কক্সবাজারের উখিয়ার চেংছড়ি পাটুয়ারটেক বিচ এলাকার মেরিন ড্রাইভ রোডে অভিযান চালিয়ে ইয়াবা সম্রাট আব্দুল আমিনসহ চার মাদক কারবারিকে গ্রেপ্তার করেছের্ যাব-১৫। এ সময় সাত লাখ পিস ইয়াবাসহ মাদক পরিবহণে ব্যবহৃত একটি বিলাসবহুল পাজেরো স্পোর্ট কারও জব্দ করা হয়েছে।
গ্রেপ্তরকৃতরা হলেন- টেকনাফ পৌরসভার ডেইল পাড়ার হাজি মোহাম্মদ আলীর ছেলে আব্দুল আমিন (৪০), একই এলাকার প্রয়াত দীল মোহাম্মদের ছেলে জাফর আলম (২৬), টেকনাফ
সদর ইউনিয়নের গোদারবিল এলাকার আবু ছৈয়দের ছেলে মোহাম্মদ আব্দুলস্নাহ (৩৫) এবং একই এলাকার মোহাম্মদ কাশেমের ছেলে নুরুল আবছার (২৮)।
সোমবার র?্যাব ১৫ হেডকোয়ার্টারে অনুষ্ঠিত প্রেস ব্রিফিংয়ে ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল এ এইচ এম সাজ্জাদ হোসেন এ কথা জানান।
তিনি বলেন, রোববার রাতে মেরিন ড্রাইভ রোড দিয়ে কক্সবাজার শহরের দিকে মাদকের একটি বিশাল চালান পাচারের গোপন তথ্যের্ যাবের টিম পাটুয়ারটেক বিচ এলাকার মেরিন ড্রাইভ রোডে অস্থায়ী চেকপোস্ট স্থাপন করে এবং একটি স্পোর্টস কারে তলস্নাশি চালায়। এ সময় গাড়ির পেছনে বিশেষ কায়দায় রক্ষিত অবস্থায় সাত লাখ পিস ইয়াবা ট্যাবলেট উদ্ধার এবং মাদক পরিবহণের কাজে ব্যবহৃত একটি প্রাইভেটকার জব্দ করা হয়। এ ছাড়া উক্ত মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িত ইয়াবা সম্রাট আব্দুল আমিনসহ মাদক সিন্ডিকেটের চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তারকৃতদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের তথ্যের ভিত্তিতে র?্যাবের অধিনায়ক জানান, গ্রেপ্তারকৃত আব্দুল আমিন কুখ্যাত মাদক ব্যবসায়ী, ইয়াবা সম্রাট ও মাদক সিন্ডিকেটটির অন্যতম সদস্য। বার্মাইয়া সিরাজের ইয়াবার বিশাল চালান সমুদ্রপথে মাছ ধরার ট্রলারযোগে আব্দুল আমিনের কাছে পৌঁছাতো। পরে সে এসব ইয়াবার চালান দেশের অভ্যন্তরে নিয়ে এসে কয়েক দিনের জন্য নিজেদের হেফাজতে মজুত করতো। পরে মজুতকৃত মাদকের চালান স্থানীয় মাদক ব্যবসায়ী, রোহিঙ্গা ক্যাম্প এবং কক্সবাজারসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে তার নির্ধারিত এজেন্টদের কাছে সুবিধাজনক সময় বিক্রি করত। এবারও প্রাইভেটকারযোগে টেকনাফ থেকে মেরিন ড্রাইভ হয়ে কক্সবাজার শহরের উদ্দেশে নিয়ে আসছিল মর্মে জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়। তার বিরুদ্ধে কক্সবাজারসহ দেশের বিভিন্ন থানায় মাদকসহ ১১টির অধিক মামলা রয়েছে।
তিনি আরও জানান, গ্রেপ্তারকৃত মোহাম্মদ আবদুলস্নাহ, আব্দুল আমিনের ভাগ্নে। সে দীর্ঘদিন ধরে অবৈধভাবে পার্শ্ববর্তী দেশ হতে গরু চোরাচালানের জড়িত এবং ক্রমান্বয়ে এটিকে পারিবারিক ব্যবসায়ে রূপান্তর করেছে বলে স্বীকার করে। এ ছাড়াও ইয়াবার ব্যবসা লাভজনক হওয়ায় গরুর ব্যবসা করাকালীন সময় আব্দুল আমিনের সঙ্গে ইয়াবা ব্যবসায়ে জড়িয়ে পড়ে।
গ্রেপ্তারকৃত নুরুল আবছার সম্পর্কে মোহাম্মদ গ্রেপ্তারকৃত আবদুলস্নাহ ও আব্দুল কাদেরের সঙ্গে সিন্ডিকেট স্থাপন করে মাদক পরিবহণ, মজুতকরণ ও সরবরাহ কাজে সম্পৃক্ত ছিল। তার বিরুদ্ধে ১০টির অধিক মাদক মামলা রয়েছে। এ ছাড়াও গ্রেপ্তারকৃত নুরুল আবছার সম্পর্কে মোহাম্মদ আবদুলস্নাহর ভগ্নিপতি এবং মাদক কারবারির অন্যতম সহযোগী। গ্রেপ্তারকৃত আব্দুল আমিন ও আবদুলস্নাহর নির্দেশে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ইয়াবার বড় বড় চালান সরবরাহ, অর্থ সংগ্রহ ও মাদক ব্যবসায়ীদের সঙ্গে যোগাযোগের মাধ্যম হিসেবে কাজ করতো। তার বিরুদ্ধে মাদক-সংক্রান্ত একটি মামলা রয়েছে। গ্রেপ্তারকৃত অপর আসামি জাফর আলম মূলত আব্দুল আমিন ও আবদুলস্নাহ সিন্ডিকেটের তথ্য সরবরাহকারী হিসেবে কাজ করত। তার বিরুদ্ধে কক্সবাজারের টেকনাফ থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে দুটি মামলা রয়েছে।
গ্রেপ্তারকৃতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন বলেও জানিয়েছেন র?্যাবের এই কর্মকর্তা।