসে উঠছে। সড়ক ও ফসলি জমির ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বন্যাকবলিত এলাকায়। সড়কে পানি থাকায় চলাফেরায় দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে নগরবাসীকে। অনেকের বাসায় এখনো রয়েছে পানি। পানি উন্নয়ন বোর্ড জানিয়েছে, সুরমা নদীর সিলেট পয়েন্টের পানি বিপৎসীমার ১৮ সেন্টিমিটার নিচে নেমেছে। একইভাবে কমেছে কুশিয়ারা, লোভা, সারি এবং ধলাই নদীর পানি। ভারতের চেরাপুঞ্জিতে ২৪ ঘণ্টায় (৩০ মি.মি) বৃষ্টি কম হওয়া এবং সিলেটেও বৃষ্টি না হওয়ায় সুরমা নদীর পানি কিছুটা কমেছে। তবে, এখনও সিলেটের সুরমার তীর লাগোয়া ঘরবাড়ির মানুষ বন্যার শঙ্কায় আছেন। নগরীর বিভিন্ন এলাকার রাস্তাঘাট ও ঘরবাড়িতে এখনো পানি আছে, মঙ্গলবার কিছুটা কমেছে। সোমবার উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও ভারী বৃষ্টিতে নগরীর বেশিরভাগ এলাকা পানিতে তলিয়ে যায়। ১৭টি আশ্রয়কেন্দ্রে প্রায় দশ হাজার মানুষ আশ্রয় নিয়েছেন। এসব আশ্রয়কেন্দ্রের খাবারে সমস্যা হচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে। স্থানীয়রা জানান, সোমবার দুপুরের পর থেকে ভারী বৃষ্টিপাত না হওয়ায় পানি কমতে শুরু করেছে। নগরীর উঁচু এলাকাগুলোর পানি ?পুরোপুরি নেমে গেছে। নিচু এলাকাগুলোতে পানি রয়েছে। যেটি গত দুই-তিনদিনের তুলনায় খুবই অল্প। তবে, নগরীর উপশহর ও যতরপুরের সরকগুলোতে এখনো পানি আছে। এসব বাসাবাড়িতে অনেক মানুষ পানিবন্দি। এর আগে, ২ জুন রাত থেকে সোমবার ভোর পর্যন্ত সিলেটে ২২৬ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়। এতে নতুন করে পস্নাবিত হয় মিরাবাজার, মির্জাজাংগাল, নাইওরপুল, মেন্দিবাগসহ বিভিন্ন এলাকা। পানি ওঠে সিলেট ওসমানী মেডিকেলেও। এতে ব্যাহত হয় চিকিৎসা কার্যক্রম। নগরীর সুবহানিঘাট, উপশহর, যতরপুর, জামতলাসহ বিভিন্ন এলাকার রাস্তাঘাট ডুবে যায়। বাসাবাড়ি-দোকানপাটেও পানি ঢুকে পড়ে। বন্ধ থাকে অনেক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। ফলে চরম ভোগান্তিতে পড়ে নগরবাসী। এদিকে, জৈন্তাপুর, গোয়াইনঘাট ও কোম্পানিগঞ্জের পানি কমেছে। তবে, ভেসে উঠছে বন্যার ক্ষতচিহ্ন। আমলসিট, ফেঞ্চুগঞ্জ ও কানাইঘাটে এই তিনটি পয়েন্টে কুশিয়ারা-সুরমার পানি এখনও বিপৎসীমার উপরে প্রবাহিত হচ্ছে। আসাম-মেঘালয়ে বৃষ্টি কম হলে বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হবে বলে আশা করছে পানি উন্নয়ন। উপজেলা প্রকৌশল অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, গোয়াইনঘাটের ১৩টি ইউনিয়নের কাঁচা-পাকা মিলিয়ে প্রায় ৩০১২ কিলোমিটার সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। যার মধ্যে কাঁচা ২২৪ কিলোমিটার ও পাকা রাস্তা প্রায় ৮৮ কিলোমিটার। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে পূর্ব জাফলং, পশ্চিম জাফলং, মধ্য জাফলং ও গোয়াইনঘাট সদর ইউনিয়নের রাস্তাঘাট। সব মিলিয়ে প্রায় শত কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ইউএনও তৌহিদুল ইসলাম জানান, প্রাথমিকভাবে এলজিইডির উপজেলা প্রকৌশলী ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের সহকারী প্রকৌশলী এবং পিআইওকে অনতিবিলম্বে নদী ও খালের পার্শ্ববর্তী গুরুত্বপূর্ণ স্থানের বাঁধ, ক্ষতিগ্রস্ত রাস্তাঘাট ও ব্রিজ মেরামত ও সংস্কার করে যানবাহন চলাচলের উপযোগী করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।