নিজের মধ্যে দুর্নীতি রেখে দেশের উন্নয়ন সম্ভব নয়

সেমিনারে দুদক চেয়ারম্যান

প্রকাশ | ২৬ মে ২০২৪, ০০:০০

যাযাদি রিপোর্ট
'নিজের মধ্যে দুর্নীতি রেখে দেশের উন্নয়ন সম্ভব নয়' বলে মন্তব্য করে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মঈনউদ্দীন আবদুলস্নাহ বলেছেন, সম্ভব হলেও সেটি টেকসই হবে না। সম্মিলিতভাবে প্রচেষ্টা চালিয়ে সমাজ থেকে দুর্নীতি কমিয়ে আনতে হবে। শুধু আইন দিয়ে দুর্নীতি কমানো যাবে না। দুর্নীতি হ্রাস করতে হলে নাগরিক সচেতনতা বৃদ্ধি জরুরি। শনিবার 'দুর্নীতি দমনে নাগরিকদের ভূমিকা' শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। জাতীয় প্রেস ক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া মিলনায়তনে সেমিনারটির আয়োজন করে হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশ (এইচআরপিবি)। এইচআরপিবির সভাপতি অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদের সভাপতিত্বে সেমিনারে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন সাবেক এমপি ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটওয়ারী, ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস ফোরাম বাংলাদেশের সভাপতি হুমায়ুন রশীদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক শেখ হাফিজুর রহমান কার্জন ও এটিএন বাংলার প্রধান নির্বাহী সম্পাদক জ ই মামুন। সেমিনারে দুদক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মঈনউদ্দীন আবদুলস্নাহ বলেন, 'সরকারি ডিপার্টমেন্টগুলো দুর্নীতির নানা বিষয় যেন ছেড়ে দিয়ে রেখেছে। প্রকৃতপক্ষে এই ডিপার্টমেন্টগুলোই তাদের বিভাগীয় দুর্নীতির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারে। সরকারিভাবে যেসব দুর্নীতি হয়, দুদকের একার পক্ষে সেগুলো দেখা সম্ভব নয়।' তিনি আরও বলেন, 'বিদেশে মন্ত্রী-সচিবরা দুর্নীতির টাকায় বাড়ি করেছেন, এটা বলা হচ্ছে। এক্ষেত্রে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য বিদেশে ওই সব বাড়ির সুনির্দিষ্ট ঠিকানা দরকার। ওই সব ঠিকানা পাওয়া গেলেই দুদক সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারবে।' লিখিত বক্তব্যে এইচআরপিবির সভাপতি অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ বলেন, 'দুর্নীতিবাজদের সামাজিকভাবে বর্জন করুন। তাদের সামাজিক কোনো কাজে অংশগ্রহণ করতে দেবেন না। মানিলন্ডারিং আইনে বর্ণিত ২৯টি অপরাধের মধ্যে কমিশন কেবল একটা অপরাধ দেখে। কেবল ঘুষের মাধ্যমে অর্জিত অর্থপাচারসংক্রান্ত অপরাধটি দুদক অনুসন্ধান করতে পারে। এ ছাড়া সরকারি কর্মকর্তাদের অর্থপাচারসংক্রান্ত অপরাধ কমিশন অনুসন্ধান করতে পারে। মানিলন্ডারিং আইনে দুদককে কাজের খুব একটা সুযোগ দেওয়া হয়নি।' সেমিনারে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে সাবেক এমপি ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটওয়ারী বলেন, 'ব্যাংক থেকে বৃহৎ অংকের ঋণ নিয়ে বিপুল অংকের টাকা সরিয়ে ফেলা হচ্ছে। ওভার ও আন্ডার ইনভয়েসিং করে অবাধে অর্থ পাচার হচ্ছে। বৃহৎ দুর্নীতিগুলো বন্ধ করা গেলে দেশ আরও এগিয়ে যাবে।' ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস ফোরাম বাংলাদেশের সভাপতি হুমায়ুন রশীদ বলেন, 'অনেক অসাধু ব্যবসায়ী রাতারাতি ধনী হয়ে যাচ্ছে। আমলাদের সন্তানরা যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, কানাডাসহ বিভিন্ন দেশে লেখাপড়া করছে। তাদের টাকার উৎস কী?' ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক শেখ হাফিজুর রহমান কার্জন বলেন, 'এই সময়ে দেশে দুর্নীতি ও মাদক ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। এই দু'টি অপরাধ দমনে 'জিরো টলারেন্স নীতি' কার্যকর হওয়া জরুরি।' এটিএন বাংলার প্রধান নির্বাহী সম্পাদক জ ই মামুন বলেন, 'জিরো টলারেন্স বলতে কিছু নেই। যেদিন সব অপরাধের বিচার হবে, জিরো টলারেন্স নীতি সেদিনই কার্যকর হবে।'