যশোর-নড়াইল মহাসড়ক
টেন্ডার হওয়ার আগে গাছ কাটা যাবে না :হাইকোর্ট
প্রকাশ | ২০ মে ২০২৪, ০০:০০
যাযাদি রিপোর্ট
যশোর-নড়াইল মহাসড়কের ছয় লেন প্রকল্পে গাছ না কাটার ওপর স্থিতাবস্থা দিয়েছেন হাইকোর্ট। এতে আপাতত গাছ কাটা যাবে না। একই সঙ্গে আদালত আদেশে উলেস্নখ করেছেন, ছয় লেন সড়কের টেন্ডার আহ্বান করার পর এই স্থিতাবস্থার আদেশ বাতিল হয়ে যাবে।
এ সংক্রান্ত বিষয়ে দায়ের করা রিটের শুনানি নিয়ে রোববার হাইকোর্টের বিচারপতি মো. খসরুজ্জামান এবং বিচারপতি কেএম জাহিদ সারওয়ারের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ যশোর নড়াইল ছয় লেনের সড়ক নির্মাণে বর্তমানে রাস্তার পাশে থাকা গাছ কাটার ওপর স্থিতাবস্থা জারি করে আদেশ দিয়েছেন। আদেশের বিষয়টি নিশ্চিত করেন রিটকারী আইনজীবী অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ।
আদালতে এদিন রিটের পক্ষে শুনানি করেন সিনিয়র অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ। তাকে সহায়তা করেন অ্যাডভোকেট সঞ্জয় মন্ডল এবং অ্যাডভোকেট সেলিম রেজা। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন- ডেপুর্টি অ্যাটর্নি জেনারেল (ডিএজি) বিপুল বাগমার এবং সড়ক বিভাগের পক্ষে ছিলেন- অ্যাডভোকেট এসএম জহিরুল ইসলাম।
সাম্প্রতিককালে তাপমাত্রা অত্যধিক বৃদ্ধি ও জনজীবন অতিষ্ঠ হওয়ার মধ্যেও যশোরসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় হাজার হাজার গাছ কেটে ফেলা হচ্ছে মর্মে সংবাদ গণমাধ্যমে প্রকাশিত হলে জনস্বার্থে মানবাধিকার ও পরিবেশবাদী সংগঠন হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশ (এইচআরপিবি) গত ৫ মে হাইকোর্টে একটি রিট করেন। রিট পিটিশনার হলেন- অ্যাডভোকেট মো. ছারওয়ার আহাদ চৌধুরী, অ্যাডভোকেট এবলাছ উদ্দিন ভূঁইয়া এবং অ্যাডভোকেট রিপন বাড়ৈই।
আর বিবাদীরা হলেন- কেবিনেট সচিব, প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের মুখ্য সচিব, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সচিব, স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সচিব, সড়ক পরিবহণ ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব, পরিবেশ অধিদপ্তরের ডিরেক্টর জেনারেল (ডিজি), ঢাকা উত্তর দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র, ঢাকা উত্তরা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা, এলজিইডির প্রধান প্রকৌশলী, প্রধান বন সংরক্ষক, সড়ক-মহাসড়ক বিভাগের প্রধান প্রকৌশলী এবং বাংলাদেশ পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি)।
ওই রিট গত ৭ মে আদালত শুনানি শেষে রুল জারি করেন এবং স্থিতাবস্থার বিষয়ে আদেশের জন্য ৮ মে দিন ধার্য রাখেন। পরে ১২ ও ১৩ এবং রোববার (১৯ মে) আবেদনের ওপর শুনানি হয়। শুনানি শেষে স্থিতাবস্থা জারি করেন আদালত।
রিটের পক্ষে এক সম্পূরক (সাপিস্নমেন্টারি) এফিডেফিট দাখিল করে সিনিয়র অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ বলেন, যশোর-নড়াইল ছয় লেন রাস্তার উন্নয়ন প্রকল্প সরকার হাতে নিয়েছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত রাস্তা নির্মাণের কোনো টেন্ডার আহ্বান করা হয়নি। তা সত্ত্বেও উক্ত রাস্তার দুই পাশে শত শত গাছ কেটে ফেলা হচ্ছে।
তিনি আদালতে বলেন, প্রচন্ড দাবদাহে মানুষের প্রয়োজনে গাছগুলো কাটা বন্ধ রাখা প্রয়োজন। তিনি আদালতে আরও বলেন, গাছ সংরক্ষণ করেও ছয় লেনের রাস্তার কাজ করা সম্ভব, এতে জনগণ উপকৃত হবে।
শুনানিতে সরকার পক্ষে আদালতে দাবি করা হয় যে, গাছ কাটা যাবে না এমন কোনো আইন দেশে নেই এবং গাছ কাটা বন্ধ হলে উন্নয়ন কাজ ব্যাহত হবে।
তিনি বলেন, গণমাধ্যমে রিপোর্ট প্রকাশিত হয়েছে ২০৩০ সালে দাবদাহে অন্যতম শীর্ষ নগরী হবে ঢাকা। সুতরাং, গাছ সংরক্ষণ করে এখনই ব্যবস্থা না নিলে জনগণের ভোগান্তি দূর করা সম্ভব হবে না। এমনকি সংবিধানের অনুচ্ছেদ ৩২ অনুসারে বেঁচে থাকার অধিকার, যা মৌলিক অধিকার, তাও বিঘ্নিত হবে।