শনিবার, ১২ অক্টোবর ২০২৪, ২৮ আশ্বিন ১৪৩১

ক্যাম্পাসে নিরবচ্ছিন্ন বিদু্যৎ সরবরাহের দাবি পবিপ্রবি শিক্ষার্থীদের

পবিপ্রবি প্রতিনিধি
  ০১ জুন ২০২৪, ০০:০০
ক্যাম্পাসে নিরবচ্ছিন্ন বিদু্যৎ সরবরাহের দাবি পবিপ্রবি শিক্ষার্থীদের

পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (পবিপ্রবি) ক্যাম্পাসে বিদু্যৎ ব্যবস্থা বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। একটু বাতাস হলেই থাকে না বিদু্যৎ। শিক্ষার্থীদের চরম ভোগান্তিতে পড়তে হয়। প্রশাসনের উদাসীনতার কারণেই এমনটা বার বার হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন শিক্ষার্থীরা।

গত সোমবার ঘূর্ণিঝড় রেমালের তান্ডব পটুয়াখালী জেলাসহ বাংলাদেশের অধিকাংশ জেলায় আঘাত হানে। অথচ পবিপ্রবি ক্যাম্পাস এবং আবাসিক হলগুলো বিদু্যৎ সরবরাহ রোববার রাত থেকেই বন্ধ করে দেওয়া হয়। ফলে পবিপ্রবি ক্যাম্পাস এবং আবাসিক হলগুলো অন্ধকারাচ্ছন্ন হয়ে পড়ে।

পবিপ্রবিতে বিদু্যৎ সরবরাহের জন্য জেনারেটর রয়েছে। কিন্তু ঘণ্টার পর ঘণ্টা বিদু্যৎ বিভ্রাট হলেও ক্যাম্পাস এবং আবাসিক হলগুলোতে জেনারেটর চালিত বিদু্যৎ সরবরাহ করা হয় না। অথচ প্রতিটি শিক্ষার্থী জেনারেটর বিল বাবদ একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ ফি প্রদান করে থাকেন। ফি দিলেও বছরের পর বছর শিক্ষার্থীরা জেনারেটরের সেবা থেকে বঞ্চিত হয়ে আসছে।

সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, 'যে জেনারেটর ও বিদু্যৎ সরবরাহের কেবল রয়েছে তা এ বিশ্ববিদ্যালয় যখন কৃষি কলেজ ছিল সে আমলের। বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পরে কোনো জেনারেটর স্থাপন করা হয়নি।'

দুর্যোগ-পূর্ববর্তী এবং পরবর্তী সময়ে বিদু্যৎ না থাকায় পবিপ্রবি শিক্ষার্থীরা পড়ালেখা, গোসল, খাওয়া-দাওয়া সবকিছুতেই চরম ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছে। আবাসিক হলগুলোতে দেখা দিয়েছিল পানি ও খাদ্য সংকট। এমনকি ছিল না কোনো আলোর ব্যবস্থা। বিশ্ববিদ্যালয়ে বিদু্যতের বিকল্প হিসেবে জেনারেটর থাকার পরেও শিক্ষার্থীদের কেন এমন ভোগান্তির শিকার হতে হচ্ছে সেটাই এখন হাজারো শিক্ষার্থীর প্রশ্ন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষার্থী বলেন, 'রোববার রাত আনুমানিক ২টার পর থেকে হলে পানি সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়। ফলে হলের অধিকাংশ শিক্ষার্থীর গোসল এবং খাওয়া-দাওয়ায় বেগ পোহাতে হয়েছে। অনেকে বাইরে থেকে খাবার কিনে এনে খেয়েছেন। এমন ভয়াবহ দুর্যোগে যখন সারাদেশজুড়ে প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছিল সেখানে পবিপ্রবি প্রশাসন ছিলেন নীরব দর্শকের মতো।'

বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৭-১৮ সেশনের শিক্ষার্থী মাহবুব আলম জয় বলেন, 'আমার সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষা চলছে। বিদু্যৎ না থাকায় খাওয়া-দাওয়া ও পড়ালেখা থেকে শুরু সবকিছুই বন্ধ হয়ে গেছে। এছাড়াও আমরা একটু বাতাস বা বৃষ্টিতেই বিদু্যৎহীন অবস্থায় পড়ি। এই ক্যাম্পাসে নিরবচ্ছিন্ন বিদুৎ সরবরাহ করতে প্রশাসন বৈদু্যতিক লাইনগুলোকে সঠিকভাবে ব্যবস্থাপনা করতে এখনো কোনো উদ্যোগ নেননি, যা খুবই দুঃখজনক।'

বিদু্যৎ বা জেনারেটরের সরবরাহের জন্য আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা প্রতি হলে নিজস্ব জেনারেটরের দাবি জানিয়ে বলেন, 'শিক্ষার্থীরা প্রতিবছর প্রায় ১০ লাখ টাকা জেনারেটরের ফি দেওয়া সত্ত্বেও জেনারেটর সুবিধা পাচ্ছি না। বিদু্যৎ না থাকায় বাথরুমে পানি নাই, শিক্ষার্থীরা সারা রাত অন্ধকারে ছিল না? আমাদের ফি দিতে এক দিন দেরি হলে পরীক্ষা দিতে দেওয়া হয় না। কিন্তু দুই দিন ধরে জেনারেটর চালানো হচ্ছে না, অনেক অনুষদের পরীক্ষা চলছে। জেনারেটর না চালাতে পারলে ফি নেওয়া বন্ধ করুক।'

প্রধান প্রকৌশলী ইঞ্জিনিয়ার মো. ইউনুস শরীফ বলেন, 'বিদু্যৎ বিভাগের দায়িত্বে যে রয়েছে তার সঙ্গে কথা বললে ভালো হবে, জেনারেটর পরিচালনার জন্য একটা কমিটি রয়েছে তারা জেনারেটরের সব কিছু পরিচালনা করে।'

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (আ.দ.) ড. সন্তোষ কুমার বসু বলেন, 'প্রয়োজনীয় মেরামতের জন্য অর্থ বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। নতুন ১১ কেবি ক্ষমতাসম্পন্ন জেনারেটর কেনার জন্য টেন্ডার করা হয়েছে।'

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে