ঝিনাইদহে ডাকাতি করতে গিয়ে প্রবাসীর স্ত্রীকে গলা কেটে হত্যা

প্রকাশ | ২৫ মে ২০২৪, ০০:০০

ঝিনাইদহ প্রতিনিধি
ঝিনাইদহ সদর উপজেলায় বাড়িতে ডাকাতি করতে এসে ফাতেমা বেগম (৪৫) নামে এক প্রবাসীর স্ত্রীকে গলাকেটে হত্যা করা হয়েছে। এ সময় প্রবাসীর পুত্রবধূ বিথি খাতুনকে (১৮) গলাকেটে হত্যার চেষ্টা করা হয়। শুক্রবার ভোরে উপজেলার খালকুলা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। আহত বিথি খাতুনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় জড়িত দুর্গাপুর গ্রামের বাদল মন্ডলের ছেলে সাগর (২৯) ও পশ্চিম ঝিনাইদহের ফেলু সরকারের ছেলে সুশান্ত (৪০) নামের দুই ব্যক্তিকে আটক করেছে পুলিশ। তারা ওই বাড়িতে রাজমিস্ত্রির কাজ করেছিলেন। নিহত ফাতেমার স্বামী আবেদ আলী পাঁচ বছর ধরে দুবাই রয়েছেন। আর বিথির স্বামী আট মাস আগে মালয়েশিয়া গেছেন। নিহতের স্বজন, প্রতিবেশী ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বৃহস্পতিবার রাতে বাড়িতে ঘুমিয়েছিলেন শাশুড়ি ফাতেমা বেগম ও তার পুত্রবধূ বিথি খাতুন। রাতের কোনো এক সময় ঘরের বারান্দার গ্রিলের নিচে শাবল দিয়ে কিছু ইট কাটে ডাকাত দল। এরপর তারা ধারালো অস্ত্র নিয়ে ঘরের ভেতরে প্রবেশ করে। ডাকাতেরা ধারালো অস্ত্রের মুখে ফাতেমা ও বিথিকে জিম্মি করে টাকা ও স্বর্ণালংকার বের করে দিতে তাদের ওপর জুলুম শুরু করে। একপর্যায়ে ডাকাতেরা ক্ষুব্ধ হয়ে ফাতেমাকে খাটের ওপর ফেলে গলাকেটে হত্যা করেন। পরে তারা বিথির গলা কাটে। একপর্যায়ে বিথিকে মৃত ভেবে ডাকাত দল লুট করে পালিয়ে যায়। শুক্রবার ভোরে ঘরের দরজা খুলে বিথি প্রতিবেশী ওবায়দুর রহমানের বাড়ির উঠানে গিয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। ওই বাড়ির লোকজন বিথিকে রক্তাক্ত দেখে ঘটনার বিষয় জানতে চান। বিথি এ সময় চিরকুটে লিখে জানান, তাদের বাড়িতে কাজ করা রাজমিস্ত্রিরা ডাকাতি করতে এসে তার শাশুড়িকে কুপিয়ে হত্যা করেছেন। আর তার গলাকেটে হত্যার চেষ্টা করা হয়েছে। প্রতিবেশী ওবায়দুর রহমান বলেন, 'ফজরের আজানের পর তিনি বাড়ির পাশেই ছিলেন। বিথি হঠাৎ এসে উঠানে পড়ে যান। বাড়ির নারীরা তাকে রক্তাক্ত দেখে ভয়ে চিৎকার দেন। পরে বিথিকে ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে নেওয়া হয়।' সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক তাপস কুমার বিশ্বাস বলেন, 'বিথির গলা অনেকটাই কেটে গেছে। তার হাতেও হালকা ক্ষত আছে। তার শারীরিক অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাকে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।' এ ঘটনায় শুক্রবার সকালে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন পুলিশ সুপার আজিম-উল-আহসান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মীর আবিদুর রহমান, সদর থানার ওসি শাহীন উদ্দিনসহ পুলিশের কর্মকর্তারা। এসআই মো. আমিরুজ্জামান বলেন, 'বিথির লেখা চিরকুট দেখে এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে দু'জনকে আটক করা হয়েছে। আটক দু'জন পুলিশের কাছে স্বীকার করেছেন, টাকা লুটের জন্যই তারা এ ঘটনা ঘটিয়েছেন। ঘটনার সময় লুট হওয়া সাড়ে চার হাজার টাকা ও তিনটি মুঠোফোন উদ্ধার করা হয়েছে। জব্দ করা হয়েছে হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত দা। নিহত নারীর লাশ ময়নাতদন্তের জন্য ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।' ঝিনাইদহ সদর থানার ওসি শাহীন উদ্দিন জানান, 'আমি ঘটনাস্থলে গিয়েছিলাম। ঘটনাস্থল থেকে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ঝিনাইদহ সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় অভিযুক্ত ২ জনকে আটক করা হয়েছে। তাদের জিজ্ঞাসাবাদের পর পুরো ঘটনা জানা যাবে।'