বগুড়ার দুপচাঁচিয়া পৌরসভার মেয়র জাহাঙ্গীর আলমের বিরুদ্ধে বিচারপতির আদেশ জালিয়াতির মামলায় দেওয়া হাইকোর্টের জামিন আদেশ বহাল রেখেছেন আপিল বিভাগ।
সোমবার প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বে চার বিচারকের আপিল বেঞ্চ দুদকের আপিল খারিজ করে এ আদেশ দেন।
মেয়র জাহাঙ্গীরের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট রবিউল আলম বুদু। দুদকের পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট খুরশীদ আলম খান। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সারওয়ার হোসেন বাপ্পী।
হাইকোর্টের দেওয়া জামিন আদেশ গত ২৭ মার্চ আট সপ্তাহের জন্য স্থগিত করেছিল আপিল বিভাগের চেম্বার আদালত।
জাহাঙ্গীর আলম ২০০৭ সালে দুপচাঁচিয়া পৌরসভার মেয়র থাকা অবস্থায় তার বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ পায় দুদক। ওই অভিযোগ অনুসন্ধান করে দুদক মেয়র জাহাঙ্গীর ও পৌর সচিব কার্তিক চন্দ্র দাসের বিরুদ্ধে মামলা করে।
মামলাটি চলাকালে জাহাঙ্গীর ও কার্তিকের পক্ষে আদালতে একটি স্থগিতাদেশ জমা দেওয়া হয়। সেখানে হাই কোর্ট দুদকের ওই মামলা স্থগিত করেছে বলে দেখানো হয়।
এ দুই আসামির পক্ষে আব্দুল মজিদ নামে এক ব্যক্তি আইনজীবী হিসেবে হলফনামা আকারে আদালতে স্থগিতাদেশের ওই অনুলিপি জমা দেন।
পরে দেখা যায়, হাই কোর্টের অন্য একটি মামলার নম্বর ব্যবহার করে জালিয়াতির মাধ্যমে ভুয়া স্থগিতাদেশ বগুড়ার আদালতে দাখিল করা হয়েছিল।
বিষয়টি নজরে আসার পর হাই কোর্টের নির্দেশে ২০২২ সালের ১৩ অক্টোবর রিট শাখার সুপারিনটেনডেন্ট আব্দুল মমিন বাদী হয়ে বগুড়ার জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ আদালতে জালিয়াতির মামলা দায়ের করেন।
মামলায় জাহাঙ্গীর ও কার্তিক ছাড়াও শিক্ষানবিশ আইনজীবী বগুড়ার দুপচাঁচিয়া উপজেলার ধাপ সুখানগাড়ি বম্বপাড়ার সোলাইমান আলীর ছেলে আবদুল মজিদকে আসামি করা হয়।
পরে বগুড়া জেলার জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ এ কে এম মোজাম্মেল হক চৌধুরী মামলাটি গ্রহণ করে দুদক বগুড়া জেলা কার্যালয়কে তদন্তের নির্দেশ দেন। তদন্ত শেষে ২০২৩ সালের নভেম্বরে দুদক বগুড়ার সহকারী পরিচালক হাফিজুর রহমান মেয়র জাহাঙ্গীরসহ তিনজনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন।
দীর্ঘদিন পলাতক থাকার পর গত ৭ মার্চ জাহাঙ্গীর আলম আত্মসমর্পণ করলে বগুড়ার জ্যেষ্ঠ জেলা ও দায়রা জজ এ কে এম মোজাম্মেল হক চৌধুরী তার জামিন আবেদন নাকচ করে তাকে জেলহাজতে পাঠানোর আদেশ দেন।
এরপর গত ২১ মার্চ জাহাঙ্গীর আলমকে হাইকোর্টের একটি বেঞ্চ থেকে জামিন নেন। হাই কোর্টের এ আদেশের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ আপিল করে।