এই সরকার বিএনপির অস্তিত্ব টিকে থাকতে দেবে না :আব্বাস

প্রকাশ | ২৭ মে ২০২৪, ০০:০০

যাযাদি রিপোর্ট
রোববার গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার জীবন-সংগ্রামের ওপর লেখা গ্রন্থ প্রকাশনার অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস -যাযাদি
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেছেন, এই সরকার বারবার যদি ক্ষমতায় থাকে তাহলে জিয়াউর রহমান, বেগম খালেদা জিয়া, তারেক রহমান এবং বিএনপির অস্তিত্ব টিকে থাকতে দেবে না। আর সবচেয়ে বড় কথা হলো এই সরকার থাকলে এদেশের স্বাধীনতা থাকবে না যদি এদেশের সাধারণ মানুষ সচেতন না হয়। রোববার বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার জীবন-সংগ্রামের ওপর লেখা এক গ্রন্থ প্রকাশনার অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। গুলশানে হোটেল লেকশোরে সাংবাদিক মাহফুজউলস্নাহর লেখা ইংরেজি গ্রন্থ 'বেগম খালেদা জিয়া : হার লাইভ, হার স্টোরি'-এর বাংলা সংস্করণ 'খালেদা জিয়া : জীবন ও সংগ্রাম' শীর্ষক গ্রন্থে প্রকাশনা উপলক্ষে এই অনুষ্ঠান হয়। ইতি প্রকাশনা ৬৭০ পৃষ্ঠার এই গ্রন্থটি প্রকাশ করেছে। শাহরিয়ার সুলতান ইংরেজি এই গ্রন্থটি অনুবাদ করেন। গ্রন্থটির মূল্য দুই হাজার টাকা। খালেদা জিয়া প্রসঙ্গে মির্জা আব্বাস বলেন, বিএনপি চেয়ারপারসনকে সামনে আসতে দেওয়া হয় না, কথা বলতে দেওয়া হয় না। চিকিৎসকরা অবিলম্বে বিদেশে নেওয়ার কথা বলছেন। বারবার বলার পরেও জেনেশুনে একটা মানুষকে কীভাবে হত্যা করা হচ্ছে এটা ইতিহাস সাক্ষী হয়ে থাকবে। যখন সুযোগ আসবে ইনশালস্নাহ অপরাধীদের বিচার হবে। নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, নানা চড়াই-উতরাই পেরিয়ে নিজের কর্মদক্ষতায় খালেদা জিয়া দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে সবচেয়ে জনপ্রিয় নেত্রী হয়েছেন। এ বিষয়ে আরও জানতে সাংবাদিক মাহফুজ উলস্নাহর গ্রন্থটি নেতা-কর্মীদের পড়ার অনুরোধ জানান তিনি। সরকারের সমালোচনা করে মান্না বলেন, ৭ জানুয়ারির পর দেশের মানুষের মধ্যে আলোচনা ছিল ক্ষমতাসীনরা পাঁচ বছরই থাকবে। কেউ কেউ এমনও বলেছিল যতদিন জীবিত আছে নড়াতে পারবেন না। এখন দেখছি নিজে নিজেই নড়ছে। প্রাক্তন আইজি, প্রাক্তন চিফ অফ স্টাফ ও তিনবারের এমপিকে নিয়ে খবরে এসেছে, বিব্রত সরকার। রাষ্ট্র বিজ্ঞানী অধ্যাপক দিলারা জামান বলেন, বেগম খালেদা জিয়া রাজনীতি করে গিয়ে উনি বিভিন্ন সরকারের আমলে ভিকটিম হয়েছেন। হাসিনা আমলে জেলে গিয়েছেন, এরশাদের আমলে জেলে গিয়েছেন, এখন উনি কত বছর ধরে জেলে আছেন। চিকিৎসা করার সুযোগ পাচ্ছেন না। চোখ দেখাতে প্রেসিডেন্ট চলে ?যাচ্ছেন সিঙ্গাপুরে। আরও অনেক নেতা চলে যাচ্ছেন সিঙ্গাপুর, লন্ডন, জার্মানিতে যখন-তখন। অথচ বেগম জিয়াকে যেতে দেওয়া হচ্ছে না। এটা একটা প্রতিশোধ, এটা একটা রেলিভেন্স। এভাবে তাকে মৃতু্যর দিকে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে। অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক মাহবুবউলস্নাহর সভাপতিত্বে ও কবি আবদুল হাই শিকদারের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আসিফ নজরুল, অধ্যাপক সিদ্দিকুর রহমান খান, গ্রন্থের অনুবাদক শাহরিয়ার সুলতান, 'ইতি প্রকাশনা'র প্রকাশক জহির দীপ্তি এবং গ্রন্থের লেখক প্রয়াত সাংবাদিক মাহফুজউলস্নাহ'র সহধর্মিণী দিনারজাদি বেগম বক্তব্য রাখেন। প্রকাশনার অনুষ্ঠানে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য জমির উদ্দিন সরকার, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, জাতীয় পার্টি (কাজী জাফর) মোস্তফা জামাল হায়দার, জামায়াতে ইসলামী মজিবুর রহমান, এনপিপির ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, সাম্যবাদী দল (মার্কবাদী-লেলিনবাদী) হারুন চৌধুরী, গণঅধিকার পরিষদের নূরুল হক নূর, জাগপা খন্দকার লুৎফুর রহমান, ইকবাল হোসেন প্রধান, এনডিপির আবু তাহের, পিপলস পার্টির বাবুল সর্দার চাখারি, সাম্যবাদী দলের সৈয়দ নুরুল ইসলাম, গণদলের এটিএম গোলাম মাওলা চৌধুরী, ইসলামী ঐক্যজোটের মাওলানা আবদুল করীম, জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের গোলাম মহিউদ্দিন ইকরাম, বাংলাদেশ ন্যাপের শাওন সাদেকী, বিএনপির আলতাফ হোসেন চৌধুরী, আবদুল আউয়াল মিন্টু, এজেডএম জাহিদ হোসেন প্রমুখ ছিলেন। সাংবাদিকদের ভয়ের মধ্যে কাজ করতে হয় : রিজভী এদিকে, বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন সাংবাদিকদের জন্য সুখকর বিষয় নয়। সাংবাদিকদের জন্য এই আইন নিরাপত্তা নিশ্চিত করে না। রোববার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির নসরুল হামিদ মিলনায়তনে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির তিন দশক পূর্তি অনুষ্ঠানে বিএনপির পক্ষ থেকে কেক কাটা ও শুভেচ্ছা বিনিময়ের সময় তিনি এসব কথা বলেন। রুহুল কবির রিজভী বলেন, দেশে যখন মানুষের ভোটাধিকার থাকে না, মানুষের কথা বলার অধিকার থাকে না- এমন সময়ে সাংবাদিকদের ভয়ের মধ্যে কাজ করতে হয়। আর বর্তমানে দেশে সে অবস্থা বিরাজমান। তিনি আরও বলেন, সরকার এবং সংবাদপত্রের মালিকদের চাপে স্বাধীন সাংবাদিকতা এখন আর বাংলাদেশে নেই। কালো টাকার মালিকরা এখন বেশিরভাগ গণমাধ্যমের মালিক। রিজভী বলেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন সাংবাদিকদের জন্য সুখকর বিষয় নয়। সাংবাদিকদের জন্য এই আইন নিরাপত্তা নিশ্চিত করে না। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন এমন একটি আইন, যে আইন থেকে সহজেই রেহাই পাওয়া যাচ্ছে না। যারা মুক্ত চিন্তার মানুষ, তারা তাদের মতামত ব্যক্ত করতে গিয়ে কারাবন্দি হয়েছেন। এমন একটি আইন দেশে বিদ্যমান। এমন পরিস্থিতিতে সংবাদপত্রের পথচলা দুঃসাধ্যের বিষয়।