শনিবার, ১২ অক্টোবর ২০২৪, ২৮ আশ্বিন ১৪৩১

দেশে ফিরলেন এভারেস্ট ও লোৎস জয়ী বাবর আলী

চট্টগ্রাম বু্যরো
  ৩০ মে ২০২৪, ০০:০০
দেশে ফিরলেন এভারেস্ট ও লোৎস জয়ী বাবর আলী

সর্বোচ্চ পর্বতশৃঙ্গ এভারেস্ট ও লোৎস জয় করে দেশে ফিরেছেন ডা. বাবর আলী। মঙ্গলবার রাত সোয়া ৯টার দিকে চট্টগ্রামে শাহআমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে তিনি পৌঁছান। চট্টগ্রাম বিমানবন্দরে তাকে সংবর্ধনা দেন তার (বাবরের) ক্লাব ভার্টিক্যাল ড্রিমার্সসহ অসংখ্য ভক্ত এবং শুভাকাঙ্ক্ষী ও চট্টগ্রামবাসী।

চট্টগ্রাম বিমানবন্দরে নেমে বাবর আলী সাংবাদিকদের বলেন, দেশে ফিরে আমার খুব ভালো লাগছে। এভারেস্ট জয় করা মানেই হচ্ছে দেশকে রিপ্রেজেন্ট করা। বাংলাদেশি হিসেবে গর্ববোধ করছি।

এক প্রশ্নের জবাবে বাবর আলী বলেন, এভারেস্ট থেকে নামার বিষয়টি ছিল অত্যন্ত চ্যালেঞ্জিং। তবে আত্মবিশ্বাস ছিল এভারেস্ট ও লোৎসের চূড়ায় পৌঁছানোর পর নিরাপদে দেশে ফিরে আসতে পারব। অবশেষে তা পেরেছি।

মঙ্গলবার চট্টগ্রামের একটি হলে সংবাদ সম্মেলন করে বাবর জানান, গত ১৯ মে পৃথিবীর শীর্ষ পর্বত এভারেস্ট এবং ২১ মে চতুর্থ শীর্ষ পর্বত লোৎসে আরোহণ করে তিনি উড়িয়েছেন লাল-সবুজের পতাকা। এভারেস্টের শীর্ষে তিনি প্রায় দেড় ঘণ্টার মতো অবস্থান করেন।

সবচেয়ে ভয়ংকর অভিজ্ঞতার কথা বর্ণনা করে তিনি বলেন, 'নেমে আসার সময় এক আহত পর্বতারোহীর জন্য সৃষ্ট মানবজটে পড়ে প্রায় দেড় ঘণ্টা আটকে ছিলাম। ওই উন্মুক্ত এলাকায় শুরু হয় তুষারঝড়। সৌভাগ্যক্রমে বড় কোনো দুর্ঘটনার হাত থেকে বেঁচে যাই।'

ক্যাম্প-৪ এবং এর উপরের এলাকায় পর্বতারোহীরা অক্সিজেন সিলিন্ডার ব্যবহার করলেও বাবর আলী চেষ্টা করেছেন অভিযানে যতটা সম্ভব কম কৃত্রিম অক্সিজেন নিতে। কারণ তিনি স্বপ্নে দেখেন, আগামীতে অক্সিজেন সহায়তা ছাড়াই আটহাজারী শৃঙ্গ আরোহণ করবেন।

দুই পর্বতে তার সঙ্গী ছিলেন নেপালের গাইড বাইরে তামাং। বাবর আলী বলেন, 'এভারেস্টের উচ্চতা বেশি হলেও লোৎসে আরোহণ তুলনামূলকভাবে কঠিন।'

এভারেস্ট এবং লোৎসে শিখর হতে দেখা নিচের পৃথিবীর দৃশ্য এই জীবদ্দশায় ভুলে যাওয়া সম্ভব নয় বলে জানান বাবর আলী। শিখর থেকে অবিশ্বাস্য দ্রম্নতগতিতে নেমে আসেন বাবর। বেস ক্যাম্প থেকে কাঠমান্ডু ফিরেন মাত্র ৩ দিনে।

তিনি বলেন, 'সুস্থ শরীরে ফিরে এসেছি এটা আমাকে আনন্দ দিয়েছে। এ সময় ওজন কমেছে চার কেজি। এভারেস্টে অনেক মরদেহ দেখেছি। কিন্তু আমি মনোবল হারাইনি। অনেকের ইকুইপমেন্ট নতুন, তারা মারা গেছেন বেশিদিন হয়নি। এভারেস্ট সামিট করার ক্ষেত্রে আবহাওয়া বড় ফ্যাক্টর। বাংলাদেশের একজন আবহাওয়াবিদ আমাকে দারুণ সহযোগিতা করেছেন।'

সফলতার পিছনে এই পর্বতারোহী কৃতিত্ব দেন নিজের দীর্ঘদিনের পরিশ্রমকে। এছাড়া তিনি কৃতজ্ঞতা জানান নিজের ক্লাব 'ভার্টিক্যাল ড্রিমার্স', সব পৃষ্ঠপোষক সংগঠন এবং ক্রাউড ফান্ডিংয়ে অংশ নেওয়া শুভাকাঙ্ক্ষীদের।

এই অভিযানের প্রধান সমন্বয়ক ফরহান জামান অভিযানের পেছনের গল্প সাংবাদিকদের তুলে ধরে বলেন, 'পর্যাপ্ত আর্থিক সহায়তা পেলে এবং অবকাঠামোগত উন্নয়ন হলে বাংলাদেশের পর্বতারোহীরা আরও অনেক দুর্দান্ত কীর্তি বয়ে আনতে পারবে।'

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন ভার্টিক্যাল ড্রিমার্সের সভাপতি দেবাশীষ বল, প্রধান উপদেষ্টা শিহাব উদ্দিন এবং সহযোগী প্রতিষ্ঠান ভিজু্যয়াল নিটওয়্যার লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এ.এন. ফয়সাল।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে