দিনাজপুরের লিচু বাজারে মিলবে আগামী সপ্তাহে

ভালো ফলনে খুশি চাষিরা

প্রকাশ | ২০ মে ২০২৪, ০০:০০

সোহাগ গাজী, চিরিরবন্দর (দিনাজপুর)
দিনাজপুরের গাছে গাছে পাতার ফাঁকে উঁকি দিচ্ছে লালচে গোলাপি ও সবুজ রঙের লিচু -যাযাদি
সারাদেশে স্বাদে ও রসে এগিয়ে আছে দিনাজপুরের লিচু। টুকটুকে লাল রং আর রসালোর স্বাদের জন্য দিনাজপুরের লিচুর কদর সর্বত্র। এর মধ্যে বেদানা লিচুর চাহিদা সব থেকে বেশি। মৌসুম এলেই এই লিচুর জন্য অপেক্ষায় থাকেন সবাই। লিচুর রাজ্য হিসেবে সুনামও ছড়িয়েছে দিনাজপুরের। ৭ থেকে ১০ দিন পরে বাজারে আসবে দিনাজপুরের লিচু। গাছে গাছে সবুজ পাতার ফাঁকে উঁকি দিচ্ছে লালচে গোলাপি ও সুবজ রঙের লিচু। এবার ফলন ভালো হওয়ায় খুশি লিচু চাষিরা। জানা গেছে, দিনাজপুরের ১৩টি উপজেলাতেই কম বেশি লিচুর আবাদ হয়। সবচেয়ে বেশি চাষ হয় সদর উপজেলার মাসিমপুর, উলিপুর, আউলিয়াপুর, মহব্বতপুর, বিরলের মাধববাটি, করলা, রবিপুর, রাজারামপুর, মহেশপুর, বটহাট এবং চিরিরবন্দর-খানসামা উপজেলায়। মূলত লিচু চাষের জন্য উপযোগী এ অঞ্চলে লিচু চাষে কৃষকের আগ্রহও দিন দিন বাড়ছে। দিনাজপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, এ বছর দিনাজপুরে লিচু চাষে জমির পরিমাণ প্রায় পাঁচ হাজার ৪৮৯ হেক্টর। জেলায় লিচু বাগানের সংখ্যা চার হাজারের বেশি। প্রায় ১৩ উপজেলায় লিচু চাষ হলেও সদর, বিরল ও চিরিরবন্দর উপজেলার লিচুর চাষ বেশি। চিরিরবন্দর উপজেলার গলাহার গ্রামের কৃষক দিপক রায় বলেন, এবার লিচুর ফলন ভালো হয়েছে। গতবার লিচু বিক্রি করার আগে তাপমাত্রা বেশি থাকায় গাছে নষ্ট হয়ে গেছে। এবার কৃষি অফিসের পরামর্শে আগে থেকে লিচুর গাছের গোড়ায় পানি ও লিচুর গায়ে পানি স্প্রে করছি এখন পর্যন্ত লিচু ভালো আছে। আর সপ্তাহ খানেক পরে বাজারে তুলতে শুরু করব লিচু। শেষ পর্যন্ত যদি লিচু ভালো থাকে তাহলে আশা করছি গতবারের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে পারব। লিচু চাষি উকিল চন্দ্র রায় বলেন, দুটি বাগানে শতাধিক লিচু গাছ বর্গা নিয়েছি। গতবার অতিরিক্ত গরমের কারণে লিচু গাছে ফেটে গেছে। এবার আগে থেকে লিচু গাছের গোড়ায় পানি ও গাছে স্প্রে করছি যাতে লিচু নষ্ট না হয়। লিচুর ফলন ভালো হয়েছে। লিচুতে কালার চলে আসছে। সপ্তাহ খানের মধ্যে লিুচ বিক্রি শুরু করতে পারব। চিরিরবন্দর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা জোহারা সুলতানা বলেন, দিনাজপুরে লিচু বাজারে আসে মে মাসে তৃতীয় সপ্তাহ থেকে। জেলার ১৩টি উপজেলায় লিচুর চাষ হলেও চিরিরবন্দর বিরল ও সদর উপজেলায় সবচেয় বেশি লিচু চাষ হয়। এ উপজেলায় প্রায় ৪৭৫ হেক্টর জমিতে লিচুর চাষ হয়েছে। আগাম জাতে লিচুর হিসেবে বাজারে আসবে মাদ্রাজি ও বোম্বাই। তার পরে আসবে বেদানা, চায়না থ্রি ও কাঁঠালি। জেলায় তাপপ্রবাহ বেশি থাকায় লিচু গুটির ক্ষতি হয়েছে। তাই তাপপ্রবাহে যাতে লিচু গাছে নষ্ট না হয় সে জন্য পাঠ পার্যায়ে কৃষকদের গাছের গোড়ায় পানি ও লিচুর গাছে বেশি বেশি পানি স্প্রে করার জন্য পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।