আ'লীগ দেশটাকে ধ্বংস করে দিয়েছে :ফখরুল

প্রকাশ | ০৪ জুন ২০২৪, ০০:০০

যাযাদি রিপোর্ট
সোমবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ৪৩তম শাহাদতবার্ষিকী উপলক্ষে জাতীয়তাবাদী মহিলা দল আয়োজিত আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর -ফোকাস বাংলা
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, 'সেনাবাহিনীর সম্মান ইজ্জত কোথায় থাকে, যখন তার সাবেক সেনাপ্রধানকে স্যাংশন দেওয়া হয়। পুলিশ বাহিনীর মর্যাদা কোথায় থাকে? যার সাবেক প্রধানকে দেশ থেকে পালিয়ে যেতে হয়। এরা (আওয়ামী লীগ) দেশটাকে একেবারে ধ্বংস করে দিয়েছে।' সোমবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের আব্দুস সালাম হলে সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ৪৩তম শাহাদতবার্ষিকী উপলক্ষে জাতীয়তাবাদী মহিলা দল কেন্দ্রীয় কমিটি আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। নির্বাচন ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে মন্তব্য করে মির্জা ফখরুল বলেন, এই দলীয় সরকারের অধীনে তিনটা নির্বাচন হয়েছে। তিনটা নির্বাচনেই প্রহসন হয়েছে। কাল নির্বাচন কমিশন বলেছে এরকম বৈরী রাজনৈতিক পরিবেশে কখনও সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব না। অর্থাৎ আওয়ামী লীগ যে পরিস্থিতি তৈরি করেছে তাতে কোনো দলই তো নির্বাচনে আসে না। যে কারণে আজ নির্বাচন ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। আজ এই সরকার শুধু রাজনীতিকেই ধ্বংস করেনি বরং পুরো দেশটাকেই ধ্বংস করে দিয়েছে। আওয়ামী লীগ বাংলাদেশকে শোষণ করছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, 'আজ প্রাইমারি স্কুলের বইয়ের অবস্থা ভয়াবহ। কারণ এই বইয়ের মধ্যে মিথ্যা প্রচার চলেছে। ওখানে একজনের নাম ছাড়া আর কারো নাম নাই। এমনকি সেখানে তাদের যে নেতা তাজউদ্দীন আহমদ, তারও নাম নাই। কর্নেল ওসমানীর নাম নাই। কারও নাম নাই। শুধু এক নেতা এক দেশ, ওই বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশ। এই করে করে তারা দীর্ঘকাল ধরে বাংলাদেশকে শোষণ করছে, লুট করছে। বাংলাদেশের সব লোকের অধিকার হরণ করে নিয়েছে।' সবাইকে বেরিয়ে আসার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, 'আজ সবজির দাম, চালের দাম অবিশ্বাস্য। বিদু্যতের দাম বেড়েছে। কেন বেড়েছে? কারণ তারা চুরি করে করে এমন অবস্থা তৈরি করেছে যে বিদু্যতের দাম বাড়ানো ছাড়া উপায় নাই। আমাদের এই অবস্থা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। সমগ্র মানুষ যখন বেরিয়ে আসবে তখনই বিপস্নব হবে।' বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের স্মৃতিচারণ করে মির্জা ফখরুল বলেন, 'মানুষ যে জিয়াউর রহমানকে স্বাধীনতার ঘোষক বলে এটা একটা ঐতিহাসিক সত্য কথা। কিন্তু আওয়ামী লীগ সেটা মুছে ফেলতে চায়। জিয়া ক্ষণজন্মা পুরুষ ছিলেন। জিয়ার আহ্বানেই দ্বিধা বিভক্ত জাতি যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল। এটা সরকার মুছে ফেলতে চায়। আমরা শেখ মুজিবের অবদানকে কখনও অস্বীকার করি না। ৪৩ বছর পরেও জিয়াকে এদেশের মানুষ ভোলেনি। যারা তার অবদানকে অস্বীকার করে তারা তো দেশের স্বাধীনতাকেই অস্বীকার করে, কারণ তিনি তো স্বাধীনতার ঘোষক।' বিএনপির মহাসচিব বলেন, আমি যখন বলি খালেদা জিয়া দেশের প্রথম নারী মুক্তিযোদ্ধা তখন আওয়ামী লীগের গা জ্বালা করে। কারণ তাদের নেত্রী তো আর মুক্তিযুদ্ধ করেননি। আমি এসব বলতে চাই না। আমি শুধু বলতে চাই, যার যা অবদান তা স্বীকার করতে হবে। নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, আমাদের এখন সময় এসেছে নিজেদের সংগঠিত করার। আমরা চেষ্টা করছি, জেল খাটছি, বারবার জেলে যাচ্ছি কিন্তু এখনো চূড়ান্ত বিজয় অর্জন করতে পারিনি। এই চূড়ান্ত বিজয় অর্জনের জন্য আমাদের সংগঠনকে আরও দৃঢ় করতে হবে। নিজেদের মধ্যে ছোটখাটো ভুল বোঝাবুঝি থাকলে দূর করে ফেলতে হবে। সবাই মিলে একসঙ্গে এক জোটে নামতে হবে। কারণ এটা বিএনপির সমস্যা না, এটা বাংলাদেশের সমস্যা, এটা জাতির সমস্যা। এই জাতি ভবিষ্যতে টিকবে কী টিকবে না, আপনার ছেলেরা ভবিষ্যতে চাকরি পাবে কী পাবে না, তারা স্বাধীনভাবে চলতে পারবে কী পারবে না, তার পুরোটাই নির্ভর করছে এই সরকারকে আমরা শান্তিপূর্ণভাবে পরাজিত করতে না পারা পর্যন্ত। জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি আফরোজা আব্বাসের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক সুলতানা আহমেদের সঞ্চালনায় এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ড. শাহিদা রফিক প্রমুখ। 'ওবায়দুল কাদের সুস্থ নাকি অসুস্থ' সোমবার রাজধানীর নয়া পল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে মহানগর দক্ষিণ ছাত্রদলের উদ্যোগে অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে ক্ষমতাসীন দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরকে নিয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেছেন, 'কথা বলতে বলতে তিনি এমন পর্যায়ে গেছেন, সুস্থ নাকি অসুস্থ বোঝা যাচ্ছে না। চালাক মানুষ মনে করেন নিজেকে, তিনি ছাড়া অন্য কেউ কিছু বোঝে না; ওবায়দুল কাদেরও তাই ভাবেন।' আওয়ামী লীগ সরকারকে পুলিশ ক্ষমতায় রেখেছে বলে মন্তব্য করেন তিনি বলেন, 'এখন খবরের কাগজ খুললে বেনজীর ও ভারতে খুন হওয়া সংসদ সদস্য আনারের খবর।' এমপি আনারের মৃতু্যতে শোক প্রকাশ করে তিনি বলেন, 'সেই সঙ্গে বলব, স্বর্ণ পাচারের সঙ্গে তিনি যদি জড়িত হন, তাহলে সেই বিচারটাও জনসম্মুখে হওয়া উচিত। ভারতের কারা এই অবৈধ ব্যবসার সঙ্গে জড়িত সেটাও বের করা উচিত।' বিএনপির মূল লক্ষ্য এই সরকারকে সরানো উলেস্নখ করে গয়েশ্বর চন্দ্র বলেন, 'একবার আওয়ামী লীগ ভারতে পালিয়েছিল, আবারও পালাবে। দেশের মানুষ কিছু না বললেও পালাবে। কথায় আছে, বনের বাঘে না খেলেও মনের বাঘে খায়।' বেনজীরের দেশ ত্যাগের খবর প্রসঙ্গে তিনি বলেন, 'পুলিশ, গোয়েন্দা সংস্থা এবং ইমিগ্রেশনে যারা আছেন তারা অন্ধ নাকি বোবা, না পড়াশোনা জানে না। সব পত্রপত্রিকায় তো বেনজীরের খবর প্রকাশিত হয়েছে।'