বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেছেন, ঘূর্ণিঝড় জলোচ্ছ্বাসে অনেক জনপদ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। যখন দেশের উপকূলীয় এলাকায় মহাবিপদ সংকেত চলছে তখন মানুষের পাশে না দাঁড়িয়ে প্রধানমন্ত্রী বলছেন; তারেককে দেশে ফিরিয়ে আনা হবে। জনগণকে রক্ষা নয় বরং তারেক রহমানকে শাস্তি দেওয়াই সরকারের যেন প্রধান কাজ।
সোমবার দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে এক মানববন্ধনে তিনি এসব কথা বলেন। ঢাকা জেলা বিএনপির উদ্যোগে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া, জেলা সভাপতি খন্দকার আবু আশফাক, মহানগর দক্ষিণের বিএনপির সদস্য ইশরাক হোসেন, যুবদলের সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, সাবেক সভাপতি সাইফুল আলম নিরবসহ নেতাকর্মীদের মুক্তির দাবিতে এই মানববন্ধন হয়।
নজরুল ইসলাম খান বলেন, যখন উপকূলীয় এলাকাগুলোয় ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেত দেওয়া হয়েছে তখন দেশের প্রধানমন্ত্রী একটা 'খারাপ শব্দ' ব্যবহার করে একমাত্র কাজ হিসেবে তারেক রহমানকে দেশে ফিরিয়ে নিয়ে আসার কথা বললেন। দুর্যোগের মুখে দেশের মানুষকে বাঁচানো প্রধান কাজ নয়। কারণ মানুষের জন্য সরকারের কিচ্ছু আসে যায় না। সরকারের ভোটের কোনো প্রয়োজন নাই।
তিনি আরও বলেন, তারেক রহমানের বিরুদ্ধে মূল রাগের কারণ হলো, এই নেতা গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার আন্দোলনকে বেগবান করেছেন, জোরদার করেছেন। ইতিহাসে প্রথমবারের মতো ডানপন্থি, বামপন্থি, সমাজতন্ত্রী, ইসলামী দল সবাইকে ঐক্যবদ্ধ করে সরকারের বিরুদ্ধে এমন এক আন্দোলন গড়ে তুলেছেন যে আন্দোলনের ফলে ১০ শতাংশ লোকও ভোট দিতে যায়নি সরকারকে। যার জন্য এই ঘূর্ণিঝড় বা জলোচ্ছ্বাস, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, টাকার অবমূল্যায়ন, ব্যাংক লুট, রাষ্ট্রীয় দেনা বৃদ্ধি, দুর্নীতি, অনাচার, মানবাধিকার হরণের কারণে দেশের সাবেক সেনা প্রধান, সাবেক পুলিশ প্রধান তারা আন্তর্জাতিক স্যাংশনের মুখে পড়ার পরও সেগুলোর কোনটাই প্রধান কাজ নয়। একমাত্র কাজ তারেক রহমানকে দেশে ফিরিয়ে এনে শাস্তি দেওয়া।
বিএনপির এই নেতা বলেন, আজ ব্যাংকগুলো লুট হয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশ ব্যাংক ব্যাংকগুলোতে রং দিচ্ছে, কোনোটা সবুজ, কোনোটা হলুদ, কোনোটা লাল। লাল মানে লালবাতি জ্বালানোর অবস্থা হয়ে গেছে। লুট করে নিয়েছে তার মালিকরা। যাকে তাকে ঋণ দিয়ে ফোকলা করে ফেলেছে ব্যাংকগুলোকে। আর সেই মালিকদের বাঁচানোর জন্য সরকারি ব্যাংকের সঙ্গে কিংবা লাভজনক ব্যাংকের সঙ্গে সেগুলোকে মিলিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করা করছে। প্রতিনিয়ত টাকার মূল্য কমে যাচ্ছে, মাত্র কয়েকদিন আগে একযোগে এক ডলারের বিপরীতে টাকার দাম সাত টাকা কমানো হয়েছে। ইতিহাসে কখনো এতো বড় মূল্যহ্রাস ঘটে নাই বাংলাদেশি টাকার। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে একশ' পঁচিশ টাকা লাগছে এখন একটা ডলার কিনতে। দেশের ঋণের পরিমাণ হয়ে গেছে একশ' বিলিয়ন ডলারেরও বেশি। তারপরও এই ঋণ। এই ঋণ সাধারণ মানুষ নয়, হাতেগোনা কিছু লোক ভোগ করেছে।
মানববন্ধনে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, প্রধানমন্ত্রী তারেক রহমানকে নিয়ে এসে বিচার বাস্তবায়ন করার কথা অনেকবার বলেছেন। তাকে দেশে নিয়ে এসে বিচার করার আগে আপনার বিচার হয়ে যায় কিনা তার জন্য প্রস্তুত থাকেন।
ঢাকা জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক নিপুণ রায় চৌধুরীর সঞ্চালনায় মানববন্ধনে বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুস সালাম আজাদ, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক বেনজীর আহমেদ মিন্টু, ঢাকা জেলার তজিমউদ্দিন প্রমুখ নেতারা বক্তব্য রাখেন।