উপজেলা নির্বাচন

রায়পুরায় ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী হত্যায় দুই মামলা, আটক ৩

প্রকাশ | ২৭ মে ২০২৪, ০০:০০

রায়পুরা (নরসিংদী) প্রতিনিধি
নরসিংদীর রায়পুরায় নির্বাচনী গণসংযোগে প্রতিপক্ষের হামলায় ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী সুমন মিয়ার মৃতু্যর ঘটনায় থানায় দুই মামলা দায়ের করা হয়েছে। এ ঘটনায় রোববার বিকাল পর্যন্ত এজাহারভুক্ত একজন আসামিসহ মোট ৩ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এর আগে শনিবার বিকালে রায়পুরা থানায় পৃথক দুটি মামলা করা হয়। উপজেলার চরসুবুদ্ধি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নিহত সুমন মিয়ার বাবা হাজী নাসির উদ্দিন বাদী হয়ে হত্যার ঘটনায় ২৬ জনের নাম উলেস্নখসহ অজ্ঞাত আরও ৪০-৫০ জনকে আসামি করে রায়পুরা থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। অপরদিকে, নরসিংদী-৫ আসনের সংসদ সদস্য রাজিউদ্দিন আহমেদ রাজুর ছেলে ও উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রাজিব আহমেদ পার্থ বাদী হয়ে দ্রম্নত বিচার আইনে ৩০ জনের নাম উলেস্নখসহ অজ্ঞাত আরও ১০০-১৫০ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন। দুটি মামলাতেই প্রধান আসামি করা হয়েছে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে নিহত সুমনের প্রতিপক্ষ চশমা প্রতীকের প্রার্থী আবিদ হাসান রুবেলকে। এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন রায়পুরা থানার অফিসার ইনচার্জ সাফায়েত হোসেন পলাশ। জানা যায়, গত ২২ মে উপজেলার চরাঞ্চলে পাড়াতলীতে প্রচারণায় যান তালা প্রতীকের ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী সুমন মিয়া। একই দিন ওই ইউনিয়নে যান তার প্রতিপক্ষ চশমা প্রতীকের ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী আবিদ হাসান রুবেল। দুপুর সাড়ে ১২টায় পাড়াতলীর মামদিরকান্দি গ্রামের ছলিমবাড়ি সামনে রাস্তায় দুই ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থীর সমর্থকরা মুখোমুখি হন। এ সময় দুই পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া হয়। এক পর্যায়ে আহত অবস্থায় সুমন দৌড়ে পালানোর সময় মারধরের শিকার হন। পরে আহত সুমনকে তার কর্মীরা উদ্ধার করে পাড়াতলী থেকে ৭-৮ কিলোমিটার দূরে বাঁশগাড়ি পুলিশ ফাঁড়িতে নিয়ে আসেন। সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় পুলিশের সহযোগিতায় তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপেস্নক্সে আনা হয়। সেখানে চিকিৎসক সুমনকে মৃত ঘোষণা করেন। হত্যা মামলার বাদী নিহত সুমনের বাবা নাসির উদ্দিন বলেন, 'মামলা করেছি। এখন আসামিদের দ্রম্নত গ্রেপ্তারের দাবি জানাই। ছেলেকে আর ফিরে পাব না কিন্তু ছেলে হত্যায় জড়িতদের বিচার দেখে যেতে চাই।' সুমন একজন প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী ছিলেন। বিয়ের ১৫ বছর পর তার স্ত্রী লিজা আক্তার গর্ভবতী হয়েছেন। রাজধানীর একটি হাসপাতালে তিনি অস্ত্রোপাচারের অপেক্ষায় রয়েছেন। অনাগত দুই সন্তানকে দেখে যেতে পারলেন না নিহত সুমন মিয়া। দ্রম্নত বিচার আইনে করা মামলার বাদী সাংসদপুত্র রাজিব আহমেদ পার্থ বলেন, '২৫ বছর ধরে সুমনকে চিনি। সে একজন ভদ্র ও সুশিক্ষিত ছেলে। ঘটনার দিন আবিদ হাসান রুবেল সুমনকে হত্যা করে অডিটরিয়ামে এসে আমাকে হত্যার হুমকি ও অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন। আমি নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। সব আসামিকে দ্রম্নত গ্রেপ্তার করে বিচার দাবি জানাই।' এ ঘটনার পর জড়িত ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী আবিদ হাসান রুবেল ও তার কর্মীরা পলাতক রয়েছেন। রায়পুরা থানার অফিসার ইনচার্জ জানান, সুমন হত্যার ঘটনায় এখনো পর্যন্ত ৩ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।