নারী আসামির মৃতু্যর ঘটনায়র্ যাবের চারজনকে প্রত্যাহার
প্রকাশ | ২১ মে ২০২৪, ০০:০০
যাযাদি ডেস্ক
ভৈরবে নারী আসামির মৃতু্যর ঘটনায়র্ যাব-১৪ ভৈরব ক্যাম্পের কমান্ডার লেফটেন্যান্ট ফাহিম ফয়সালসহ চারজনকে ক্যাম্পের দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। রোববারর্ যাবের প্রধান কার্যালয় থেকে তাদের প্রত্যাহারের আদেশ আসে। প্রত্যাহার হওয়া অন্য তিনজন হলেন-র্ যাবের উপসহকারী পরিচালক ইকবাল হোসেন, করপোরাল মহিবুল ইসলাম ও কনস্টেবল মনির হোসেন। একই সঙ্গে নান্দাইল থানার এসআই নাজমুল হাসানকে প্রত্যাহার করে কিশোরগঞ্জ পুলিশ লাইনসে সংযুক্ত করা হয়েছে।
সোমবার সকাল থেকে ভৈরব ক্যাম্পের ভারপ্রাপ্ত কমান্ডার হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছেন মো. আ. হাই চৌধুরী। তিনি সহকারী পুলিশ সুপার। ভৈরব ক্যাম্প থেকে চারজনের প্রত্যাহারের বিষয়টি বিকালে তিনি সংবাদমাধ্যমকে নিশ্চিত করেন।
প্রত্যাহারের তথ্য স্বীকার করে ফাহিম ফয়সাল সাংবাদিকদের বলেন, 'হঁ্যা, আমাকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। ভৈরব ছেড়ে চলে যাচ্ছি।'
জানা যায়, বৃহস্পতিবার রাতে
সুরাইয়া খাতুন (৫২) নামের এক নারীকে ময়মনসিংহের নান্দাইল থেকে আটক করেনর্ যাব-১৪ ভৈরব ক্যাম্পের সদস্যরা। শুক্রবার সকালে মৃত অবস্থায় তাকে ভৈরব উপজেলা স্বাস্থ্য কমপেস্নক্সে নেওয়া হয়। সুরাইয়া নান্দাইল উপজেলার চন্ডীপাশা ইউনিয়নের বরুনাকান্দা গ্রামের আজিজুল ইসলামের স্ত্রী।
স্থানীয় লোকজন জানান, ঢাকার একটি বিস্কুট কারখানায় চাকরি করতেন সুরাইয়ার ছেলে তাইজুল ইসলাম (২৩)। একই কারখানায় কাজ করতেন একই উপজেলার ভেলামারী গ্রামের হাসিম উদ্দিনের মেয়ে রেখা আক্তার (২০)। কর্মস্থলে তাদের প্রেম থেকে বিয়ে হয়। বিয়ের এক বছর না যেতেই গত ২৬ এপ্রিল স্বামীর বাড়িতে মৃতু্য হয় রেখার। রেখার পরিবারের সদস্যরা অভিযোগ করেন, যৌতুক হিসেবে দাবি করা টাকা না দেওয়ায় স্বামী ও শ্বশুর-শাশুড়ির নির্যাতনে রেখার মৃতু্য হয়েছে। এ ঘটনায় রেখার মা রামিছা খাতুন বাদী হয়ে গত সোমবার নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে আদালতে মামলা করেন।
আদালতের নির্দেশে বুধবার মামলাটি নান্দাইল থানায় রেকর্ড করা হয়। মামলায় রেখার স্বামী তাইজুল ইসলাম, শ্বশুর আজিজুল ইসলাম ও শাশুড়ি সুরাইয়া খাতুনকে আসামি করা হয়। এসআই নাজমুল হাসান ছিলেন মামলাটির তদন্ত কর্মকর্তা।
প্রত্যাহার হওয়া নান্দাইল থানার এসআই নাজমুল হাসানের বিরুদ্ধে অভিযোগ, মামলা মীমাংসার কথা বলে বৃহস্পতিবার সুরাইয়া ও তার স্বামীকে থানায় ডেকে আনেন তিনি। থানার আনার পর সাদা কাগজে স্বাক্ষর নেন। থানা থেকে বের হওয়ার পর সুরাইয়াকে আটক করে র?্যাব। কিছুটা দূর থেকে এই দৃশ্য দেখে সুরাইয়ার স্বামী আজিজুল ইসলাম পালিয়ে যান।
সুরাইয়ার দুই মেয়ে লিজা আক্তার ও আফরোজা আক্তারের দাবি, বৃহস্পতিবার তার মাকে মামলা আপসের কথা বলে থানায় ডেকে নিয়ে যায় পুলিশ। পুলিশের সহযোগিতায় তাদের মাকে র?্যাব আটক করে নিয়ে যায়। মায়ের মৃতু্যর জন্য র?্যাব-পুলিশ সমানভাবে দায়ী। তারা জানান, এখন র?্যাবের ভয়ে তাদের বাবা পালিয়ে আছেন। তিনি ভিডিও বার্তা পাঠিয়ে মেয়েদের কাছে নিজের জীবনের শঙ্কার কথা জানিয়েছেন।
এ বিষয়ে কথা বলতে এসআই নাজমুল হাসানের মুঠোফোন নম্বরে একাধিকবার কল দিলেও তিনি সাড়া দেননি। নান্দাইল থানার ওসি মোহাম্মদ আবদুল মজিদ বলেন, 'সুরাইয়া খাতুনকে থানায় ডেকে আনার বিষয়ে পরিবারের অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে। মূলত এ কারণে নাজমুল হাসানকে প্রত্যাহার করে পুলিশ লাইনসে সংযুক্ত করা হয়েছে।'