চট্টগ্রাম উপকূলের ৫০ জলদসু্যর আত্মসমর্পণ

বঙ্গোপসাগরকে দ্রম্নতই দসু্যমুক্ত ঘোষণা করা হবে :স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

প্রকাশ | ৩১ মে ২০২৪, ০০:০০

নুরউদ্দীন খান সাগর, চট্টগ্রাম
বৃহস্পতিবার চট্টগ্রামের পতেঙ্গায়র্ যাব-৭ এর এলিট হলে জলদসু্যদের আত্মসমর্পণ অনুষ্ঠানে সরকারি প্রণোদনা তুলে দেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল -সংগৃহীত
শিগগির বঙ্গোপসাগরকে দসু্যমুক্ত ঘোষণা করা হবে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। বৃহস্পতিবার চট্টগ্রামের পতেঙ্গায়র্ যাব-৭ এর এলিট হলে জলদসু্যদের আত্মসমর্পণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য তিনি এ কথা জানান। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, 'যেকোনো মূল্যে অপরাধীদের দমন করা হবে। যারা আত্মসমর্পণ করেছেন, তাদের স্বাভাবিক জীবনে ফেরার ব্যবস্থা করা হবে। কিন্তু যারা আত্মসমর্পণ করেননি, তাদের কী হবে শুধু আলস্নাহই জানেন। সুন্দরবনের মতো শিগগিরই বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন উপকূলীয় অঞ্চলকে দসু্যমুক্ত ঘোষণা করা হবে।' আত্মসমর্পণ অনুষ্ঠানে জলদসু্যদের উদ্দেশে আসাদুজ্জামান খান বলেন, 'জন্মলগ্ন থেকে সন্ত্রাস নির্মূল করতে গিয়ের্ যাবের ৩৩ জন সদস্য জীবন দিয়েছেন। হাজার হাজারর্ যাব সদস্য আহত হয়েছেন। অনেকের অঙ্গহানিও হয়েছে।' স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, 'আজ এখানে একজন মহিলা জলদসু্যও আমাদের কাছে আত্মসমর্পণ করেছেন। তারা কখনো অত্যাচারিত বা নিপীড়িত হয়ে বাধ্য হয়েই এসব কাজে জড়িয়ে থাকেন। স্থানীয় প্রভাবশালী লোকেরাও তাদের বাধ্য করেন এসব কাজে জড়াতে। জনগণের কাছে র?্যাব একটি আস্থা ও বিশ্বাসের প্রতীক। সুন্দরবনে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জীবন রক্ষায় ২০১২ সালে র?্যাবকে টাস্কফোর্স হিসেবে দায়িত্ব দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। র?্যাবের দুঃসাহসিক অভিযানে সুন্দরবন জলদসু্য মুক্ত হয়।' র্ যাব-৭ এর সিনিয়র সহকারী পরিচালক (জনসংযোগ) মো. শরীফ-উল-আলম জানিয়েছেন, শর্তহীনভাবে চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার জেলার উপকূলীয় অঞ্চলের ১২টি বাহিনীর মোট ৫০ জন জলদসু্য আত্মসমর্পণ করেছে। তাদের মধ্যে ৪৯ জন পুরুষ এবং একজন মহিলা। এই ৫০ জন জলদসু্যর মধ্যে তিনজন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তালিকাভুক্ত। তাদের কাছ থেকে দেশি-বিদেশি ৯০টি অস্ত্র এবং ২৮৩ রাউন্ড গুলি উদ্ধার করা হয়েছে। তিনি জানান, এ পর্যন্ত বাঁশখালী, চকরিয়া, পেকুয়া, মহেশখালী ও কুতুবদিয়া অঞ্চলসহ চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার অঞ্চলের ৩৪২ জন কুখ্যাত জলদসু্য এবং অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীকে আটক করেছে র?্যাব। এ ছাড়া দেশি-বিদেশি মিলিয়ে সর্বমোট দুই হাজার ৬০৩টি অস্ত্রসহ ২৯ হাজার ১২৩ রাউন্ড গোলাবারুদ উদ্ধার করা হয়। এর আগে, গত ২০১৮ এবং ২০২০ সালে ৭৭ জন জলদসু্যর্ যাবের কাছে আত্মসমর্পণ করে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে এসে সরকারি-বেসরকারি প্রণোদনায় পুনর্বাসিত হয়। যার ফলে বাঁশখালী, চকরিয়া, পেকুয়া, মহেশখালী, কুতুবদিয়া অঞ্চলে বিভিন্ন জলদসু্য বাহিনীর অপতৎপরতা বহুলাংশে হ্রাস পেয়েছে। র্ যাব-৭ এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো.মাহবুব আলমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন- চট্টগ্রাম-১১ আসনের সংসদ সদস্য এম আব্দুল লতিফ, পুলিশের মহাপরিদর্শক চৌধুরী আবদুলস্নাহ আল-মামুন,র্ যাবের মহাপরিচালক এম খুরশীদ হোসেন, চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার কৃষ্ণ পদ রায়, চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার মো. তোফায়েল ইসলাম, চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি নুরে আলম মিনা। আত্মসমর্পণকারী জলদসু্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন- মাহমুদ করিম ও জসীম উদ্দীন।