শনিবার, ১২ অক্টোবর ২০২৪, ২৮ আশ্বিন ১৪৩১

অসংখ্য আজিজ-বেনজীর তৈরি করেছে আওয়ামী লীগ :ফখরুল

যাযাদি রিপোর্ট
  ৩০ মে ২০২৪, ০০:০০
রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের ৪৩তম মৃতু্যবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর -যাযাদি

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, একজন আজিজ, বেনজীর নয়, অসংখ্য আজিজ-বেনজীর তৈরি করেছে আওয়ামী লীগ। যারা লুট করে দেশটাকে গিলে খাচ্ছে।

বুধবার বিকালে এক আলোচনা সভায় তিনি একথা বলেন। রমনার ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্সটিটিউশন দলের প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের ৪৩তম মৃতু্যবার্ষিকী উপলক্ষে বিএনপি এই আলোচনা সভার আয়োজন করে। লন্ডন থেকে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান স্কাইপেতে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে আলোচনা সভায় বক্তাদের বক্তব্য শোনেন। সভায় বিএনপি জাতীয় নির্বাহী কমিটি ও অঙ্গ-সংগঠনের কয়েক হাজার নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, কোন অবস্থায় বাংলাদেশকে নিয়ে গেছে সরকার তা আজ জাতির সামনে পরিষ্কার। সাবেক পুলিশ প্রধানের হাজার হাজার দুর্নীতির চিত্র পত্র-পত্রিকায় বেরিয়ে আসছে। তাকে লালন করেছে এই সরকার। অনেকে আগে নিষেধাজ্ঞা দেয়ার পরও তাকে আইজিপি বানিয়েছেন। একইভাবে সাবেক সেনা প্রধানকে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে একটা মাত্র কারণে- সে বাংলাদেশে লুট করেছে, চুরি করেছে এবং নির্বাচনে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই দায় কি শুধু তাদের? এই দায় এই সরকারের যারা আজকে জোর করে ক্ষমতা দখল করে বসে আছে।

গণতন্ত্র ফেরানোর আন্দোলনকে জোরদার করতে সকলকে জেগে উঠার আহ্বান জানিয়ে মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, এখন জেগে উঠবার সময় এসেছে। জেগে উঠবে সেই তরুণ-যুবক। কবি নজরুল ইসলাম তার কবিতায় বলেছেন, 'কে আছো জোয়ান হও আগোয়ান, হাঁকিছে ভবিষ্যৎ।' এখন সবাইকে বেরিয়ে আসতে হবে। সমস্ত ভয়-ভীতি সবকিছু তাচ্ছিল্য করে দেশমাতৃকার ডাকে, খালেদা জিয়াকে মুক্ত করবার লক্ষ্যে ও তার ডাকে, তারেক রহমানের ডাকে আসুন সবাই বেরিয়ে পড়ি। এমন একটা প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে- যেখানে ভয়াবহ দানব যে সবকিছু তছনছ করে দিচ্ছে তাদেরকে পরাজিত করে সত্যিকার অর্থে একটা জনগণের রাষ্ট্র, গণতন্ত্রের রাষ্ট্র নির্মাণ করতে সক্ষম হই।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, এই সরকারের একমাত্র কাজ বাংলাদেশের সম্পদ লুণ্ঠন করে বিদেশে পাচার করে সেখানে সম্পদ গড়ে তোলা। এখনো সময় আছে- সুষ্ঠু নির্বাচন দিন, জনগণ সিদ্ধান্ত নিক। তারা সেটা কোনোদিনই করবে না। কারণ তারা জানে- যদি নিরপেক্ষ নির্বাচন হয় তাহলে ১০ শতাংশ আসনও পাবে না।

দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেন, এই আওয়ামী লীগকে জিয়াউর রহমান লাইসেন্স দিয়েছিল রাজনীতি করার। আর সেই লাইসেন্স নিয়ে আজকে অনেক কথা বলছে। তারা ভেবেছিল জিয়াউর রহমানকে হত্যা করলে বিএনপি আর থাকবে না। কিন্তু বিএনপি আছে, খালেদা জিয়া হাল ধরেছেন বিএনপি টিকে আছে। এখন তারেক রহমান হাল ধরেছেন বিএনপি টিকে থাকবে হাজার বছর। এই দলকে কেউ ধ্বংস করতে পারবে না। আর এই দল ধ্বংস করার কেউ নেই। এই দল না থাকা মানে এদেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব বিদেশি প্রভুদের কাছে বিকিয়ে দেওয়া। সুতরাং বিএনপিকে টিকে থাকতে হবে, বিএনপির প্রতিটি কর্মীকে টিকে থাকবে, এদেশের মানুষকে টিকে থাকতে হবে।

নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মেজর (অব.) হাফিজউদ্দিন আহমদ বলেন, হতাশা নেই, সরকার পরিবর্তন হবেই। বিএনপি আন্দোলন করে যাচ্ছে। রাজপথে নেমে এই লুটেরার দলকে বাংলাদেশ থেকে বিতাড়িত করব। এরা চোরের দল, যেখানে সেনা প্রধান, পুলিশ প্রধান চোর, দুর্নীতিবাজ। এদের সরকার যদি টিকে থাকে তাহলে সভ্যতার ইতিহাস, প্রগতির ইতিহাস মিথ্যে হয়ে যাবে। অতএব নিশ্চিত থাকুন বিএনপি বাংলাদেশের জনগণের একমাত্র ভরসা। এদেশকে মুক্ত করতে চাই, দুর্নীতিবাজ- দুর্বৃত্তদের হাত থেকে মুক্ত করতে চাই। আপনারা সবাই প্রস্তুত থাকেন।

দলের প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানির সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক মাহবুবউলস্নাহ, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুলস্নাহ আল নোমান, এজেডএম জাহিদ হোসেন, শামসুজ্জামান দুদু, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবদুস সালাম, অধ্যাপক মামুন আহমেদ প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে