ঘূর্ণিঝড় রেমাল

সুন্দরবনে মৃত হরিণের সংখ্যা বেড়ে ১৩৪

প্রকাশ | ০৪ জুন ২০২৪, ০০:০০

যাযাদি ডেস্ক
ঘূর্ণিঝড় রেমালের আঘাতে সুন্দরবনে মৃত প্রাণীর সংখ্যা বাড়ছে। সুন্দরবনের বিভিন্ন স্থান থেকে সোমবার সকাল পর্যন্ত ১৩৪টি হরিণের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এই সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছে বন বিভাগ। বন বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, ৪টি শূকরসহ এ পর্যন্ত সুন্দরবন থেকে ১৩৮টি বন্যপ্রাণীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এ ছাড়া জীবিত ১৮টি হরিণ ও একটি অজগর সাপ উদ্ধার করে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে বনে অবমুক্ত করা হয়েছে। খুলনা অঞ্চলের বন সংরক্ষক মিহির কুমার দো বলেন, সোমবার সকাল পর্যন্ত উদ্ধার হওয়া মৃত বন্যপ্রাণীগুলো মূলত সুন্দরবনের কটকা, কচিখালী, দুবলা, নীলকমল, আলোরকোল, ডিমের চর, পক্ষীর চর, জ্ঞানপাড়া, শেলার চর এবং বিভিন্ন নদী ও খালে ভাসমান অবস্থায় পাওয়া গেছে। মৃত প্রাণীগুলোকে মাটিচাপা দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া ভেসে আসা হরিণ ও অজগরকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে বনে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। সুন্দরবনের কাশিয়াবাদ ফরেস্ট স্টেশন কর্মকর্তা নির্মল কুমার মন্ডল বলেন, 'চাকরিজীবনে সুন্দরবনে বেশ কয়েকটি ঝড়-জলোচ্ছ্বাস দেখেছি। কিন্তু এত বেশি পানি আগে কখনো দেখিনি। স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে অন্তত ৫ থেকে ৭ ফুট পানি বেশি হয়েছিল আমার এলাকায়। সাগর উপকূলে দুবলা, কটকা ও কচিখালী এলাকায় পানি আরও কয়েক ফুট বেশি হয়েছিল। ৩৬ ঘণ্টা পর বন থেকে পানি নেমেছে। পানি নামার গতি এবং তীব্র জলোচ্ছ্বাসে সাধারণ প্রাণী ভেসে যাওয়া স্বাভাবিক।' সুন্দরবনের অভ্যন্তরে থাকা বন বিভাগের একাধিক কর্মচারী বলেন, ঘূর্ণিঝড় রেমালে অনেক পাখি মারা গেছে। ঝড়ের পর আর আগের মতো পাখির দেখা মিলছে না, শোনা যাচ্ছে না কিচিরমিচির শব্দ। সুন্দরবন খুলনা রেঞ্জের সহকারী বন সংরক্ষক এ জেড এম হাছানুর রহমান বলেন, প্রবল ঘূর্ণিঝড় রেমালের তান্ডবে লন্ডভন্ড হয়েছে সুন্দরবনের প্রাণ-প্রকৃতি। সময়ের সঙ্গে পালস্না দিয়ে বাড়ছে মৃত বন্যপ্রাণীর সংখ্যা। বনের মধ্যে পুকুরগুলো লবণাক্ত পানিতে নিমজ্জিত হওয়ায় বেঁচে থাকা বন্য প্রাণীরাও পানি পাচ্ছে না। এখন পুকুরের লবণাক্ততা দূর করাই সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। তিনি বলেন, পুকুরের পানি ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়ায় সুন্দরবনে অবস্থান করা বন কর্মীরা কয়েক দিন ধরে গোসল পর্যন্ত করতে পারছেন না। বন বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, সুন্দরবনের মধ্যে মিঠাপানির আধার হিসেবে ১১৫টি পুকুর আছে। এর মধ্যে বিভিন্ন প্রাণীর জন্য ছোট আকারের পুকুর ৩৫টি। আর মানুষ ও প্রাণী উভয়ের জন্য ৮০টি পুকুর আছে। সবক'টি পুকুর ঘূর্ণিঝড় রেমালের জলোচ্ছ্বাসে লোনাপানিতে তলিয়ে গেছে।